ছবির মতো সাজানো শহর উটি।
পাহাড়ে যাওয়ার কথা উঠলেই মাথায় আসে কাশ্মীর, লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশের কথা। মানসপটে ভেসে ওঠে সেখানকার সুউচ্চ পর্বত, বরফাবৃত শৃঙ্গের ছবি।
তবে পাহাড়ের সান্নিধ্য কি শুধুই উত্তরে পাওয়া যায়? হিমালয়ের মতো সুউচ্চ পর্বতমালা না থাকলে ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও কিন্তু শৈলশহর রয়েছে। এখানে উপভোগ করা যায় পূর্বঘাট এবং পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সৌন্দর্য। পাহাড়, চা-বাগান, নদী, সবুজের সমারোহে সেই স্থানগুলিও কম সুন্দর নয়। দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে ঘুরে নিতে পারেন এই ৫ স্থান।
উটি
উটি বললেই মাথায় আসে পাহাড়ি এক সাজানো শহরের ছবি। কুছ কুছ হোতা হ্যায়, রাজ়, দিওয়ানা, বরফি, আজব প্রেম কি গজব কাহানি-সহ অসংখ্য বলিউড ছবির শুটিং হয়েছে তামিলনা়ড়ুর এই শৈল শহরটিতে। নীলগিরি জেলায়, নীলগিরি পাহাড়ের কোলে এই শৈল শহরটি দক্ষিণ ভারতের অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। বছরভরই এখানে আসতে পারেন পর্যটকেরা। এখানকার আবহাওয়াও বেশ আরামদায়ক। উটি শহরে রয়েছে খুব সুন্দর একটি হ্রদ। এ ছাড়াও এখান থেকে দেখে নেওয়া যায় দোদাবেতা শৃঙ্গ, রোজ় গার্ডেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন, পাইকারা হ্রদ, কুন্নুর। ৩-৪ দিন এখানে থাকলে, চার পাশের জায়গাগুলি ভাল ভাবে ঘোরা হয়ে যাবে। উটি থেকে কুন্নুর যাওয়ার সময় চেপে নিতে পারেন এখানকার টয়ট্রেন। উটি এসে, এখানকার কফি এবং চকোলেটের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।
কোদাইকানাল
তামিলনাড়ুর আর একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র কোদাইকানাল। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পালানি পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগে বেছে নিতে পারেন সু্ন্দর শহরটিকে। ২২৮৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত কোদাইকানাল হ্রদটি এখানকার অন্যতম আকর্ষণ। কৃত্রিম হ্রদটির বুকে ভেসে পড়া যায় নৌকায়। এখান থেকে ঘুরে নেওয়া যায় মান্নাভানুর লেক, গুণা কেভ, ডলিফন নোজ়-সহ একাধিক স্থান।
কুর্গ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য কুর্গকে ভারতের স্কটল্যান্ড বলা হয়। কর্নাটকের জনপ্রিয় শৈলশহর এটি। ঢেউ খেলানো পাহাড়, চা-বাগান, ঝর্নায় ঘেরা কুর্গ দেখতে বছরভরই পর্যটকদের ভিড় থাকে। এখানে এলে ঘুরে নিতে পারেন মাদিকেরি দুর্গ, অ্যাবে জলপ্রপাত, ইরুপু ঝর্না, হোন্নামানা কেরে হ্রদ, মাল্লালি জলপ্রপাত।
ওয়েনাড়
কেরলের ওয়েনাড়ও ধীরে ধীরে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পাহাড়, জলাধার, গুহা, ঝর্না— এখানে এলে একইসঙ্গে এই সব কিছুই দেখা যাবে। ঘুরে নিতে পারেন বানাসুরা সাগর, এদাক্কাল গুহা, চেম্ব্রা শৃঙ্গ, সেন্টিনেল রক ওয়াটার ফল্স-সহ আশপাশের বেশ কিছু জায়গা।
মুন্নার
কেরলের আর একটি জনপ্রিয় শৈল শহর মুন্নার। ৫,২০০ ফুট উচ্চতার এই পর্যটন কেন্দ্রে সারা বছর হাল্কা শীত অনুভূত হয়। ঢেউখেলানো সবুজ চা বাগান, মশলা বাগান, ঘন জঙ্গল, উচ্ছ্বল ঝর্না, হ্রদ, পাহাড়ি নদী— এ সব নিয়েই মুন্নার অপরূপ। মুন্নার পৌঁছনোর ৪৬ কিলোমিটার আগেই পথের ধারে ভালারা জলপ্রপাত। মুন্নার ভাল ভাবে দেখতে হলে দুটো দিন লাগবেই। ১৩ কিলোমিটার দূরে মাট্টুপেট্টি জলাধারও অপূর্ব। টলটলে পান্না-সবুজ জলে নৌকো নিয়ে ভেসে পড়তে পারেন। ঘুরে নিতে পারেন চা-কারখানা। এখানে এলও স্থানীয় চকোলেটের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।