ব্রোঞ্জ জিতলেন লভলিনা। ফাইল ছবি
অসমের গোলাঘাট জেলার বারোমুখিয়া গ্রামে ১৯৯৭-এর ২ অক্টোবর জন্ম লভলিনা বড়গোহাঁইয়ের। ছোট থেকে চেহারা ছিল শক্তিশালী এবং পেশিবহুল। তাঁর দুই বোন লিচা এবং লিমার গড়নও ছিল একইরকম। বাবা টিকেন ছোটখাটো ব্যবসায়ী। কিন্তু তিন মেয়ের খেলাধুলোর স্বপ্নে কোনওদিন বাধা আসতে দেননি। সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি।
বক্সিংয়ের কারণে তিনি বিখ্যাত হলেও, খেলাধুলোয় লভলিনার প্রবেশ হয়েছিল কিকবক্সিংয়ের হাত ধরে। কিকবক্সিংয়ের একটি বিভাগ হল মুয়ে থাই। সেই খেলাই প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল লভলিনার। ১৩ বছর বয়স থেকে লিচা এবং লিমার সঙ্গে কিকবক্সিং শিখতে শুরু করেন।
লিচা এবং লিমা কিকবক্সিংয়ে তরতরিয়ে এগিয়ে গেলেও লভলিনার আগ্রহ বেশি ছিল বক্সিংয়ে। খেলাটার প্রতি আগ্রহও তৈরি হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে। লভলিনার মা মামণি বড়গোঁহাই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “একদিন খবরের কাগজে মুড়ে ওর বাবা কিছু মিষ্টি নিয়ে এসেছিল। লভলিনা সেই কাগজ কেড়ে নিয়ে পড়তে শুরু করে। সেখানেই ও মহম্মদ আলির ব্যাপারে জানতে পারে। বক্সিংয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় সেখান থেকেই। চেয়েছিলাম আমার তিন মেয়েই কিকবক্সার হোক। লভলিনার সাফল্যে আমি খুশি।”
অসমের বড়পাথর হাইস্কুলে পড়তেন লভলিনা। তিনি যখন নবম শ্রেণিতে তখন স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (সাই) তরফে স্কুলে একটি ট্রায়ালের আয়োজন করা হয়। সেখানেই লভলিনার সুপ্ত প্রতিভা দেখতে পান কোচ পাদুম বারো। তিনি লভলিনাকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন।
এখনও তাঁর খেলোয়াড়ি জীবন অনেক বাকি। এর মধ্যেই লভলিনার ক্যাবিনেটে অনেক পদক ঢুকে গিয়েছে। পর পর দু’বছর তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতেছেন। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও দুটি ব্রোঞ্জ পদক রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। এ ছাড়া তাঁর ভারত ওপেনে সোনা, উলানবাটার কাপে রুপো, আস্তানায় প্রেসিডেন্টস কাপে ব্রোঞ্জ এবং পোলান্ডের সিলেসিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ রয়েছে।
এশিয়া এবং ওশেনিয়া অলিম্পিক্স যোগ্যতা অর্জন পর্বে উজবেকিস্তানের মাফতুনাখোন মেলিভাকে ৫-০ পয়েন্টে হারিয়ে অলিম্পিক্সের টিকিট নিশ্চিত করেন। সেই মেয়ে আজ ভারতকে পদকও এনে দিলেন।