কম খরচে বেড়াবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত
ভ্রমণ যাঁদের নেশা, বেড়াতে গিয়ে দ্রুত তাঁদের পকেটও ফাঁকা হয়। তবে বেড়াতে গিয়ে বাড়তি আরাম, বিলাসবহুল হোটেল যদি কারও অগ্রাধিকার না হয়, তা হলে কিন্তু কম খরচেও বেড়ানো সম্ভব। অনেকেই আছেন, যাঁদের রেস্ত কম, অথচ দেশ-বিদেশ ঘোরার আকাঙ্ক্ষা তীব্র। তাঁরাও কিন্তু মনের সুখেই ঘুরতে পারেন। আসলে সঠিক পরিকল্পনা আর বেড়াতে গিয়ে বিলাসিতা বাদ দিলেই একধাক্কায় খরচ কমিয়ে ফেলা যায়। জেনে নিন, কী ভাবে তা সম্ভব?
টিকিট
বেড়াতে গেলে হয় ট্রেনে যেতে হবে, নয়তো বাসে কিংবা বিমানে। সাধারণত, ট্রেনে গেলে খরচ কম হয়। এসি কামরার বদলে ‘স্লিপার ক্লাস’-এর টিকিট কাটুন, খরচ কমবে। এসি বাসের বদলে সরকারি বাসে গেলেও খরচ কমানো সম্ভব। উড়ানে যেতে হলে অন্তত চার-পাঁচ মাস আগে টিকিট কাটুন। অনেক সময় বিভিন্ন বিমান সংস্থা নানা রকম ছাড় দেয়। নজর রাখুন, কোথায় কখন কত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সেই অনুযায়ী টিকিট কাটুন।
পরিবহণ
বেড়াতে গেলে দ্বিতীয় প্রয়োজনটাই হল পরিবহণ। ব্যক্তিগত ভাবে গাড়ি ভাড়া করে নিলে সুন্দর ভাবে বেড়ানো যায়। তেমনই আবার খরচও অনেকটাই বেশি হয়। যে জায়গায় বেড়াতে যাচ্ছেন, সেখানে গণপরিবহণের সুবিধা কেমন, জেনে নিন। হয়তো সম্পূর্ণ ভ্রমণ গণপরিহণে সম্ভব নয়। তবে, যতটা সম্ভব স্থানীয় পরিবহণ মাধ্যম ব্যবহার করলে খরচ অনেকটাই কমানো যায়। যেমন ধরুন, দার্জিলিং বা পেলিং যাবেন। এনজেপি থেকে শেয়ার গাড়ি বা বাসে গেলে একধাক্কায় খরচ কমে যাবে। তবে কত জন মিলে যাচ্ছেন, তাতে গাড়ি ভাড়া করলে মাথাপিছু কতটা খরচ হচ্ছে, তা দেখে নেওয়া দরকার।
থাকা
স্বল্প খরচে ভ্রমণের শখ পূরণ করতে হলে প্রথমেই বাদ দিতে হবে নামীদামি হোটেল। অনেক সময় কোনও জনবহুল জায়গা থেকে সামান্য ভিতরে কোথাও হোটেল নিলে খরচ একধাক্কায় কমে যায়। হোম স্টেতেও খরচ কম হয়। বেড়াতে যাওয়ার আগে ভাল ভাবে খোঁজ নিতে হবে, আশপাশে কোথায় থাকার জায়গা আছে, তার মধ্যে কোথায় থাকলে খরচ কমবে।
খাওয়া
ঘুরতে গেলে স্থানীয় খাবার চেখে দেখা ভাল। অনেকেই ব্যক্তিগত পছন্দের খাবারের বাইরে কিছু খেতে চান না। এমনটা হলে খরচ বাড়বেই। বিদেশে গিয়েও ভারতীয় খাবার খুঁজলে চড়া দাম দিতে হবে। আবার দক্ষিণ ভারতে গিয়ে কলকাতার খাবার খুঁজলেও একই রকম। বরং সেই জায়গার খাবার খেলে অনেক সস্তা হবে। তা ছাড়া খাবার খরচ কমাতে বাড়ি থেকে মুড়ি, ছাতু, চিঁড়ে নিয়ে যেতে পারেন। রান্নার সুবিধা আছে এমন জায়গায় থাকলে চাল-ডালও নিয়ে যেতে পারেন। খরচ কমাতে বৈদ্যুতিক কেটলি নিয়ে যেতে পারেন। তাতে ভাতে-ভাত করে নেওয়া যায়। পাহাড়ের এমন অনেক জায়গা আছে, যে সব অঞ্চল দুর্গম বলে সাধারণ খাবারের দাম বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে খরচ কমাতে পাহাড়ে ওঠার আগেই রসদ কিনে নিতে পারেন।
অফ-সিজ়নে যান
কম খরচে বেড়ানোর একটা ভাল সময় হল পর্যটন মরসুম এড়িয়ে যাওয়া। সাধারণত, পুজোর সময় বা শীতকালে বেড়ানোর হিড়িক বেশি থাকে। ক্যালেন্ডারে লম্বা ছুটি থাকলে, সে সময়ও লোকজন বেড়াতে যান। এই সব মরসুম বাদ দিলে তুলনায় ফাঁকায় ঘুরতে পারবেন। থাকার ঘর কিংবা গাড়ি, দুই-ই সস্তা হবে।
পেট ভরে জলখাবার খান
একাধিক হোটেলে ঘরভাড়ার সঙ্গে প্রাতরাশও যুক্ত থাকে। বিভিন্ন হোম স্টে-তেও খাবার সমেত প্যাকেজ হয়। এই সমস্ত ক্ষেত্রে পেট পুরে সকালের খাবার খেয়ে নিলে দুপুরে ভারী খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হবে না। তা ছাড়া হোটেলের অনুমতি থাকলে চা-কফি বৈদ্যুতিক কেটলিতে সেখানেই নিজে বানিয়ে খেয়ে নিন। ছোট ছোট বিষয় মাথায় রাখলেও দেখবেন, ভ্রমণের শেষে অনেকটাই খরচ বাঁচছে।