Dome City

মুহাকুম্ভের প্রয়াগরাজে তৈরি ‘ডোম সিটি’, গম্বুজ আকারের হোটেলে থাকতে পারবেন পুণ্যার্থীরা

মহাকুম্ভের শহরে প্রস্তুত বিলাসবহুল ডোম সিটি। ভিডিয়ো প্রকাশ্য আসতেই তা নিয়ে হইচই। গম্বুজাকৃতি হোটেলে এক রাত থাকতে গুনতে হবে প্রায় লক্ষ টাকা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:১৬
মহাকুম্ভের শহরে প্রস্তুত বিলাসবহুল গম্বুজাকৃতি হোটেল।

মহাকুম্ভের শহরে প্রস্তুত বিলাসবহুল গম্বুজাকৃতি হোটেল। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)

১২ বছর পরে আবার পূর্ণকুম্ভের আয়োজন হতে চলেছে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে। সেই আয়োজনের অঙ্গ হিসাবে আরাইল শহরে তৈরি হল ‘ডোম সিটি’। গম্বুজ আকারের ৪৪টি হোটেল তৈরি হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। থাকছে ১৭৬টি বিলাসবহুল কটেজও। মহাকুম্ভ শুরুর আগে এমন ব্যবস্থা যে হবে, তা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল।

Advertisement

মহাকুম্ভে পুণ্যস্নানে আসা পুণ্যার্থীদের সব রকম সুযোগ-সুবিধার কথা মাথায় রেখেই গম্বুজাকৃতি হোটেল, তৈরি হয়েছে। এ জন্য ৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পলি কার্বনেটের চাদর দিয়ে তৈরি স্বচ্ছ গম্বুজগুলির ভিতরে আরামের সব রকম ব্যবস্থা থাকছে। দ্বিশয্যার নরম বিছানা, টেবিল-চেয়ার, সোফা — কী নেই সেখানে! স্বচ্ছ গম্বুজের উপর থেকে ঝোলানো ভারী পর্দা। মাঝের অংশে রয়েছে ঝাড় লণ্ঠন। হাতের কাছেই থাকছে রিমোট। চাইলে বোতামে চাপ দিয়ে পর্দা যেমন সরিয়ে ফেলা যাবে, রাতে গম্বুজ থেকে পর্দা সরালেই মেঘমুক্ত দিনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে তারায় ভরা আকাশ। প্রতিটি কক্ষই বাতানুকূল। প্রয়াগের প্রবল ঠান্ডায় যাতে বিন্দুমাত্র কষ্ট না হয় সে জন্য সংলগ্ন শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকছে গরম জল ও হিটারের ব্যবস্থা। প্রতিটি ঘরের আয়তন দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে ৩২ ফুট। উচ্চতায় ১৫-১৮ ফুট। গম্বুজগুলি এমন ভাবেই তৈরি যাতে আগুনে তার কোনও ক্ষতি না হয়। নিরাপত্তার দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছ আস্তরণ ভেদ করে গুলি ঢুকতে পারবে না।

সূত্রের খবর, স্নান উৎসবের সময়ে একটি কটেজের ভাড়া হবে ৮১ হাজার টাকা এবং সাধারণ দিনগুলিতে ৪১ হাজার টাকা। অন্য দিকে, স্নান উৎসবের সময়ে একটি গম্বুজ বা ডোমের ভাড়া এক লক্ষ এক হাজার টাকা এবং সাধারণ দিনে ৮১ হাজার টাকা হবে বলে জানা গিয়েছে। গম্বুজগুলির জন্য সব বুকিং অনলাইনে নেওয়া হবে।

কুম্ভমেলায় আসা পর্যটকদের উন্নত মানের আতিথেয়তার ব্যবস্থা করতে ইতিমধ্যেই ঢেলে সাজা হয়েছে শহর। মহাকুম্ভ থেকে প্রয়াগরাজের বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে বসেছে ‘আস্থা স্তম্ভ’। কুম্ভস্নানের সময়ে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয় গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী নদীর সঙ্গম ক্ষেত্র প্রয়াগে। স্থানীয় বিলাসবহুল হোটেল থেকে ডর্মিটারি, কোথাও তিলধারণের স্থান থাকে না। মেলা প্রাঙ্গণেও প্রস্তুত করা হয় নিশিযাপনের আস্তানা। সে ক্ষেত্রে ‘ডোম সিটি’ পুণ্যার্থীদের থাকার আয়োজনে বা়ড়তি মাত্রা যোগ করতে চলেছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ডোম বুকিংয়ের জন্য তৎপরতা শুরু হয়েছে।

গম্বুজাকৃতি হোটেলের অন্দরসজ্জা।

গম্বুজাকৃতি হোটেলের অন্দরসজ্জা। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)

এ বছর ১০ জানুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মহাকুম্ভ মেলা। প্রতি ১২ বছর অন্তর প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জ্বয়িনী এবং নাসিক এই চারটি স্থানে পূর্ণ কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রচলিত বিশ্বাস, মাহেন্দ্রক্ষণে প্রয়াগে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয়।

মহাকুম্ভ উপলক্ষে শহরে নানা আয়োজন হয়েছে। মহাকুম্ভ থেকে প্রয়াগরাজের বিমানবন্দরে যাওয়ার পথটি বিশেষ ভাবে সাজিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাজস্থান থেকে আনা ৮৪টি লাল পাথরের স্তম্ভ বসানো হচ্ছে পথের ধারে। তার জন্য ১৭ কোটি টাকা খরচও করছে যোগীর সরকার। উত্তরপ্রদেশের নগরোন্নয়ন দফতর জানাচ্ছে, মহাকুম্ভে প্রয়াগরাজে এসে পর্যটকেরা যদি ওই ৮৪টি পাথরের স্তম্ভ পরিক্রমা করেন, তবে তা হবে ব্রহ্মাণ্ড পরিক্রমার সমতুল। পাথরের স্তম্ভগুলির নাম ‘আস্থা স্তম্ভ’, অর্থাৎ, বিশ্বাসের স্তম্ভ।

Advertisement
আরও পড়ুন