IPL 2024

সঞ্জুর আউট নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক, কাঠগড়ায় প্রযুক্তি এবং আম্পায়ারেরা, নিন্দিত দিল্লির মালিকও

মঙ্গলবার দিল্লি বনাম রাজস্থান ম্যাচ ছাপিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছে সঞ্জু স্যামসনের আউট বিতর্ক। বুধবারও বিতর্কের রেশ থামছে না। সঞ্জু আউট ছিলেন কি না, তা নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৪ ১২:১০
cricket

সঞ্জুর সঙ্গে আম্পায়ারের তর্ক। ছবি: এক্স।

মঙ্গলবার দিল্লির কাছে আইপিএলে হেরে গিয়েছে রাজস্থান। ২০ রানে হারায় পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে ওঠা হয়নি তাদের। কিন্তু ম্যাচ ছাপিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছে সঞ্জু স্যামসনের আউট বিতর্ক। মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু করে বুধবারও বিতর্কের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে। সঞ্জু আউট ছিলেন কি না, তা নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে।

Advertisement

কী হয়েছিল ঘটনাটি?

তখন ম্যাচের ১৬তম ওভার চলছে। বল করছেন মুকেশ কুমার। আগ্রাসী খেলে ম্যাচ প্রায় রাজস্থানের পকেটে নিয়ে এসেছেন সঞ্জু। চতুর্থ বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন তিনি। সেই ক্যাচ ধরেন শে হোপ। তবে বাউন্ডারির একেবারে ধারে দাঁড়িয়ে ক্যাচ ধরায় আম্পায়ারেরা রিপ্লে দেখার সিদ্ধান্ত নেন।

কিছু ক্ষণ পরেই তৃতীয় আম্পায়ার মাইকেল গফ জানান, ক্যাচটি বৈধ। ফলে সাজঘরে ফিরতে হবে সঞ্জুকে। রাজস্থানের অধিনায়ক আউট হওয়ার পর মাথা নাড়তে নাড়তে ফিরেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু রিপ্লে দেখার পর তিনি আবার পিচের কাছে ফিরে আসেন। তর্ক করতে থাকেন মাঠের আম্পায়ারদের সঙ্গে।

সঞ্জুর দাবি ছিল, হোপের পা নিশ্চিত ভাবে দড়িতে লেগেছে। বিভিন্ন কোণ থেকে তা নাকি স্পষ্ট দেখাও গিয়েছে। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার তার আগেই জানিয়েছেন, আউট না দেওয়ার সপক্ষে কোনও জোরালো প্রমাণ নেই। তাই সঞ্জুকে ফিরে যেতেই হবে। সঞ্জু তাতেও কোনও কথা শুনতে চাননি। মাঠে থাকা দুই আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক করতেই থাকেন।

কোনও উপায় না থাকায় ফিরতে হয় রাজস্থানের অধিনায়ককে। তবে হতাশা লুকোননি তিনি। একই রকম ভাবে সঞ্জুকে নিয়ে বাকি কেউই হতাশা লুকোতে পারছেন না। ম্যাচের মাঝেই ভাইরাল হয়ে যায় আউট হওয়ার সেই ভিডিয়ো এবং ছবি। তাতে বেশ কিছু কোণ থেকে মনে হয়েছে হোপের পা দড়িতে লেগেছে। তবে তৃতীয় আম্পায়ার তা খুঁজে পাননি।

এর পরে কাঠগড়ায় তোলা হয় প্রযুক্তি এবং আম্পায়ারদের। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় নভজ্যোত সিংহ সিধু বলেন, “সঞ্জু আউট হওয়ার পরে ম্যাচ বদলে গেল। যদি পাশ থেকে ক্যামেরা দেখি, তা হলে দু’বার বাউন্ডারির দড়িতে ওর পা লেগেছে। স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। এ রকম হলে প্রযুক্তি ব্যবহার কোরো না।”

আর প্রযুক্তিতে ভুল হলে? সিধুর উত্তর, “যদি দুধে একটা মাছি পড়ে এবং কেউ আপনাকে বলে ওটা খেয়ে নিতে, তা হলেও আপনার খাওয়া উচিত নয়।”

সিধু এখানেই থামেননি। তিনি আরও বলেছেন, “দু’বার বাউন্ডারির দড়িতে পা স্পর্শ করলেও যদি কেউ আউট দেয়, তা হলে সমর্থক এবং আমার মতো নিরপেক্ষ মানুষের কাছে কী বার্তা যাবে? নিয়মে যা-ই থাকুক, যেটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সেটার উপরে ভরসা রাখা হবে না? কিছু কিছু ছবি এমনও রয়েছে যেখানে অবিশ্বাসের কোনও জায়গাই নেই। দুধের মধ্যে মাছি খোঁজার মতোই সহজ কাজ। যা-ই হোক, আম্পায়ার নিশ্চয়ই ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন কাজ করেননি। এটা খেলারই অঙ্গ। আমাদের সবাইকে মেনে নিতেই হবে।”

সমর্থকদের একাংশ ক্ষিপ্ত আম্পায়ারদের ভূমিকা নিয়ে। তাঁদের মতে, এ ধরনের নিম্নমানের আম্পায়ারিং আইপিএলের নাম আরও খারাপ করছে। এমনিতেই প্রযুক্তি এসে যাওয়ায় মাঠের আম্পায়ারদের ভূমিকা অনেক কমে গিয়েছে। এখন ওয়াইড-নো বলের ক্ষেত্রেও তাঁরা অনেক খোলামনে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন। কিন্তু বিতর্কিত আউট এড়ানো যাচ্ছে না।

কারও কারও মতে, আইপিএলের আম্পায়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া উচিত বোর্ডের। যে দেশের লিগে খেলতে মুখিয়ে থাকেন বাকি সব দেশের ক্রিকেটারেরা, সেখানে আম্পায়ারিংয়ের মান এত খারাপ হলে তা আখেরে লিগেরই ক্ষতি করবে বলে মত তাঁদের।

বিতর্ক আরও বেড়েছে দিল্লি দলের মালিক পার্থ জিন্দলের আচরণে। সঞ্জুর ওই শটের পরেই ভিআইপি দর্শকাসনে থেকে তর্জনী উঁচিয়ে ‘আউট হ্যায়’, ‘আউট হ্যায়’ বলে চিৎকার করতে থাকেন পার্থ। তাঁর এই আচরণ সমর্থকদের ভাল লাগেনি।

সমাজমাধ্যমে তাঁর বিরোধিতায় একের পর এক টুইট পোস্ট করা হয়েছে। পীযূষ শর্মা নামে এক সমর্থক লিখেছেন, “অনেক দলের মালিকই মন এবং আবেগ দিয়ে খেলাটাকে ভালবাসেন। কিন্তু পার্থ জিন্দলের আচরণ লজ্জাজনক। আগেও উনি অনেক বার এই কাজ করেছেন।” আর এক সমর্থক লিখেছেন, “পার্থ জিন্দল সবচেয়ে খারাপ দলমালিক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement