উইকেট পেয়ে ধোনির সঙ্গে উচ্ছ্বাস চেন্নাই ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই।
ঘরের মাঠে এ বারের আইপিএলের শেষ ম্যাচে রাজস্থানকে হারিয়ে দিল চেন্নাই। জিতল ৫ উইকেটে। টসে জিতেও রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত বিপক্ষে গেল। প্রথমে ব্যাট করে রাজস্থান তোলে মাত্র ১৪১/৫। সময় লাগলেও সেই রান তাড়া করতে চেন্নাইয়ের কোনও অসুবিধা হয়নি।
জিতে প্লে-অফের দৌড়ে থাকল চেন্নাই। ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে এল তিন নম্বরে। অন্য দিকে, রাজস্থানকে প্লে-অফ নিশ্চিত করার জন্য এখনও অপেক্ষা করতে হবে।
রাজস্থানের ১৪২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিল চেন্নাই। প্রথম ওভারে চার রান উঠলেও পরের দু’টি ওভারে ১২ রান করে ওঠে। বেকায়দায় পড়ে স্পিনার নিয়ে আসেন সঞ্জু স্যামসন। এসেই রাচিন রবীন্দ্রকে (২৭) তুলে নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাতে অবশ্য চেন্নাইয়ের রান তোলার গতি কমেনি। প্রতি ওভারেই ১০-এর বেশি রান উঠতে থাকে।
দেখে মনে হচ্ছিল, চেন্নাই আলাদা পিচে ব্যাট করতে নেমেছে। বল ধীরে এলেও শট খেলতে অসুবিধা হচ্ছিল না চেন্নাই ব্যাটারদের। রাজস্থানকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন আর এক স্পিনার যুজবেন্দ্র চহাল। ফেরান ড্যারিল মিচেলকে (২২)। সফল হননি মইন আলিও (১০)।
তবে শান্ত হয়ে খেলছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। আদর্শ অধিনায়কের মতোই পিচের চরিত্র বুঝে শট খেলছিলেন। কোনও রকম তাড়াহুড়োর রাস্তায় হাঁটেননি। তাতে রানের থেকে বলের সংখ্যা বেড়ে গেলেও ঘাবড়াননি। শেষ পর্যন্ত থেকে তিনিই দলকে জিতিয়ে দেন।
তবে ১৬তম ওভারে বিতর্ক হয়। রবীন্দ্র জাডেজা দু’রান নিতে ছুটেছিলেন। কিন্তু এক রান নেওয়ার পরেই তাঁকে ফিরিয়ে দেন রুতুরাজ। থার্ড ম্যান থেকে ছোড়া বল আসে সঞ্জুর হাতে। তিনি উল্টো দিকের উইকেটে ছুড়তে যান। তবে জাডেজা উইকেট আড়াল করে ছোটার কারণে সঞ্জুর ছোড়া বল লাগে জাডেজার গায়ে। ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ নিয়মের জেরে আউট হন জাডেজা।
তার আগে, প্লে-অফের টিকিট নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে চিপকে খেলতে নেমে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে আগে ব্যাট করে ১৪১/৫ তোলে রাজস্থান। কোনও ব্যাটারই বড় রান করতে পারেননি। পিচের আঠালো ভাব এবং বল পড়ে থমকে আসার কারণে বেশি রান ওঠেনি।
ম্যাচের আগে পিচ পরীক্ষা করতে গিয়ে পমি এমবাঙ্গোয়া জানিয়েছিলেন, এই পিচে গড়ে ১৮৩ রান উঠলেও দিনের ম্যাচে রান কম হয়েছে। বাস্তবে সেটাই দেখা গেল। পিচে ঘাস ছিল না। বল আসছিল থেমে থেমে। সাহায্য পেলেন চেন্নাইয়ের পেসার, স্পিনারেরা।
রাজস্থানের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল এবং জস বাটলার মারকুটে বলে পরিচিত। তবে চেন্নাইয়ের বোলারদের শুরু থেকে চাপে রাখতে পারলেন না। তুষার দেশপান্ডের প্রথম ওভারে ওঠে মাত্র তিন রান। পরের ওভারে ৪। তৃতীয় ওভারে ৭। মাহিশ থিকশানার ওভারে ১৩ রান উঠলেও পাওয়ার প্লে-তে মাত্র ৪২ রান তোলে রাজস্থান।
পাওয়ার প্লে শেষ হতেই জুটি ভাঙে রাজস্থানের। সিমরজিত সিংহের বলে আউট হন যশস্বী (২৪)। দু’ওভার পরে আউট হন বাটলারও (২১)। ইংরেজ ব্যাটার ২১ রান করতে নেন ২৫ বল, যা তাঁর আক্রমণাত্মক মানসিকতার সঙ্গে মেলানোই যায় না। এমনকি সঞ্জু স্যামসন বা রিয়ান পরাগ নেমেও রান করতে সমস্যায় পড়েন।
১০ ওভারের পর রাজস্থান তোলে মাত্র ৬১। এ বারের আইপিএলে যে গতিতে রান উঠছে, তার তুলনায় এটি ছিল বেশ কম। প্রত্যেক ব্যাটারকেই দেখে বোঝা গিয়েছে রান তুলতে কতটা কষ্ট হয়েছে। শট খেলা মোটেই সোজা ছিল না এই পিচে। শেষ দিকে পরাগের (অপরাজিত ৪৭) সৌজন্যে দেড়শোর কাছাকাছি পৌঁছয় রাজস্থান। তবে জেতার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।