Wimbledon

Wimbledon 2022: সাদা উইম্বলডনে কি রঙের ছোঁয়া লাগবে? দ্বিধাবিভক্ত প্রতিযোগীরা, ঐতিহ্যে অনড় আয়োজকরা

সম্পূর্ণ সাদা পোশাক ছাড়া প্রতিযোগীরা উইম্বলডনের কোর্ট চত্বরে প্রবেশ করতে পারেন না। এই রীতির পক্ষে কিছু খেলোয়াড়। অনেকেই অবশ্য সাদার বিরোধী।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ১৭:১৯
উইম্বলডনের সাদা পোশাক নিয়ে দ্বিধায় খেলোয়াড়রাই।

উইম্বলডনের সাদা পোশাক নিয়ে দ্বিধায় খেলোয়াড়রাই। ফাইল ছবি।

অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাব উইম্বলডনের ঐতিহ্য, রীতি বজায় রাখার ব্যাপারে সব সময়ই কঠোর। সম্পূর্ণ সাদা পোশাক পরতে হয় খেলোয়াড়দের। খেলার সময় জুতো, মোজা, সোয়েট ব্যান্ড সব কিছুই হতে হয় সাদা।

বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যামের এই ঐতিহ্য, রীতি নিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছে মতবিরোধ। কেউ পছন্দ করেন, আবার কেউ করেন না। অধিকাংশই বর্তমান যুগে সাদার বিরোধী। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে সাংবাদিক বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার নিক কিরিয়স এসেছিলেন ধূসর রঙের জ্যাকেট এবং লাল টুপি পরে। উইম্বলডনের সঙ্গে যা মানানসই নয়। কিরিয়স মাঝে মধ্যেই কোর্টে বা কোর্টের বাইরের ঘটনায় বিতর্কে জড়ান। রীতি ভাঙা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি তো সব সময় কালো পোশাক পরতে চাই। কালো হেড ব্যান্ড বা সোয়েট ব্যান্ড ব্যবহার করতে দেওয়াই যায়। দেখতে ভালই লাগবে। যদিও উইম্বলডন এ সব নিয়ে ভাবে না।’’ কেবল সাংবাদিক বৈঠকে নয়, কোর্টেও সম্পূর্ণ সাদা রঙের জুতো পরেননি তিনি। রীতি, ঐতিহ্য নিয়ে তেমন চিন্তিতও নন কিরিয়স।

Advertisement

অনেক টেনিস খেলোয়াড়ই মনে করেন, এই ধরনের নিয়ম ১৮৮০ সালে ঠিক ছিল। ২০২২ সালে বেমানান। মহিলাদের ২৮ নম্বর বাছাই অ্যালিসন রিস্কে অমৃতরাজ তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্ত উঠেছিলেন। আনন্দ অমৃতরাজের পুত্রবধূও সাদা পোশাক নিয়ে স্বচ্ছন্দ নন। তিনি বলেছেন, ‘‘উইম্বলডনের ঐতিহ্য আমার পছন্দ। এটা একটা বিশেষ প্রতিযোগিতা। সাদা পোশাকও একটা ছোট ঐতিহ্য। কিন্তু এটা আমার কাছে খুব বিরক্তিকর। বিশেষ করে ঘাসের কোর্টে আরও খারাপ দেখায়। সারা বছর আর কোনও প্রতিযোগিতায় এমন নিয়ম নেই। এখন টেনিস অনেক পেশাদার। তা হলে এখানে কেন বাধ্যতামূলক ভাবে সাদাই পরতে হবে?’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘উইম্বলডনের পোশাক নিয়ে অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের ১০ দফা নির্দেশিকা রয়েছে। যে নির্দেশিকার মূল বক্তব্য, প্রতিযোগীদের টেনিস খেলার উপযুক্ত পোশাক ব্যবহার করতে হবে। সেগুলি সম্পূর্ণ সাদা হওয়াই কাম্য। কোর্টের মধ্যে বা কোর্ট চত্বরে ওই পোশাক পরেই প্রবেশ করতে হবে।’’

উইম্বলডনে পোশাকের রং বলতে দুধ সাদা রংকেই বোঝানো হয়। অফ হোয়াইট বা ক্রিম রংকে সাদা বলে বিবেচনা করা হয় না। পোশাকের গলায় বা হাতার বর্ডারে অন্য রং থাকতে পারে। তবে তা এক সেন্টিমিটারের বেশি চওড়া হবে না। টুপি, জুতো, মাথার ব্যান্ড, কব্জির ব্যান্ডের রং হতে হয় সম্পূর্ণ সাদা। জুতোর ফিতে এবং সোলও সাদা হতে হয়। প্রস্ততকারী সংস্থার লোগো হতে হয় ছোট।

পুরুষ সিঙ্গলসের ৩০তম বাছাই আমেরিকার টমি পলের অবশ্য উইম্বলডনের এই নিয়ম নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। তিনি স্বচ্ছন্দ বলে জানিয়েছেন। বলছেন, ‘‘আমরা অনুশীলনের সময় তো পোশাক, জুতো এ সবের রং নিয়ে মাথা ঘামাই না। তা হলে প্রতিযোগিতার সময় এসব নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করার কী মানে। খেলতে সমস্যা তো হয় না।’’ রোমানিয়ার মহিলা খেলোয়াড় মিহায়েলা বুজানেস্কুও উইম্বলনের পোশাকের সমর্থক। তিনি বলেছেন, ‘‘দেখতে দারুণ লাগে। অনুভূতিটাই আলাদা। মানুষকে সব সময় রঙিন পোশাক পরতেই হবে, তার কী মানে। আমি চাই উইম্বলডন আয়োজকরা সব সময়ই এই ঐতিহ্য কঠোর ভাবে বজার রাখুন।’’ নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া এক মহিলা প্রতিযোগী বিরক্তি নিয়েই বলেছেন, ‘‘প্রতি বছর এই সাদা ব্যাপারটা মনে এলেই পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। জামা অত্যন্ত ময়লা হয়। একটু তাড়াতাড়িই ময়লা হয়ে যায়। ময়লা জামা পরে খেলতেও অস্বস্তি হয়।’’

অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাব নিজেদের ঐতিহ্য বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। খেলোয়াড়রা খুশি হোন বা অখুশি, সে সব নিয়ে মাথা ঘামাতেই রাজি নয় তারা।

আরও পড়ুন
Advertisement