Sunil Chhetri

ভারতীয় দলে দুষ্টুমির ‘নাটের গুরু’ সুনীল, বদলে গিয়েছিলেন জাতীয় দলের নেতৃত্ব পেয়ে

১৮ বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলছেন সুনীল। ভর্তি তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি। ফুটবলজীবনের বিভিন্ন সময় নানা রকম অনুভূতি হয়েছে তাঁর। জানিয়েছেন ফুটবল থেকে পাওয়া শিক্ষার কথাও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ১৫:৫৪
picture of Sunil Cheetri

জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়ার পর মানসিকতা পরিবর্তন হয় সুনীলের। ছবি: টুইটার।

এক দশকেরও বেশি সময় ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় তাঁর। ২০১২ সালে পান নেতৃত্বের দায়িত্ব। তখন থেকেই ভারতীয় ফুটবলের প্রধান মুখ তিনি। এক দশকের বেশি সময় ধরে তাঁর দিকেই তাকিয়ে থাকেন ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা।

বব হাউটন থেকে ইগর স্টিমাচ ভারতীয় দলের সব কোচই ভরসা রেখেছেন সুনীলের উপর। এক সাক্ষাৎকারে নিজের ফুটবলজীবনের কথা বলেছেন সুনীল। জানিয়েছেন অধিনায়ক হওয়ার পর মানসিকতা পরিবর্তনের কথাও। প্রথম বার নেতৃত্ব দেওয়া প্রস‌ঙ্গে বলেছেন, ‘‘হাউটন যে দিন প্রথম আমাকে অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ড দিয়েছিলেন, সে দিন হঠাৎ চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। কারণ তার আগে পর্যন্ত আমি ছিলাম এক জন সাধারণ ফুটবলার। সবার পিছনে বসতাম। স্টিভন ডায়াস, এনপি প্রদীপ আর আমি সিনিয়রদের নিয়ে মজা করতাম। নানা রকম দুষ্টুমি করতাম। আমিই ছিলাম নাটের গুরু।’’

Advertisement

অধিনায়ক হওয়ার পর অনুভূতি কেমন ছিল? সুনীল বলেছেন, ‘‘নেতৃত্বের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম তিন-চারটে ম্যাচ সবার সামনে বসতাম। নেতৃত্বের চাপ কী, তখনই বুঝতে শুরু করি। আগে যে রকম থাকতাম, সে রকম থাকলেও হত। কিন্তু তখন একটু ভাবনাচিন্তা করতেই হত। কারণ অধিনায়ক হওয়ার পর আর ব্যাপারটা শুধু আমার একার ছিল না। গোটা দলের কথা ভাবতে হত।’’

ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সব থেকে বেশি গোল করার কৃতিত্ব রয়েছে সুনীলের। অধিনায়ক হওয়ার পর নিজের খেলার পাশাপাশি দলের পারফরম্যান্সের কথাও ভাবতে হয়েছে তাঁকে। সুনীল বলেছেন, ‘‘আগে আমি ভাবতাম শুধু নিজের খেলা নিয়ে। আমার পাস, ড্রিবল, ক্রস, গোল এ সব নিয়েই ভাবতাম। নিজের মতো অনুশীলন করে বাড়ি চলে যেতাম। কেউ কেউ এগুলো নিয়ে অপমান বা হেনস্থা করলেও হজম করে নিতাম। অধিনায়ক হওয়ার পর নিজের কথা নয়, মাঠ এবং বাইরে পুরো দলের কথা ভাবতে হত। প্রথম প্রথম একটু চাপ নিয়ে ফেলতাম। পরে নিজেকে বুঝিয়েছিলাম, চাপ নিয়ে লাভ নেই, কাজটা একই। মাঠে এবং বাইরে দৃষ্টান্ত স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সব থেকে বড় কথা ভুল করলে স্বীকার করে নেওয়া এবং ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। দায়িত্ব বেড়ে গেলে, সিনিয়র হয়ে গেলে নিজের ভুল স্বীকার করাটা কঠিন হয়। এটাও অধিনায়ক হওয়ার পরে শিখেছি। ভুল হতেই পারে। অনেক বড় বড় ফুটবলারও ভুল করে। সে যদি অধিনায়ক হয় এবং সব অভিযোগের নিজের দিকে নিয়ে নেয়, তা হলে সাজঘরের পরিবেশ অনেক পাল্টে যায়।’’

৩৮ বছর বয়সেও ভারতীয় ফুটবলের সব থেকে উজ্জ্বল মুখ সুনীল। নিজের ফুটবলজীবন নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘সত্যি বলতে, সুনীল ছেত্রী হয়ে উঠতে পারা একটা আশীর্বাদ। খেলার মাঠের সব থেকে বড় শিক্ষা হার মানতে শেখা। ফুটবল আমাকে সেই শিক্ষাই দিয়েছে। এখনও আমার ফুটবলে খারাপ সময় আসে। ব্যর্থতা আসে। সেই সময় উপলব্ধি করি, আমি কিছুই না। এটাই জীবনের সব থেকে বড় শিক্ষা।’’ সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাও আসে খেলোয়াড়দের জীবনে। উভয়কেই সহজ ভাবে মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন সুনীল।

আরও পড়ুন
Advertisement