D Gukesh

হার না মানা জেদেই জয়, দাবার বিশ্বযুদ্ধে লিরেনকে হারানোর মন্ত্র ফাঁস ভারতের গুকেশের

দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১১তম ম্যাচ জিতেছেন ভারতের ডি গুকেশ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ডিং লিরেনের বিরুদ্ধে তিনি কী পরিকল্পনা করেছিলেন তা জানিয়েছেন ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৫৮
sports

ডি গুকেশ। —ফাইল চিত্র।

পর পর সাতটি ম্যাচ ড্র হওয়ার পর একটু কি অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন ডি গুকেশ? সেই কারণেই ১১তম ম্যাচে আক্রমণাত্মক শুরু করেন তিনি। শুরু থেকেই চাপে রাখেন প্রতিপক্ষ ডিং লিরেনকে। তার ফলও পান গুকেশ। চাপে ভুল চাল দিয়ে হারেন লিরেন। ফলে দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে এখন এগিয়ে গুকেশ। ১১ রাউন্ডের পর খেলার ফল ৬-৫। বাকি আর তিনটি ম্যাচ। তার মধ্যে একটিও যদি গুকেশ না হারেন তা হলেই দাবার পরবর্তী বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবেন তিনি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন লিরেনের বিরুদ্ধে তিনি কী পরিকল্পনা করেছিলেন তা জানিয়েছেন ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার।

Advertisement

এই ম্যাচে রেটি ওপেনিংয়ে শুরু করেছিলেন গুকেশ। ২০২১ সালে একটি র‌্যাপিড ম্যাচে আধিবান বাস্করনও লিরেনের বিরুদ্ধে এই ওপেনিংয়েই খেলা শুরু করেছিলেন। সেই ম্যাচ জিতেছিলেন লিরেন। তাই রেটি ওপেনিংয়ে শুরু করলেও নিজের পঞ্চম চালে চমক দেন গুকেশ। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “আমি জানতাম লিরেন আধিবানের সঙ্গে এই ওপেনিংয়ে খেলেছে। তাই আমি দলের সঙ্গে বসে একটা পরিকল্পনা করেছিলাম। পঞ্চম চালে সেই চমকটা দিয়েছি। ওই চাল আমি খুব একটা কাউকে দিতে দেখিনি। ওটা লিরেনকে অবাক করে দিয়েছিল।”

গুকেশের চাল যে তাঁকে চাপে ফেলে দিয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন লিরেন। আধিবানের বিরদ্ধে তিনি ঠিক কী চাল দিয়েছিলেন তা ভাবতে গিয়েই সময় নষ্ট করেন চিনের গ্র্যান্ডমাস্টার। লিরেন বলেন, “চার নম্বর চাল দেওয়ার সময় আমি বুঝতে পারছিলাম না যে ঠিক করছি না ভুল। আধিবানের সঙ্গে একটা খেলার কথা মনে পড়ছিল। কিন্তু ওখানে ঠিক কী কী চাল দিয়েছিলাম তা মনে পড়ছিল না। বোকার মতো হিসাব করতে গিয়ে ৪০ মিনিট নষ্ট করেছি।”

শুরুতে এগিয়ে গেলেও একটা সময়ে গুকেশও চাপে পড়েন। ১১তম চালের জন্য ১ ঘণ্টা ১৭ মিনিট সময় নেন তিনি। সেই সময় নিজের উপরেই বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন ভারতীয় দাবাড়ু। তখনই হার না মানার কথা ভাবেন তিনি। গুকেশ বলেন, “ভালই খেলছিলাম। হঠাৎ, সব কেমন জটিল হয়ে গেল। তখন নিজেকেই চড় মারতে ইচ্ছা করছিল। আমি সেই সময় ঠিক করে নিয়েছিলাম, একটা করে চালের কথা ভাবব। হারলে চলবে না। ১৬তম চালটা ভাল দিয়েছিলাম। ওটাই আমাকে খেলায় ফেরায়।”

একটা সময়ের পর দুই প্রতিযোগীর ঘড়িতেই সময় কমে যায়। ফলে দ্রুত চাল দিতে হচ্ছিল। সেটা করতে গিয়েই ভুল করেন লিরেন। সেই সময়ও গুকেশ একটা করে চালের কথাই ভাবছিলেন। তিনি বলেন, “মনে হচ্ছিল র‌্যাপিড বা ব্লিৎজ় খেলা শুরু হয়েছে। দ্রুত চাল দিতে হচ্ছিল। তখনও আমি একটা করে চালের কথাই ভাবছিলাম। একটা সময় পরে বুঝলাম, আর হারব না। তার পরেই হঠাৎ জয়ের সুযোগ এল। সেটা কাজে লাগাতে পেরেছি।”

সোমবার লিরেনের বিরুদ্ধে ১২তম ম্যাচ খেলতে নামছেন গুকেশ। মঙ্গলবার বিশ্রাম। বুধ ও বৃহস্পতিবার হবে ১৩ ও ১৪তম ম্যাচ। এই তিনটি ম্যাচ ড্র করতে পারলেই বিশ্বনাথন আনন্দের পর দ্বিতীয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাবে ভারত। আর যদি তার মধ্যে একটি ম্যাচ গুকেশ জিতে যান তা হলে ১৪ রাউন্ডের আগেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবেন ১৮ বছর বয়সি দাবাড়ু। তবে সেটা সহজ হবে না। কারণ, এই তিনটি ম্যাচের মধ্যে দু’টি ম্যাচে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলতে হবে গুকেশকে।

Advertisement
আরও পড়ুন