ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে কেরল সমর্থকদের শান্ত হতে বলেছেন সোনম। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ফ্রিকিক নিয়ে কিছু দিন আগেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সুনীল ছেত্রী। তার পর থেকেই কেরল ব্লাস্টার্সের সমর্থকদের ঘৃণার শিকার হয়েছেন তিনি। পোড়ানো হয়েছে তাঁর কুশপুতুল। পরিবারের উদ্দেশে অকথ্য গালিগালিজ করা হয়েছে। সেই ঘটনার পর এ বার জবাব দিলেন তাঁর স্ত্রী সোনম ভট্টাচার্য। ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে তিনি কেরল সমর্থকদের শান্ত হতে বলেছেন। তবে কটাক্ষ করতেও ভোলেননি।
সোনম লিখেছেন, “ফুটবল, শত্রুতা, আবেগ, সমর্থনের মাঝে ভদ্র এবং দয়ালু থাকতে কবে আমরা ভুলে গেলাম? আশা করি এত দিনে আপনারা সবাই সমাজমাধ্যমে ঘৃণা, খারাপ ভাবনাচিন্তা এবং হতাশাপ্রকাশের থেকে কিছুটা দূরে চলে গিয়েছেন এবং নিজের বাড়িতে প্রিয় লোকজনদের মাঝে আবার ফিরে গিয়েছেন। আশা করি গালিগালাজ এবং হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে আপনাদের যেটা দরকার ছিল, সেটা পেয়ে গিয়েছেন।”
সোনমের সংযোজন, “কেরল খুব ভাল একটা রাজ্য যেখানে অনেক ভদ্র মানুষ রয়েছেন। তাই কোনও ধরনের ঘৃণাই আমার ধারণাকে বদলাতে পারবে না। ফুটবল নিঃসন্দেহে মানুষকে আবেগপ্রবণ করে তোলে, কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার পর ভদ্রতাকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।”
সোনম হলেন বাংলার প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের মেয়ে। দীর্ঘ দিন সুনীলের সঙ্গে প্রেম করার পর বিয়ে করেছেন ২০১৭-এ। সুনীলের দল বেঙ্গালুরুর প্রায় প্রতি ম্যাচেই দর্শকাসনে দেখা যায় তাঁকে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হওয়ার পর খেলা গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়। ৯৭ মিনিটে বক্সের বাইরে সুনীলকে কেরলের এক ফুটবলার ফাউল করায় ফ্রিকিক দিয়েছিলেন রেফারি ক্রিস্টাল জন। সেই ফ্রিকিক দেওয়া নিয়ে বিতর্ক না তৈরি হলেও, বিতর্ক বড় হয়েছিল ফ্রিকিকের পর। কেরলের গোলরক্ষক, ফুটবলাররা প্রস্তুত হওয়ার আগেই শট মেরেছিলেন রেফারিও গোল দিয়ে দেন। কেরলের ফুটবলাররা অভিযোগ করেছিলেন, রেফারি বাঁশি বাজানোর আগেই সুনীল শট নিয়েছেন। তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন না। তাই গোল বাতিল করতে হবে। কিন্তু তাঁদের আবেদনে কর্ণপাত করেননি রেফারি।
এর পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শুরু হয় বচসা। রেফারিকে ঘিরে ধরে প্রতিবাদ করেন কেরল ফুটবলাররা। কিন্তু রেফারি গোলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করায় কোচ ইভান ভুকোমানভিচের নির্দেশে মাঠ ছেড়েছিলেন কেরল ফুটবলাররা। চতুর্থ রেফারির সঙ্গে কথা বলেও খুশি হননি তিনি। ক্ষুব্ধ কেরল কোচ মাঠে ঢুকে দল তুলে নেন। রেফারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছিল কেরল শিবির। যদিও সেই বিতর্কিত গোলেই সুনীলরা পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে।
এর দু’দিন পরেই নেটমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, বেঙ্গালুরু এফসির জার্সি পরা সুনীলের কুশপুতুল পোড়াচ্ছেন কয়েক জন কেরল ব্লাস্টার্স সমর্থক। কুশপুতুল পোড়ার সময় নাচতেও দেখা যায় তাঁদের। কেরলের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সমর্থকরা। তাঁদের অভিযোগ, জোর করে তাঁদের হারানো হয়েছে। সুনীলের ফ্রিকিক কোনও ভাবেই বৈধ নয়।