বাজি ফাটিয়ে উৎসব পালন। কালীপুজো ও দীপাবলির মরসুমে কলকাতাতেও দেখা গিয়েছে এমন দৃশ্য। —ফাইল চিত্র।
কালীপুজো ও দীপাবলি উপলক্ষে গত কয়েক দিন ধরেই কলকাতা ও শহরতলিতে প্রচুর বাজি ফাটানো হয়েছে। বৃহস্পতি, শুক্র— দু’দিনই বাজি ফেটেছে। তার পরেই শহরের বেশ কিছু জায়গায় বাতাসের গুণগত মান ‘খারাপ’ হিসাবে চিহ্নিত হল। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক আধিকারিক শনিবার এ কথা জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে। শনিবার সকাল ৯টায় বালিগঞ্জে বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল ২৮৮। যাদবপুরে ছিল ২১০। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ছিল ২১১। বিধাননগর চত্বরে ছিল ২১৯। সবগুলিই ‘খারাপ’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। সাধারণত বাতাসের গুণগত মানের সূচক ২০১-৩০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘খারাপ’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যদিও ফোর্ট উইলিয়াম, রবীন্দ্র সরোবর এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কাছে বাতাসের গুণগত মানের সূচক ছিল ২০০-র নীচে।
শুক্রবার রাতে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বাতাসের গুণগত মান ‘খুব খারাপ’-এর পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। রাত ১০টায় রবীন্দ্রভারতীর কাছে বাতাসের গুণগত মানের সূচক ৩৩৩ ছিল। কোনও অঞ্চলে সূচক ৩০০-র থেকে বেশি হয়ে গেলেই সেখানকার বাতাস ‘খুব খারাপ’ হিসাবে বিবেচিত হয়। শুক্রবার রাতে কলকাতায় বাতাসের গুণগত মানের গড় ২০০ অতিক্রম করেনি। অর্থাৎ, সামগ্রিক ভাবে শুক্রবার রাত ১০টায় শহরে বাতাসের গুণগত মান ‘খারাপ’ ছিল না। ওই সময়ে বালিগঞ্জে বাতাসের মানের সূচক ২০০-র নীচেই ছিল। আবার কোথাও কোথাও ছিল আরও কম। যেমন রবীন্দ্র সরোবরে সূচক ছিল ৯১।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওই আধিকারিক পিটিআইকে জানিয়েছেন, বেআইনি বাজি বিক্রির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ফলে বাতাসের গুণগত মান অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সভাপতি কল্যাণ রুদ্র অবশ্য সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির বার্তা দিয়েছেন। তাঁর মতে, গত বছরের তুলনায় বায়ুদূষণ কমলেও সাধারণ মানুষকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। একই মত পরিবেশপ্রেমীদেরও। মাত্রাতিরিক্ত বাজি ফাটানো বন্ধ করতে পুলিশের আরও কড়া নজরদারির কথাও বলছেন তাঁরা। বিশেষ করে যাদবপুর, টালিগঞ্জ, কসবা, বেহালা, বেলেঘাটা, এন্টালি, চিৎপুর, কাশীপুর, দমদম এবং লেকটাউন এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
নিয়ম অনুযায়ী, কলকাতায় শুধুমাত্র অনুমোদিত বাজিই ফাটানোর কথা। কিন্তু প্রশাসনের তরফে শব্দবাজি রুখতে বার বার আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যক্ষেত্রে তেমন লাভ হয় না বলে অভিযোগ। কারণ, কালীপুজোর বেশ কিছু দিন আগে থেকে লুকিয়ে-চুরিয়ে শব্দবাজি বিক্রি হয়েই থাকে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দীপাবলিতে শব্দবাজির দাপট দেখা গিয়েছে মহানগর জুড়ে। পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে শব্দদূষণের মাত্রাও।