ক্যাসপার রুড। ছবি: রয়টার্স।
আরও একটি ফরাসি ওপেনের ফাইনাল। এক জন ফাইনালিস্টের নাম ক্যাসপার রুড। গত বারের মতো এ বারও। ফলও বদলালো না। গত বার হেরেছিলেন ফরাসি ওপেনকে নিজের ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলা রাফায়েল নাদালের কাছে। এ বারে হারলেন সেই নাদালের রেকর্ড ভাঙা নোভাক জোকোভিচের কাছে। ম্যাচের ফল ৭-৬, ৬-৩, ৭-৫।
আট বছর আগে এক ভারতীয়ের কাছে জুনিয়র উইম্বলডনের ডাবলস সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন রুড। যিনি হারিয়েছিলেন, সেই সুমিত নাগাল পেশাদার টেনিসে সাফল্য পাননি। রুড দু’বার ফরাসি ওপেনের ফাইনাল খেলে ফেললেন। নাদালকে নিজের আদর্শ মনে করেন রুড। সুরকির কোর্টে পর পর দু’বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনাল খেলে এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, এই কোর্টে তিনি স্বচ্ছন্দ। কিন্তু গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে হলে আরও একটু বেশি কিছু প্রয়োজন। সেটাই এখনও রপ্ত করতে পারেননি ২৪ বছরের টেনিস তারকা।
বাবা ক্রিস্টিয়ান রুডের কাছে টেনিসে হাতেখড়ি নরওয়ের রুডের। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে ওঠা বাবা কয়েক দিন আগে পর্যন্ত দেশের সেরা টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। ফরাসি ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার সময় গত বছরই বাবাকে টপকে গিয়েছিলেন ছেলে। জনপ্রিয়তায় সিনিয়র রুড অবশ্য দেশে এখনও অনেকটাই এগিয়ে। নাদালকে গত বার ফাইনালে হারাতে পারলে এ ক্ষেত্রেও জুনিয়র রুড ছাপিয়ে যেতে পারতেন বাবাকে। সম্ভাবনা ছিল। কারণ, রুডের টেনিস পরিণত হয়েছে নাদালের অ্যাকাডেমিতেই। সরাসরি নাদালের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ অবশ্য হয়নি তাঁর। কিন্তু নাদাল ফাইনালে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এখনও অনেক কিছু শেখা বাকি রয়েছে রুডের।
নরওয়ের কোনও টেনিস খেলোয়াড় কখনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলেননি। রুডই প্রথম। গত বছর সেমিফাইনালে প্রথম সেটে হারার পরেও মারিন চিলিচকে হারিয়েছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে ১৬টি এস সার্ভিস করেছেন। উইনার মেরেছেন ৪১টি। রুড টেনিস সার্কিটে নাদালের মতোই ক্লে-কোর্টের বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। লাল মাটির কোর্টেই তাঁর পরিসংখ্যান সবথেকে ভাল।
গত বছর নাদালের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে রুড বলেছিলেন, ‘‘এ বার সামনে নাদাল। সুরকির কোর্টে ঠিক কী ভাবে খেলতে হয়, তার সেরা উদাহরণ নাদাল। কখনও হাল ছাড়ে না। কখনও অভিযোগ করে না। ওকে দেখেই তো এগিয়েছি টেনিস জীবনে।’’ এ ব আর জোকোভিচের বিরুদ্ধে নামার আগে বলেন, “রোলাঁ গারোজে আসার আগে কখনওই ভাবিনি আমি সেরা হিসাবে নামছি। এক একটা ম্যাচ ধরে এগিয়েছি। ফাইনালে ফিরতে পেরে নিঃসন্দেহে ভাল লাগছে। গত বারের মতো ফাইনালে ওঠার ব্যাপারটা মাথায় ছিল আগে থেকেই।”
রাফায়েল নাদাল, রজার ফেডেরার, নোভাক জোকোভিচের বিরুদ্ধে খেলা হয়ে গিয়েছে তাঁর। রুডের আত্মবিশ্বাস তাঁকে সব সময় বাড়তি সাহায্য করে। গত বার নাদালের বিরুদ্ধে নামার আগে বলেছিলেন, ‘‘জানি, ম্যাচটা ভীষণ কঠিন হবে। কিন্তু মনে হচ্ছে সঠিক সময়েই নাদালের মুখোমুখি হচ্ছি। নাদালের বিরুদ্ধে খেলার জন্য গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালের থেকে ভাল মঞ্চ আর কী হতে পারে ! মনে হয় নিজের অ্যাকাডেমির ছাত্রের বিরুদ্ধে খেলতে নাদালেরও ভাল লাগবে।’’ যদিও শেষটা সুখের হয়নি রুডের জন্য। নাদাল তাঁকে হারিয়েই ২২তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন। যে রেকর্ড রবিবার ভেঙে দিলেন জোকোভিচ। তিনি এখন ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক।