যশ দয়াল। ছবি: আইপিএল।
খলনায়ক থেকে নায়ক। এক আইপিএল থেকে আর এক আইপিএল জীবন বদলে দিয়েছে যশ দয়ালের। গত মরসুমে ছিলেন গুজরাত টাইটান্সে। উত্তরপ্রদেশের বোলারকে পর পর পাঁচটা ছক্কা মেরে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিঙ্কু সিংহ। সেই যশই এ বার চাপের মুখে জয় এনে দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে। এমন সাফল্যের পর যশের বাবার মনে পড়ছে এক বছর আগের দুর্বিষহ পরিস্থিতির কথা।
ঘরোয়া ক্রিকেটের সতীর্থ রিঙ্কুর হাতে পাঁচ ছক্কা খেয়ে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন যশ। বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। মানসিক অবসাদ এতটাই বেশি ছিল, খেতেও পারতেন না ঠিক মতো। কমে গিয়েছিল ওজনও। সে সময় কম ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ শুনতে হয়নি তরুণ জোরে বোলারকে। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে যশের বাবা চন্দ্রপাল দয়াল বলেছেন, ‘‘সে সময় হোয়াট্সঅ্যাপে আমাদের নানা রকম ব্যঙ্গাত্মক জিনিস পাঠানো হত। বিরক্ত হয়ে আমরা হোয়াট্সঅ্যাপের সব গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। যশকে নিয়ে মানুষ যা খুশি বলত। এখনও মনে আছে পরিচিত এক জন আমাকে লিখেছিলেন, ‘প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেসের কাহিনি তো শুরুর আগেই শেষ হয়ে গেল।’ এই রকম মন্তব্য রোজ একাধিক আসত প্রতি দিন।’’
তার পর? চন্দ্রপাল আরও বলেছেন, ‘‘পরিবারের কেউই টানা কটাক্ষ সহ্য করতে পারছিলাম না। সবাই হোয়াট্সঅ্যাপের সব গ্রুপ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলাম। বেঙ্গালুরু নিলামে ৫ কোটি টাকায় কেনার পরেও কটূক্তি থামেনি। তখনও এক জন বলেছিলেন, ‘বেঙ্গালুরু এতগুলো টাকা নালায় ফেলে দিল!’ একটা সময় আমরা কেউ কোনও সমাজমাধ্যম ব্যবহার করতাম না।’’
আইপিএলের মিনি নিলামের আগে গুজরাত ফ্র্যাঞ্চাইজ়িও ভরসা রাখতে পারেনি যশের উপর। তারা ছেড়ে দেয় উত্তরপ্রদেশের বোলারকে। নিলামে তাঁকে একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির সঙ্গে লড়াই করে কিনেছিল বেঙ্গালুরু। যশ এ বার ফ্যাফ ডুপ্লেসি, বিরাট কোহলিদের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন। ক্যামেরন গ্রিনের মতো ক্রিকেটারকে বল না দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ শেষ ওভারে তাঁর হাতে বল তুলে দিচ্ছেন ডুপ্লেসি। পাঁচ ছক্কা খাওয়া যশ এখন বেঙ্গালুরুর পাঁচ প্রধান বোলারের এক জন। দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। ১৩টি ম্যাচে নিয়েছেন ১৫টি উইকেট।