Cristiano Ronaldo

মেসি দ্বৈরথ শেষ হতেই ‘পুরনো বন্ধু’-র সঙ্গে ছবি পোস্ট রোনাল্ডোর

বৃহস্পতিবারের ম্যাচের পর ছবি পোস্ট করলেন রোনাল্ডো। একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, তিনি মেসিকে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন। ক্যাপশনে লিখে দিয়েছেন, মেসি তাঁর পুরনো বন্ধু। দেখা হয়ে ভাল লেগেছে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৪১
বৃহস্পতিবারের ম্যাচে মেসি এবং রোনাল্ডো।

বৃহস্পতিবারের ম্যাচে মেসি এবং রোনাল্ডো। ছবি: রয়টার্স

দীর্ঘ দিন ধরেই এই লড়াই নিয়ে উত্তেজনা জমতে শুরু করেছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে রিয়াধের কিং ফাহাদ স্টেডিয়াম দেখল লিয়োনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর লড়াই। প্রদর্শনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল প্যারিস সঁ জরমঁ এবং রিয়াল অলস্টার্স। সেই ম্যাচে রোনাল্ডো এবং মেসি, দু’জনেই গোল পেলেন। গোলের তালিকায় রয়েছেন কিলিয়ান এমবাপেও। ম্যাচের পর ছবি পোস্ট করলেন রোনাল্ডো। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি মেসিকে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন।

নেহাতই প্রদর্শনী ম্যাচ বলে দু’দলের কাছেই এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। কিন্তু সেই ম্যাচে একই সঙ্গে ফুটবলের চার মহাতারকা হাজির ছিলেন। রিয়াধের দলে ছিলেন রোনাল্ডো। অন্য দিকে, পিএসজি-তে মেসি, নেমার, এমবাপে। চার ফুটবলারকেই তুলে নেওয়া হল এক ঘণ্টা পর। তত ক্ষণে নেমার বাদে বাকি সবাই গোল করে ফেলেছেন। ম্যাচে মোট নয় গোল হয়েছে।

Advertisement

ম্যাচের পর চারটি ছবি পোস্ট করেছেন রোনাল্ডো। প্রথমটিতে গোলের পর হাত তুলে তাঁকে পরিচিত ভঙ্গিতে উচ্ছ্বাস করতে দেখা গিয়েছে। দ্বিতীয় ছবিতেও একই ভঙ্গি। সামনে ছিলেন দুই সতীর্থ। তৃতীয় ছবিতে তিনি মেসির সঙ্গে। চতুর্থ ছবিতে সৌদি আরবের এক কর্তার সঙ্গে ছবি পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে রোনাল্ডো লিখেছেন, “মাঠে এবং স্কোরশিটে ফিরতে পেরে খুব খুশি। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়েও খুব ভাল লাগল।” পুরনো বন্ধু বলতে যে মেসি, নেমার, সের্জিয়ো রামোসের কথাই রোনাল্ডো বুঝিয়েছেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

পিএসজি কোচ ক্রিস্টোফ গালচিয়ে ম্যাচের পর বলেছেন, “দুর্দান্ত পরিবেশ ছিল স্টেডিয়ামে। অনেকগুলো গোলও হল। একটা দারুণ স্টেডিয়ামে খুব ভাল সমর্থনের মাঝে খেললাম। একাধিক তারকা ছিল ম্যাচে।”

বৃহস্পতিবারের খেলায় অবশ্য কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়লেন না। ফিফা বিশ্বকাপে যেখানে শেষ করেছিলেন, ঠিক সেখানেই শুরু করলেন মেসি। ৩ মিনিটের মাথায় গোল করে ফেললেন তিনি। বক্সের বাইরে থেকে নেমারের ঠিকানা লেখা পাসে সৌদির জাতীয় দলের গোলরক্ষক আল-ওয়াইসকে আরও এক বার পরাস্ত করলেন মেসি।

খেলায় দাপট বেশি দেখাচ্ছিল পিএসজি। ১৭ মিনিটের মাথায় সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নেমার। দু’মিনিট পরেই দেখা গেল মেসি-এমবাপে যুগলবন্দি। মেসির পাস থেকে গোল করেন এমবাপে। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়।

৩৪ মিনিটের মাথায় সমতা ফেরায় সৌদি। বক্সের মধ্যে পিএসজি গোলরক্ষক নাভাস ফাউল করেন রোনাল্ডোকে। পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনাল্ডো। পেনাল্টি নেওয়ার সময় সেই পুরনো সিএর৭-এর ঝলক দেখা গেল।

চার মিনিট পরে ১০ জনে হয়ে যায় পিএসজি। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন জুয়ান বার্নেট। তাতে অবশ্য চাপে পড়েনি প্যারিসের ক্লাব। ৪৩ মিনিটের মাথায় এমবাপের ক্রস থেকে দ্বিতীয় গোল করেন মারকুইনোস। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে নেমারকে বক্সে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় পিএসজি। কিন্তু নেমারের দুর্বল শট বাঁচিয়ে দেন আল-ওয়াইসি। বিরতির আগে ২-১ এগিয়ে যায় পিএসজি।

প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল করেন রোনাল্ডো। বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পান তিনি। তাঁর শট ওয়ালে লেগে প্রতিহত হলেও ফিরতি বলে সের্জিয়ো র‌্যামোসের ভুল কাজে লাগিয়ে গোল করে যান রোনাল্ডো। কয়েক মিনিট পরেই নিজের ভুল শুধরে নেন র‌্যামোস। এমবাপের ক্রস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন তিনি।

পেন্ডুলামের মতো খেলা দুলছিল। ৫৭ মিনিটের মাথায় আবার সমতা ফেরায় সৌদি অলস্টার। দক্ষিণ কোরিয়ার জাং এ বার গোল করেন। কিন্তু সৌদির ক্লাবের আনন্দ বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ২ মিনিট পরে বক্সের মধ্যে মেসির শটে হাত লাগিয়ে পেনাল্টি দেন সৌদির ডিফেন্ডার। এ বার পেনাল্টি নিতে যান এমবাপে। বিশ্বকাপের ফাইনালে তিনটি পেনাল্টিতেই গোল করেছিলেন তিনি। এ বারও করলেন।

৬০ মিনিটের পরে মেসি, এমবাপে, রোনাল্ডো ও নেমারকে তুলে নেওয়া হয়। বোঝাই যাচ্ছিল, দলের প্রধান ফুটবলারদের নিয়ে বেশি ঝুঁকি নিতে চাননি কোচেরা। ৭৭ মিনিটের মাথায় পিএসজির হয়ে আরও একটি গোল করেন হুগো একিটিকে। খেলার অতিরিক্ত সময়ে সৌদির ক্লাবের হয়ে চার নম্বর গোল করেন ট্যালিস্কা। তাতে অবশ্য পিএসজির জিততে সমস্যা হল না। ১০ জনে প্রায় আধ ঘণ্টা খেলেও ম্যাচ জিতল পিএসজি। সেই সঙ্গে জিতল ফুটবল। ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন হাজার হাজার দর্শক।

আরও পড়ুন
Advertisement