অস্কার ব্রুজ়ো। —ফাইল চিত্র।
০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পরও মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে সোমবার সমতা ফিরিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তবু শেষরক্ষা হয়নি। ম্যাচের শেষ দিকে গোল খাওয়ার রোগ না সারায় ২-৩ গোলে হারতে হয়েছে অস্কার ব্রুজ়োর দলকে। ফলে আবার ধাক্কা খেয়েছে লাল-হলুদ শিবিরের আইএসএল স্বপ্ন। ফুটবলারদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারার কারণ ম্যাচের পর ব্যাখ্যা করেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। দলের অসুখ ধরে ফেলেছেন তিনি।
আইএসএলের পয়েন্ট টেবিলে এগোতে পারছে না ইস্টবেঙ্গল। একটা ম্যাচ জিতে আশা তৈরি হলেও, তা ধরে রাখা যাচ্ছে না। পরের ম্যাচেই পয়েন্ট খুইয়ে পিছিয়ে পড়ছে প্রথম ছয়ে ঢোকার লড়াই থেকেও। সোমবারও ঘরের মাঠে মুম্বই সিটির কাছে ২-৩ গোলে হেরে গিয়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। সমতা ফিরিয়েও লাভ হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে আগ্রাসী ফুটবল খেলে মুম্বই রক্ষণকে চাপে রেখেছিলেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারেরা। তবু পয়েন্ট অধরা। কেন এমন হচ্ছে? দলের অসুখ ধরে ফেলেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
ম্যাচের পর ব্রুজ়ো বলেছেন, তিনি বলেছেন, ‘‘পিছিয়ে থাকলে আমরা বেশ ভাল খেলছি। ড্র হলেও পরের ম্যাচে ছেলেরা ভাল খেলছে। কিন্তু এগিয়ে থাকলে আমাদের খেলা ভাল হচ্ছে না। ম্যচের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছি না আমরা। শুধু চাপের মুখে ভাল খেললে এ রকম কঠিন লিগে এমন পারফরম্যান্স করে পয়েন্ট টেবিলে উপরের দিকে ওঠা যায় না। আমাদের অনেক উন্নতি প্রয়োজন। দ্বিতীয়ার্ধে ছেলেরা অনেক উজ্জীবিত ফুটবল খেলেছে। হৃদয় দিয়ে লড়াই করেছে। অনেকগুলো সুযোগ তৈরি করেছি আমরা। ক্লেটন সিলভা, মহেশ সিংহেরা বেশ কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে। মেনে নেওয়া কঠিন হলেও এটাই বাস্তব আমাদের দলে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে সমতায় ফেরার পর আমাদের যা যা করা দরকার ছিল, আমরা সেগুলো করতে পারিনি। আত্মতুষ্টি হয়তো খানিকটা দায়ী। দু’গোলে পিছিয়ে থাকার পর সমতায় ফেরার পর কিছুটা গা-ছাড়া ভাব এসে গিয়েছিল। খেলার নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি আমরা। কিছু না ভেবে শুধু আক্রমণে উঠে গেলে এমন হবেই। ডিসেম্বরে কিছুটা ভাল জায়গায় ছিলাম আমরা। গত দু’সপ্তাহে আবার আগের জায়গায় ফিরে গিয়েছি। এটা আমি আশা করিনি।’’
রয়েছে অন্য সমস্যাও। যা চিন্তায় রেখেছে লাল-হলুদ কোচকে। দলের চোট-আঘাত সমস্যার কথা শোনা গিয়েছে ব্রুজ়োর মুখে। ইস্টবেঙ্গল কোচ বলেছেন, ‘‘হাতে যথেষ্ট ফুটবলার নেই আমাদের। অনেকের চোট। প্রথম একাদশ বাছতেই সমস্যা হচ্ছে। পরিবর্ত ফুটবলার নামাতে ভাবতে হচ্ছে। অনেককে তাদের অনভ্যস্ত জায়গায় খেলাতে হচ্ছে বাধ্য হচ্ছি।’’
ইস্টবেঙ্গলের জানুয়ারির আইএসএল সূচি বেশ কঠিন। এর পর খেলতে হবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। ডার্বির পর ইস্টবেঙ্গলের তিন প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া, কেরালা ব্লাস্টার্স এবং অ্যাওয়ে ম্যাচে মুম্বই সিটি। স্বভাবতই চিন্তিত ইস্টবেঙ্গল কোচ। এ ভাবে চললে পয়েন্ট তালিকায় উপরে ওঠার আশা ছেড়ে দিতে হবে বলেই মনে করেন ব্রুজ়ো।
ব্রুজ়োর বক্তব্য, মাঝমাঠের একাধিক ফুটবলারের চোট দলের বড় সমস্যা। দলের ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হচ্ছে। খেলা তৈরি করতেও যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনই প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করা যাচ্ছে না সময় মতো। সোমবারের ম্যাচের পর ১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে একাদশ স্থানেই রয়েছে ইস্টবেঙ্গল।