মেসিদের দ্বিতীয় জার্সিতে থাকবে বিশেষ বার্তা। ছবি: টুইটার।
বিশ্বকাপের জার্সি নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের প্রতি বারই উৎসাহ থাকে তুঙ্গে। প্রিয় দলের জার্সি কেমন হল, তা জানতে উদ্গ্রীব থাকেন সকলেই। বিশ্বকাপের জার্সি তৈরিতে বিশেষ যত্ন নেয় ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিও। জার্সির মান, নকশা— সব কিছুই তারা তুলে ধরে প্রচারের মাধ্যম হিসাবে। অন্যথা হচ্ছে না কাতার বিশ্বকাপেও।
ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি শুধু জার্সির মান বা সৌন্দর্য্য নিয়েই যত্নবান থাকে না। অনেক সময়ই তারা চেষ্টা করে অর্থবহ জার্সি তৈরি করতে। জার্সির রং বা নকশার মাধ্যমে বিশেষ কোনও বার্তা বা সংশ্লিষ্ট দেশের সংস্কৃতি-ইতিহাসকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়। কাতার বিশ্বকাপে জার্মানি, আর্জেন্টিনা, জাপান-সহ বিভিন্ন দেশের জার্সি থাকবে এমনই নানা ভাবনার ছোঁয়া।
এই ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সাধারণত প্রধান জার্সি নিয়ে করা হয় না। দ্বিতীয় বা অ্যাওয়ে জার্সিতেই লুকিয়ে থাকে কোনও বার্তা। মেক্সিকোর দ্বিতীয় জার্সির তৈরি হচ্ছে সাদার উপর লাল রঙের নকশায়। সেই নকশা মেক্সিকোর ইতিহাস, সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে। মেক্সিকো ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ‘এটা শুধু জার্সি নয়। এটা আমাদের শিকর, ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে। জাদু, শক্তি এবং কবিতায় ভরা একটা বর্ম।’
জার্মানির জার্সিতেও থাকবে বিশেষত্বের ছোঁয়া। ১৯০৮ সালে জার্মানির প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচের জার্সির আদলে তৈরি করা হয়েছে কাতার বিশ্বকাপের জার্সি। সাদার উপর কালো স্ট্রাইপ থাকবে তাদের প্রথম জার্সিতে। থাকবে জাতীয় পতাকার তিন রংও। জার্মানির ফুটবল সংস্থা জানিয়েছে, তাদের এই জার্সি দলগত সংহতিকে তুলে ধরবে। জার্মান স্ট্রাইকার সের্জে নাব্রি বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রথম জার্সিটা দারুণ হয়েছে। রঙের মিশ্রণের দারুণ সামঞ্জস্য রয়েছে। এই জার্সি পরে খেলা গর্বের।’’ জার্মানির দ্বিতীয় জার্সি তৈরি হচ্ছে কালো এবং লাল রঙের আধুনিক নকশার।
বিশ্বকাপের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হচ্ছে জাপানের জার্সিও। নীল রঙের প্রথম জার্সিতে থাকবে ওরিগামির (কাগজের শিল্প) ছোঁয়া। একটি কমিক সিরিজের মাধ্যমে নতুন জার্সির বিপণনের পরিকল্পনা করেছে প্রস্তুতকারী সংস্থা।
বিশ্বকাপের মঞ্চে চমক দিতে প্রস্তত লিয়োনেল মেসির আর্জেন্টিনা। প্রথম জার্সিতে অবশ্য কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে না তারা। পরিচিত নীল-সাদা জার্সি পরেই মাঠে নামবেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। চমক থাকছে দ্বিতীয় জার্সির রঙে। পুরো জার্সিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেগুনি রং। নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বার্তা দিতেই এই রং বেছে নিয়েছে প্রস্তুতকারী সংস্থা।
পিছিয়ে থাকছে না স্পেনও। তাদের দ্বিতীয় জার্সিতে থাকছে ১৯৮২ বিশ্বকাপের লোগোর ছোঁয়া। চার দশক আগে নিজেদের আয়োদন করা বিশ্বকাপের লোগোকেই নতুন ভাবে তুলে এনেছে প্রস্তুতকারী সংস্থা। স্পেনের দ্বিতীয় জার্সিতে ব্যবহার করা হয়েছে হালকা নীল এবং সাদা রং। এ ছাড়া মরক্কো, ঘানা, উরুগুয়ে, সুইৎজারল্যান্ডের জার্সিতেও থাকবে চমক।
সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি বিশ্বকাপের জার্সিতে আনছে চমক। এই কাজ করতে গিয়ে একটি সংস্থাকে ছোট বিতর্কেও জড়াতে হয়েছে। যদিও তাদের আশা, নতুন ভাবনার জার্সিগুলি জনপ্রিয়। বেশ কয়েকটি দলকে এমন ধরনের জার্সিতে দেখা যাবে কাতার বিশ্বকাপে।