নেপথ্যে মেসির হাসিমুখ, গোল করে তাঁকেই টপকে গেলেন রোনাল্ডো। ছবি: রয়টার্স
বিশ্বকাপে ইতিহাস করলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। বিশ্বের প্রথম ফুটবলার হিসাবে পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করার নজির গড়লেন তিনি। যে পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলেছেন, প্রতিটিতেই গোল করেছেন এই ফুটবলার। কিছু দিন আগেই চারটি বিশ্বকাপে গোল করার নজির গড়েছিলেন লিয়োনেল মেসি। সেই নজির ছাপিয়ে গেলেন রোনাল্ডো। পাশাপাশি বিশ্বকাপে গোল করার নিরিখেও মেসির থেকে রোনাল্ডো এগিয়ে গেলেন এক গোলে।
বৃহস্পতিবারের ম্যাচে প্রথম থেকেই গোল করার জন্য মুখিয়ে ছিলেন রোনাল্ডো। আগের মতো তাঁর আর সেই গতি নেই। ফলে ঘানার ফুটবলারদের শারীরিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেশ কষ্টই হচ্ছিল। আগে বল নিয়ে অনায়াসে দু’-তিন জনকে কাটিয়ে বেরিয়ে যেতেন। এখন সেই রোনাল্ডো আর নেই। আগের মতো অনায়াসে বল নিয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন না তিনি। তবু প্রথমার্ধে একটি গোল করে ফেলেছিলেন। কিন্তু আগেই ফাউল করার কারণে সেই গোল বাতিল হয়ে যায়।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগ এসে গেল। ৬৫ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যেই রোনাল্ডোকে ফেলে দেন ঘানার মহম্মদ সালিসু। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। ভারের সাহায্যও নিতে হয়নি। রোনাল্ডো শট মারার আগেই বলে চুমু খান। রেফারি যখন বাকি ফুটবলারদের নির্দেশ দিতে ব্যস্ত, তখন চোখ বন্ধ করে মনোযোগে ব্যস্ত থাকলেন তিনি। তার পর গোলকিপারের ডান দিকে শট মারেন। গোলকিপার ঠিক দিকে ঝাঁপালেও বল জালে জড়িয়ে যায়।
পঞ্চম বার বিশ্বকাপ খেলতে নামার আগে রোনাল্ডো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় কেঁদে ফেললেন। ছলছল করে উঠল চোখ। ক্যামেরা জুম করে দেখাল তাঁকে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল, অনেক কষ্ট আবেগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু পুরোপুরি পারেননি।
Out of this world
— FIFA World Cup (@FIFAWorldCup) November 24, 2022
🖐 Cristiano Ronaldo becomes the first man to score at five FIFA World Cups#FIFAWorldCup | @Cristiano pic.twitter.com/3UKqXLsZWd
ঘানার বিরুদ্ধে ম্যাচে রোনাল্ডোই দলের নেতা। সবার আগে এগিয়ে আসেন তিনি। পিছু পিছু বাকি ফুটবলাররা। ইস্পাতকঠিন দেখাচ্ছিল রোনাল্ডোর মুখ। ভাল কিছু করার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জাতীয় সঙ্গীতের সময় বিড়বিড় করে উঠল ঠোঁট। শেষ পর্যায়ে চোখে এসে গেল জল। আটকাতে পারলেন না নিজেকে। কিন্তু পেশাদার ফুটবলার তিনি। পর ক্ষণেই সামলে নিলেন নিজেকে। নিজস্ব ছন্দে ফিরলেন দ্রুতই।
পর্তুগাল-ঘানা ম্যাচের চতুর্থ রেফারি স্টেফানি ফ্র্যাপার্ট। তাঁর সঙ্গে কথা বললেন। আলাদা করে ছবি তুললেন। সতীর্থ এবং সমর্থকদের তাতিয়ে দিলেন ম্যাচের আগেই। চেষ্টা করছিলেন যথাসম্ভব স্বাভাবিক থাকার। গত কয়েক দিনে তাঁর উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। সে সবের কোনও চিহ্ন অন্তত তাঁর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না।