ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছাড়লেন রোনাল্ডো। ফাইল ছবি
বিশ্বকাপে নামার দু’দিন আগেই ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয়ে গেল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। মঙ্গলবার ক্লাবের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে তা জানিয়ে দেওয়া হল। আগামী বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ঘানার বিরুদ্ধে নামতে চলেছে পর্তুগাল। তার আগেই এই খবর প্রকাশ্যে এসে গেল।
মঙ্গলবার রাতে ৬৭ শব্দের একটি বিবৃতি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে ম্যান ইউ। তাতে বলা হয়, ক্লাবের সঙ্গে মৌখিক ভাবে বিচ্ছেদ হচ্ছে রোনাল্ডোর। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দুই পর্বে রোনাল্ডো যে অবদান রেখেছেন, তার জন্যে তাঁকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। এটাও বলা হয়েছে, এরিক টেন হ্যাগের অধীনে ম্যান ইউ আগামী দিনে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।
রোনাল্ডোর সঙ্গে যে ক্লাবের বিচ্ছেদ হতে চলেছে, এটা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট ছিল। ক্লাব থেকে বিশ্বকাপ খেলতে জাতীয় শিবিরে আসার আগেই রোনাল্ডোর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে আসে। পিয়ার্স মর্গ্যানকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে রোনাল্ডো প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন ক্লাব এবং কোচ এরিক টেন হ্যাগের। জানিয়েছিলেন, টেন হ্যাগ তাঁকে সম্মান করেন না। তাই তিনিও কোচকে সম্মান করেন না।
Cristiano Ronaldo is to leave Manchester United by mutual agreement, with immediate effect.
— Manchester United (@ManUtd) November 22, 2022
The club thanks him for his immense contribution across two spells at Old Trafford.#MUFC
সাক্ষাৎকারে রোনাল্ডো বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। আমাকে নিশানা করা হচ্ছে। আমি এই ক্লাবে থাকি, সেটা অনেকে চায় না। শুধু এই বছর নয়, আগের বছরও তারা সেটাই চেয়েছিল।’’ কিন্তু কারা রয়েছেন সেই তালিকায়। কোচ এরিক টেন হ্যাগের নাম প্রকাশ্যে বলেছেন রোনাল্ডো। কিন্তু বাকি কারও নাম নেননি। বলেছেন, ‘‘শুধু কোচ নয়, আরও দু-তিন জন রয়েছে যারা আমাকে চায় না।’’
এই মরসুমের শুরু থেকেই লাল ম্যাঞ্চেস্টারের প্রথম একাদশে নিয়মিত ছিলেন না রোনাল্ডো। বেশির ভাগ ম্যাচে বেঞ্চে বসেই কাটাতে হয়েছে। হাতে গোনা কিছু ম্যাচে পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নেমেছেন। নেদারল্যান্ডসের টেন হ্যাগের যে রোনাল্ডোকে পছন্দ নয়, তা তাঁর দল গঠন থেকেই পরিষ্কার। রোনাল্ডোর থেকে অনেক বেশি মার্কাস র্যাশফোর্ডের উপর ভরসা তাঁর। তার ফলও পাচ্ছে দল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শুরু থেকেই অনেক ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করেছে তারা। এ বারও লিগ জেতার সম্ভাবনা তাদের প্রায় নেই বললেই চলে।
টেন হ্যাগের সঙ্গে তাঁর বিবাদ মাঠেই দেখা গিয়েছে। টটেনহ্যাম হটস্পারের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই টানেল দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রোনাল্ডো। সেই কারণে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরে অবশ্য দলে ফেরানো হয় রোনাল্ডোকে। কোচকে নিয়ে রোনাল্ডো বলেছেন, ‘‘যদি তুমি আমাকে সম্মান না করো, তা হলে আমিও তোমাকে সম্মান করব না। আগে ফুটবলারদের সম্মান করো। তা হলে তোমাকেও ফুটবলাররা সম্মান করবে।’’
এই মরসুমের আগেই জল্পনা শুরু হয়েছিল রোনাল্ডোর দল বদলের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সেই সময় সংবাদমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে অনেক ভুয়ো খবর ছড়িয়েছিল বলে জানিয়েছেন রোনাল্ডো। বলেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা বলেছে। গত কয়েক মাসে আমাকে নিয়ে ১০০টা খবর হলে তার মধ্যে মাত্র ৫টা সত্যি।’’
টেন হ্যাগের আগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অন্তর্বর্তী কোচ ছিলেন রাল্ফ রাংনিক। তাঁকে কোচ হিসাবেই মানতে চান না রোনাল্ডো। তাঁর কথায়, ‘‘যদি তুমি ভাল কোচই না হতে পার তা হলে কী ভাবে দলের বস্ হবে? আমি ওর নাম আগে শুনিনি। ম্যাঞ্চেস্টারের মতো দলে ও বেমানান।’’ এই মরসুমের আগে ম্যাঞ্চেস্টার ছাড়েন রাংনিক। অস্ট্রিয়ার জাতীয় দলের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।