জয়ের পর চিচিপাস। ছবি: রয়টার্স
বৃহস্পতিবার রাতে খেলা শুরু করেও কার্ফুর কারণে শেষ করা যায়নি। সেটাই বোধ হয় শাপে বর হল স্টেফানোস চিচিপাসের। উইম্বলডনের পঞ্চম বাছাই পিছিয়ে ছিলেন ১-২ সেটে। সেখান থেকে শুক্রবার প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে জিতে নিলেন ম্যাচ। ব্রিটেনের অ্যান্ডি মারেকে পাঁচ সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে দিলেন ৭-৬, ৬-৭, ৪-৬, ৭-৬, ৬-৪ গেমে। লড়াই চলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার কাছাকাছি।
বৃহস্পতিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় রাত ১০.৩৮ নাগাদ ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার কার্লোস আলকারাজের ম্যাচ শেষে সেন্টার কোর্টে নামেন চিচিপাস এবং মারে। অন্য রূপে দেখা যায় গ্রিসের খেলোয়াড়কে। ফোরহ্যান্ডে মাত করে দেন প্রতিপক্ষকে। গোটা ম্যাচে মেরেছেন ৮৭টি উইনার। তবে মারেও কম যাননি। ৩৮ বছর বয়সেও একজন তরুণ খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে তিনি যে লড়াইটা করলেন, তা মনে রাখার মতোই। চিচিপাস বেশি আগ্রাসী ছিলেন। অন্য দিকে, মারে চাইছিলেন লম্বা র্যালিতে খেলতে।
গত কাল রাতে যে জায়গায় ম্যাচ শেষ হয়েছিল, দুই খেলোয়াড় যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন। বেসলাইনে দ্বৈরথ দেখা গেল। চিচিপাস টাইব্রেকে বেশি আগ্রাসী ছিলেন। পঞ্চম সেটে শুরুতেই মারেকে ব্রেক করেন চিচিপাস। সেখান থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নেন চিচিপাস। সার্ভিসে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। মারে আর দাঁড়াতে পারেননি।
ম্যাচ জিতে চিচিপাস বলেন, “অ্যান্ডির বিরুদ্ধে জেতা কখনওই সহজ নয়। ওকে এখানে সবাই ভালবাসে। খুব কঠিন একটা ম্যাচ জিতলাম। ওর খেলা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। দু’বার অস্ত্রোপচার হয়েছে। আগামী দিনের জন্যে ওকে অনেক শুভেচ্ছা। মানসিক ভাবে কঠিন লড়াই হয়েছে। ওর মতো খেলোয়াড়দের এই কোর্টে খেলতে দেখেই আমরা বড় হয়েছি। অ্যান্ডি ছাড়াও নোভাক, রজার, রাফার খেলা দেখেছি। টেনিস খেলাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে এই চার জন। ওদের জন্যে আজ আমি এখানে।”
মারের বিরুদ্ধে মুখোমুখি সাক্ষাতে ২-১ এগিয়ে গেলেন চিচিপাস। পরের রাউন্ডে তিনি খেলবেন লাসলো জেরের বিরুদ্ধে।
আলকারাজের জয়
উইম্বলডনের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে গেলেন পুরুষদের শীর্ষ বাছাই কার্লোস আলকারাজ। শুক্রবার দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে তিনি হারালেন ফ্রান্সের আলেকজান্ডার মুলারকে। গুচ্ছ আনফোর্সড এরর করলেও খেলার ফল আলকারাজের পক্ষে ৬-৪, ৭-৬ (৭-২), ৬-৩। অবাছাই ফরাসি খেলোয়াড় সরাসরি সেটে হারলেও আলকারাজের সঙ্গে ভাল লড়াই করলেন। ম্যাচের কোনও কোনও সময় তাঁকে শীর্ষ বাছাইয়ের থেকেও কিছুটা ভাল দেখাল। স্পেনের তরুণ খেলোয়াড়ের পাওয়ার টেনিসের সামনে অবশ্য এঁটে উঠতে পারলেন না তিনি। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ সব সময়ই ছিল আলকারাজের দখলে। দ্বিতীয় রাউন্ডে গোটা ম্যাচে আলকারাজ নিজের সেরা টেনিস উপহার দিতে পারেননি। ৩৯টি আনফোর্সড এরর করেন। স্পেনের ২০ বছরের তরুণের প্রথম সার্ভিসও ঠিকঠাক পড়েনি। ডাবল ফল্ট করেন তিনটি। তবু তাঁর জিততে অসুবিধা হয়নি। প্রথম সেটের সপ্তম গেমে আলকারাজ প্রতিপক্ষের সার্ভিস ভেঙে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে যান। তার পর তাঁর প্রথম সেট জিততে আর কোনও সমস্যা হয়নি। দ্বিতীয় সেটে কেউ কারও সার্ভিস ভাঙতে পারেননি। টাই ব্রেকারে অবশ্য জ্বলে ওঠেন আলকারাজ। ৬-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর দু’টি পয়েন্ট নষ্ট করেন। যদিও ৭-২ ব্যবধানে টাই ব্রেকার জিতে ২-০ সেটে এগিয়ে যান। তৃতীয় সেটে আর তেমন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি ফরাসি খেলোয়াড়। ২ ঘণ্টা ৩৪ মিনিটে ম্যাচ জিতে বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যামের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে গেলেন পুরুষ সিঙ্গলসের শীর্ষ বাছাই। গত বছর উইম্বলডনের চতুর্থ রাউন্ডে বিদায় নিতে হয়েছিল আলকারাজকে। এ বার তিনি খেতাব জয়ের অন্যতম দাবিদার।
অন্যান্য ম্যাচে
ক্যামেরন নরি ৬-২, ৬-৭, ৭-৬, ৭-৬ হেরেছেন ক্রিস্টোফার ইউব্যাঙ্কসের কাছে। অষ্টম বাছাই ইয়ানিক সিনার ৩-৬, ৬-২, ৬-৩, ৬-৪ হারিয়েছেন কুয়েন্টিন হ্যালিসকে। ১৯তম বাছাই আলেকজান্ডার জেরেভ ৬-৪, ৫-৭, ৬-২, ৬-২ হারিয়েছেন ইয়োশুকে ওয়াতানুকিকে। ষষ্ঠ বাছাই হোলগার রুন ৬-৩, ৭-৬, ৬-৪ হারিয়েছে রবার্তো কার্বালেস বায়েনাকে। মহিলাদের বিভাগে চতুর্থ বাছাই জেসিকা পেগুলা ৬-৪, ৬-০ হারিয়েছেন এলিসাবেত্তা কোচ্চিয়ারেতোকে। দ্বিতীয় বাছাই এরিনা সাবালেঙ্কা ২-৬, ৭-৫, ৬-২ হারিয়েছেন ভারভারা গ্রাচেভাকে। নবম বাছাই পেত্রা কিতোভা ৬-২, ৬-২ জিতেছেন আলেকজান্দ্রিয়া সাসনোভিচের বিরুদ্ধে।