সোনা জেতার পর নীরজ চোপড়া। ফাইল চিত্র
এত বছর ধরে এই রাতটার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। তাঁর ইচ্ছে ছিল অলিম্পিক্সে পদক জিতলে সেটি বালিশের নীচে রেখে ঘুমিয়ে পড়বেন। অবশেষে তাঁর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। স্বভাবতই খুশি সোনার ছেলে নীরজ চোপড়া।
গেমস ভিলেজে ফিরে আসার পর সোনার পদকটি বালিশের তলায় রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এমনটাই জানালেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ইতিহাস গড়া এই অ্যাথলিট।
২৩ বছরের ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই জওয়ান বলেন, “এই পদক আমার কাছে সবকিছু। এটা বালিশের নীচে রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ওরকম একটা ইভেন্টের পর খুব ক্লান্ত ছিলাম। রাতে ভাল ঘুমও এসেছিল।”
তাঁর সৌজন্যেই অলিম্পিক্সের আসরে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড স্টেডিয়ামে প্রথমবার জাতীয় সঙ্গীত বেজে উঠেছিল। গর্বিত হয়েছিল আসমুদ্র হিমাচল। দেশকে এমন মুহূর্ত উপহার দিয়ে স্বভাবতই খুশি নীরজ। সেটা জানিয়েও দিলেন অভিনব বিন্দ্রার পর দ্বিতীয় সোনাজয়ী অ্যাথলিট।
টোকিয়োর ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড স্টেডিয়ামে প্রথমবার জাতীয় সঙ্গীত বেজে ওঠার সময় কেমন ছিল তাঁর মনের অবস্থা? নীরজের প্রতিক্রিয়া, “এটা একটা অন্য ধরনের অনুভূতি। আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত বিদেশের মাটিতে বেজে উঠছে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।”
গত বার রিয়ো অলিম্পিক্সের টিকিট পাননি। এ বার নিজেকে তৈরি করার জন্য সুইডেন চলে যান। সেখান থেকে সোজা পা রাখেন টোকিয়োতে। দুই দেশের মধ্যে সময়ের অনেকটা ফারাক। ফলে প্রতিযোগিতায় নামার আগে ঠিকমতো ঘুমোতেও পারতেন না। সেটাও জানালেন সোনাজয়ী।
নীরজ যোগ করেন, “সাফল্য পাওয়ার পর সবাই বাহবা দিচ্ছে। তবে অনেকেই জানেন না যে এই পদক জেতার আগে আমি একাধিক রাত ভাল ভাবে ঘুমোতে পারিনি। দুই দেশের মধ্যে সময়ের ফারাক থাকায় ঘুমোতে সমস্যা হচ্ছিল। তবে এখন আর ক্লান্তি আসছে না। কারণ সোনার পদক আমার কাছে রয়েছে।”
শনিবার জ্যাভলিনের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন নীরজ। প্রথম প্রচেষ্টায় ৮৭.০৩ মিটার ছুড়ে বাকিদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে যান। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় দূরত্ব আরও বাড়িয়ে নেন তিনি। ছোড়েন ৮৭.৫৮ মিটার। হাত থেকে জ্যাভলিন বেরনো মাত্রই পিছনের গ্যালারির দিকে তাকিয়ে দু’হাত তুলে উল্লাস করতে থাকেন নীরজ। সেখানে বসেছিলেন তাঁর কোচ উয়ে হন এবং ভারতীয় দলের আধিকারিকরা।
কেমন ছিল সেই অনুভূতি? সোনা যে আসছেই তিনি কি বুঝে গিয়েছিলেন? নীরজ শেষে যোগ করেন, “প্রথম দুটো থ্রো করার পরেই পদক জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। তাছাড়া আমি ১০০ শতাংশ দিয়েছিলাম। ফলে নেতিবাচক ভাবনা মাথাতেই আসেনি। শেষ থ্রো মারতে যাওয়ার আগেই আমার সোনা নিশ্চিত হয়ে যায়। সেই অনুভূতি ছিল একেবারে আলাদা। শুধু ভাবছিলাম ইভেন্টটা কখন শেষ হবে।”