অনুশীলনে মহমেডানের ফুটবলারেরা। — ফাইল চিত্র।
আইএসএলে আবির্ভাবে চমকে দিয়েছিল মহমেডান। প্রথম ম্যাচে হারলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র এবং তৃতীয় ম্যাচে জিতেছিল তারা। তার পর থেকেই ছন্দপতন। টানা তিনটি ম্যাচে হেরে পয়েন্ট তালিকায় দ্বাদশ স্থানে। কোচ আন্দ্রেই চের্নিশভ জানেন তাঁরা খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে। তবে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের আগে চাকরি বাঁচানো নিয়ে ভাবছেন না। বরং প্রথম তিন ম্যাচের কথা মনে করিয়ে খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করতে চাইছেন।
প্রথম তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট পেলেও মহমেডানের আগ্রাসী ফুটবল নজর কেড়ে নিয়েছিল। তিন প্রধানের মধ্যে সবচেয়ে ভাল খেলছিল মহমেডানই। কিন্তু কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে হারের পর থেকেই চাকা ঘুরতে থাকে। মোহনবাগানের কাছে তিন এবং হায়দরাবাদের কাছে চার গোল খায় তারা।
তবে চের্নিশভ মানলেন না তাঁদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি রয়েছে। বলেছেন, “আমরা আগ্রাসী ফুটবল খেলছি না এটা বলা যাবে না। প্রথম তিন ম্যাচে ভাল ফুটবল খেলেছিলাম। সে কথা এখন আর কেউ বলে না। এটাই ফুটবল, এটাই জীবন। আমাদের মেনে নিতেই হবে। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে সেই খেলাটাই খেলতে চাই যেটা প্রথম তিনটে ম্যাচে খেলেছিলাম। খেলোয়াড়দের মধ্যে আবার আগের মতো উত্তেজনা দেখতে পেয়েছি।”
চের্নিশভের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ম্যাচই তাঁর কাছে শেষ সুযোগ কি না। রাশিয়ার কোচ উদাহরণ টানলেন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলোত্তির। বললেন, “ওটা নিয়ে ভাবছিই না। একদিন কেউ বলবে আমিই সেরা কোচ। পরের দিনই অন্য কেউ বলবে আমি সবচেয়ে খারাপ কোচ। বাইরের কথায় পাত্তা দিই না। এখন তো কত লোকে আনচেলোত্তির সমালোচনা করছে। কারণ ওর দল খারাপ খেলছে। সে ভাবেই আমারও সমালোচনা করা হচ্ছে। এটাই ফুটবল। কোচেদের সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হয়।”
মুখে সাহসী কথা বললেও চের্নিশভ জানেন তাঁর কাজটা কতটা কঠিন। সদ্য এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ভাল ফল করে ফেরা ইস্টবেঙ্গল আগের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী। সে কথা মাথায় রেখে চের্নিশভের উত্তর, “আমরা একটা বড় ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলতে নামছি। আইএসএলে ওরাও সমস্যায় মধ্যে রয়েছে। তবে এএফসি-র ভাল ফল ওদের আত্মবিশ্বাসী করেছে। আমাদের তৈরি থাকতে হবে। খেলোয়াড়দের মানসিকতা বদলের চেষ্টা করেছি। ভাল ফুটবল খেলতে চাই।”
দলের খারাপ ফলের নেপথ্যে অনভিজ্ঞতাকেই দুষেছেন চের্নিশভ। তাঁর মতে, দলে এমন অনেক খেলোয়াড় রয়েছেন যাঁদের আইএসএলে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। সময় দিলেই তা ঠিক হবে। চের্নিশভের কথায়, “আমরাও আগ্রাসী ফুটবল খেলছি। সেটা যথেষ্ট হচ্ছে না। অনেক ভুল করে ফেলছি যেগুলো কমাতে হবে। দলটা তরুণ। আইএসএলে খেলার অভিজ্ঞতা অনেকেরই নেই। দু’-তিনটে ম্যাচ ভাল খেলেও ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে দল। ফিরে আসতে সময় চাই। ছয়, আট মাস এমনকি এক বছরও লাগতে পারে। পরিশ্রমটা করে যেতে হবে। আশা করি কিছু ফুটবলার বদলাতে পারলে আবার আমরা লড়াইয়ে ফিরতে পারব।”