Holi 2024

রং মেখে ভূত হতে চান না, দোলের ছোট্ট ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন শহরের কাছেপিঠে ৫ জায়গা থেকে

দোলের ছুটিতে কয়েকটা দিন চেনা রাস্তার বাইরে প্রাণ ভরে একটু বাতাস নিতে চান। চেনা জায়গায় চেনা মুখের ভিড় এড়িয়ে ঘুরে আসতে পারেন কলকাতার কাছেই কয়েকটি জায়গা থেকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৯:২৫
Five tourist spots near Kolkata where you can celebrate this holi with friends and family

দোলের ছুটিতে কোথায় যাবেন? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

শহরের ধোঁয়া, ধুলো, কংক্রিটের জঙ্গল, বসের বকুনি, বছরশেষের হিসেবনিকেশ আর ভাল লাগছে না। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দোলে রং মেখে হুল্লোড় করার উচ্ছ্বাসও কেমন যেন ফিকে হয়ে গিয়েছে। তাই দোলের ছুটিতে কয়েকটা দিন চেনা রাস্তার বাইরে প্রাণ ভরে একটু বাতাস নিতে চান। চেনা জায়গায় চেনা মুখের ভিড় এড়িয়ে ঘুরে আসতে পারেন কলকাতার কাছেই কয়েকটি জায়গা থেকে।

Advertisement
Five tourist spots near Kolkata where you can celebrate this holi with friends and family

কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার পথ পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় গুড়গুড়িপালে। ছবি: সংগৃহীত।

১) গুড়গুড়িপাল

রাঙামাটি ভালবাসেন। কিন্তু শান্তিনিকেতন, পুরুলিয়ায় শহুরে মানুষের ভিড় ভালবাসেন না। কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার পথ পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় গুড়গুড়িপালে। মেদিনীপুর শহর থেকে দূরত্ব ১২ কিলোমিটারের মতো। নির্জন পথে প্রিয়জনের হাত ধরে হারিয়ে যেতে পারেন গুড়গুড়িপালের জঙ্গলে। আশপাশের গ্রামে আদিবাসীদের সঙ্গে দোলের ছুটি কাটাতে মন্দ লাগবে না। পাশেই রয়েছে লালগড়ের জঙ্গল, রামগড় রাজবাড়ি, মহামায়া মন্দির, ক্ষুদিরাম বোসের জন্মভিটে মহাবনী। হাতে সময় থাকলে সেই সব জায়গাও ঘুরে দেখতে পারেন।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া থেকে ট্রেনে মেদিনীপুর পৌঁছতে সময় লাগে ২-৩ ঘণ্টার মতো। গাড়ি, বাসে সড়কপথেও যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ঘণ্টা চারেক মতো সময় লাগতে পারে।

কোথায় থাকবেন?

গুড়গুড়িপালে তেমন থাকার জায়গা নেই। খুব সম্প্রতি কয়েকটি নেচার্স ক্যাম্প হয়েছে। তবে আগে থেকে বুকিং না করে রাখলে মুশকিল। মেদিনীপুর শহরে থাকতে চাইলে ছোট-বড় অনেক লজ, হোটেল রয়েছে।

Five tourist spots near Kolkata where you can celebrate this holi with friends and family

লাশে ঘেরা মুরুগুমা হতে পারে দোলের ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ একটি গন্তব্য। ছবি: সংগৃহীত।

২) মুরুগুমা

পলাশের বন দেখলেই যাঁদের মন ‘পালাব পালাব’ করে, তাঁদের জন্য পলাশে ঘেরা মুরুগুমা হতে পারে দোলের ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ একটি গন্তব্য। পলাশ ছাড়াও এখানে রয়েছে শাল-শিমূল, মহুয়া, পিয়াল, সেগুনের বন। বসন্তের মনোরম আবহাওয়ায় মুরুগুমার ড্যামে নানা ধরনের পরিযায়ী পাখি আসে। ফলে যাঁরা পাখি দেখতে ভালবাসেন, তাঁদেরও বেশ লাগবে। পাশাপাশি, জলাধার থেকে মিলবে টাটকা রুই-কাতলাও।

কী ভাবে যাবেন?

ট্রেনে করে যেতে হলে নামতে হবে আসানসোল, সেখান থেকে আদ্রা হয়ে মুরুগুমা। সরাসরি সড়কপথে যেতে চাইলে যেতে হবে রানিগঞ্জ। সেখান থেকে শালতোড়া হয়ে মুরুগুমা। জলাধার ও বনের মধ্যিখানে ছোট্ট এই জায়গা! নিরিবিলিতে নিজের কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য আদর্শ বসন্তে পলাশে ভরা মুরুগুমা। সঙ্গে যদি বিকেল-সন্ধ্যায় ধামসা, মাদলের সঙ্গে একটু খানাপিনা হয়, তা হলে জমে যাবে।

কোথায় থাকবেন?

