(বাঁ দিকে) এমিলিয়ানো মার্তিনেস এবং (ডান দিকে) গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। —ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়াম যখন সুনীল ছেত্রীতে মেতে, তখন আরও একটি মুখ একই রকম ঝলমলে। গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। ভারতীয় দলের গোলরক্ষক পর পর দু’টি ম্যাচে পেনাল্টি শুট আউটে সেভ করে দলকে সাফ কাপে চ্যাম্পিয়ন করলেন। আর এমন দিনে তাঁর হাত ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করল, যে দিন কলকাতা মাতালেন একেবারে বিশ্বজয়ী গোলরক্ষক এমি মার্তিনেস।
লিয়োনেল মেসির সতীর্থ সোমবার কলকাতায় পা রেখেছেন। তার দু’দিন আগে গুরপ্রীতের হাত ধরে ভারত ফাইনালে উঠে গিয়েছিল। বেঙ্গালুরুতে থাকা ভারতীয় দলের গোলরক্ষকের সঙ্গে কলকাতায় থাকা আর্জেন্টিনার গোলরক্ষকের দেখা হওয়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। তবু দিবুর (মার্তিনেসের ডাকনাম) আগমন বার্তা কি আর গুরপ্রীতের কানে পৌঁছায়নি! প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার দূর থেকে দিবুর ছোঁয়াই কি উদ্বুদ্ধ করেছে গুরপ্রীতকে!
এমনিতে কোনও মিলই নেই। মার্তিনেসকে দেখলেই যেখানে মনে হয় দস্যি, সেখানে গুরপ্রীত শান্ত। বিশ্বকাপের মঞ্চে ট্রফি নিয়ে মার্তিনেস যা করেছিলেন, গুরপ্রীত হয়তো তা দুঃস্বপ্নেও করার কথা ভাবেন না। আর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের গোলরক্ষকের সঙ্গে বহু দিন পরে ফিফা ক্রমতালিকায় ১০০ নম্বরে ঢোকা দলের গোলরক্ষকের মাঠের ভিতরে মিল খুঁজতে যাওয়া মুর্খামি। হয়ত নিছকই সমাপতন।
তবে মানসিকতায় দু’জনের একটা মিল রয়েছে। মার্তিনেস যেমন বিশ্বকাপের পরে বলেছিলেন, ফাইনালে তিনি কী ভাবে ফ্রান্সের ফুটবলারদের ফোকাস নষ্ট করে দিয়েছিলেন, গুরপ্রীতও জানিয়েছেন তিনি সেটাই করেন। সেমিফাইনাল ম্যাচের পরে তিনি বলেছিলেন, “আমাদের দলে পেনাল্টি নেওয়ার মতো ফুটবলার কম নয়। অনুশীলনে প্রচুর পরিশ্রম করি আমরা। গোলকিপার হিসাবে আমাদের কাজ বিপক্ষের ফুটবলারের মনঃসংযোগ নড়িয়ে দেওয়া। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই কাজ করি। সব পেনাল্টি বাঁচানো সম্ভব। কেউ কেউ বুদ্ধিতে আপনাকে টেক্কা দেবে। কিন্তু অভিজ্ঞতা এবং শারীরিক সক্ষমতা কাজে লাগালে বাঁচানো সম্ভব।”
টাইব্রেকারে সাফল্যের জন্য সতীর্থদেরই কৃতিত্ব দিচ্ছেন ৬২টি ম্যাচের ২৪টিতে কোনও গোল না খাওয়া গোলরক্ষক। বললেন, ‘‘আমাদের দলের অনেকেই দুর্দান্ত পেনাল্টি মারে। ওদের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলন করেই উপকৃত হয়েছি।’’