অযোধ্যা পাহাড়ের পায়ের কাছেই রয়েছে এই মুরুগুমা বাঁধ। পাশেই রয়েছে সরকারি কটেজ। একটু দূরে গেলেই পাবেন হোটেল। তবে, সংখ্যায় খুব বেশি নয়। তাই আগে থেকে বুকিং না করলে মুশকিল।

Five tourist spots near Kolkata where you can celebrate this holi with friends and family

কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই রয়েছে লালগঞ্জ সমুদ্রসৈকত। ছবি: সংগৃহীত।

৩) লালগঞ্জ:

দোলে দিঘা, পুরী কিংবা মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে তিলধারণের জায়গা থাকে না। নিদেনপক্ষে বকখালি গেলেও হত। কিন্তু সেখানেও যেতে মন চাইছে না। এ দিকে গোয়া যাওয়ার মতো সময় হাতে নেই। তা ছাড়া পকেটের কথাও তো ভাবতে হবে! তা হলে হাতের কাছে সমুদ্র কোথায় পাবেন? কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই রয়েছে লালগঞ্জ সমুদ্রসৈকত। ডায়মন্ড হারবার, বকখালি ছেড়ে ওই পথেই পড়বে এই অচেনা এই সৈকত। অল্প বাজেট, দোলের ছোট্ট ছুটিতে তাই এই লালগঞ্জ হতেই পারে আপনার পছন্দের ডেস্টিনেশন।

কী ভাবে যাবেন?

শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নামখানা স্টেশন। সেখান থেকে অটোতে লালগঞ্জ সমুদ্রসৈকতে সহজেই পৌঁছনো যায়। ধর্মতলা থেকে প্রতি দিন, প্রতি ঘণ্টায় নামখানা যাওয়ার বাস ছাড়ে। চাইলে সড়কপথেও যেতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

সমুদ্রতট ঘেঁষেই রয়েছে নেচার্স ক্যাম্পের তাঁবু। চাইলে সেখানে রাত কাটাতে পারেন। সমুদ্র থেকে একটু দূরেই রয়েছে থাকার হোটেল। বাজেট অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন।

Five tourist spots near Kolkata where you can celebrate this holi with friends and family

যাঁরা ছবি তুলতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য মুকুটমণিপুর হতে পারে আদর্শ গন্তব্য। ছবি: সংগৃহীত।

৪) মুকুটমণিপুর

মুকুটমণিপুরে অবস্থিত কংসাবতীর বাঁধটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ। দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ কিলোমিটার। এখানে কংসাবতীর বাঁধ ছাড়াও রয়েছে মুসাফিরনা ভিউ পয়েন্ট, বনপুকুরিয়া গ্রাম, পরেশনাথের মন্দির ও নোয়াডিহির সানসেট পয়েন্টের মতো একাধিক দর্শনীয় স্থান। বিশেষত, যাঁরা ছবি তুলতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য মুকুটমণিপুর হতে পারে আদর্শ গন্তব্য। পূর্ণিমার চাঁদের আলো বাঁধের জলে এসে পড়লে এক মায়াময় জগৎ তৈরি হয়। হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন ঝিলিমিলি এবং সুতানের জঙ্গল থেকে।

কী ভাবে যাবেন?

ট্রেনে যেতে হলে নামতে হবে বাঁকুড়ায়। সেখান থেকে বাসে বা ভাড়া গাড়িতে পৌঁছনো যায় মুকুটমণিপুর। মোটরবাইক চালাতে জানলে আরও ভাল। পলাশ বিছানো রাস্তা দিয়ে দু’চাকায় চেপে মুকুটমণিপুর যাওয়ার অভিজ্ঞতা কিন্তু মন্দ নয়।

কোথায় থাকবেন?

রাত্রিবাসের জন্য মুকুটমণিপুরে থাকার সরকারি, বেসরকারি হোটেল রয়েছে। আগে থেকে বুকিং করে রাখতে পারেন। পূর্ণিমার রাতে জঙ্গলের মধ্যে থাকতে চাইলে তা-ও সম্ভব। ট্রি হাউসের ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে।

৫) নিমডিহা

নিমডিহা পুরুলিয়া সীমান্তে অবস্থিত একটি গ্রাম। শুধু দোলের সময়েই নয়, গোটা বসন্তকালেই এখানে বিশেষ লোক উৎসবের আয়োজন করা হয়। দোলের দিন রং খেলাও হয়। দোলের ছোট্ট ছুটিতে পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসাই যায়।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া থেকে ট্রেনে সরাসরি নিমডিহা পৌঁছে যাওয়া যায়। বাসে বা গাড়িতে যেতে বেশ অনেকটা সময় লাগে।

কোথায় থাকবেন?

নিমডিহার কাছাকাছি থাকার খুব বেশি জায়গা নেই। পুরুলিয়া শহরের হোটেলে তাই অনেক আগে থেকেই বুকিং করে রাখবেন।

আরও পড়ুন
Advertisement