Santosh Trophy

বাড়ি ফিরলেন রবি, বাংলাকে ভারতসেরা করা ফুটবলারকে বরণ করে নিল গোটা গ্রাম

পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা ফিরলেন বীরের সম্মানে। গ্রামের প্রতিবেশীরা বাংলার ফুটবলারকে ফুলের মালা পরিয়ে দিলেন। সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে রবির গোলেই কেরলকে হারিয়ে জিতেছিল বাংলা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:১২
Ravi Hasda

বাড়ি ফেরার পথে রবি হাঁসদা। —নিজস্ব চিত্র।

বাংলাকে ভারতসেরা করে রবিবার গ্রামে ফিরলেন রবি হাঁসদা। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা ফিরলেন বীরের সম্মানে। গ্রামের প্রতিবেশীরা বাংলার ফুটবলারকে ফুলের মালা পরিয়ে দিলেন। সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে রবির গোলেই কেরলকে হারিয়ে জিতেছিল বাংলা।

Advertisement

মঙ্গলকোট থানার মুশারু গ্রামের আদিবাসীপাড়ায় বাড়ি রবির। বাবা সুলতান হাঁসদার স্বপ্ন ছিল ছেলে একদিন বড় ফুটবলার হবে। সকলের মুখ উজ্জ্বল করবে। হৃদ্‌‌রোগের কারণে শেষের দিকে আর জনমজুরি করতে যেতে না পারায় ঋণ নিয়ে একটি টোটো কিনে ভাড়া খাটাতেন সুলতান। কিন্তু ছেলের সাফল্য চোখে দেখে যাওয়া হয়নি বাবার। গত বছর জুন মাসে হৃদ্‌‌রোগে মারা যান তিনি। মা তুলসী হাঁসদা জনমজুরি করে সংসার সামলান। তবুও তুলসীদেবী ছেলেকে কখনও মাঠে কাজ করতে পাঠাননি। রবির অনুশীলনে ঘাটতি চাননি তিনি।

ছেলের সাফল্যে খুশি মা তুলসী। তিনি চান চাকরি পেয়ে ছেলে সংসারের দারিদ্র্য দূর করবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে, রবিদের চাকরি দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সেই ঘোষণা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এক সময় রবির মা এক দিন কাজে না গেলে বাড়িতে হাঁড়ি চড়ত না। তুলসীদেবীর এক ছেলে এবং এক মেয়ে। রবির বোন রাসমণির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সাঁওতা বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি খেলার মাঠ। মুশারু আদিবাসীপাড়া মিলন সংঘ ক্লাব এই মাঠেই ফুটবলচর্চা করেন রবি। ৬-৭ বছর বয়স থেকেই এই মাঠে ফুটবল খেলা শুরু তাঁর। ১২ বছর বয়সে ভাতারে একাদশ অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের ফুটবল কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করে দেওয়া হয় আর্থিক অনটনের মধ্যেই। তখন থেকেই প্রশিক্ষণের শুরু।

রবিবার সাঁওতালি রীতি মেনে রবিকে বরণ করেন গ্রামবাসীরা। ধামসা-মাদল, আদিবাসী রমণীদের নৃত্য দিয়ে বরণ করেন তাঁরা। রবিকে স্বাগত জানাতে শুধু মুশারু গ্রামের বাসিন্দারা নন, আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষজনও হাজির হন। আপ্লুত রবি বলেন, “কল্যাণী থেকেই আমাদের কোচ মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন এ বার চ্যাম্পিয়ন হতেই হবে। প্রতিটি ম্যাচই কঠিন ছিল। তাই কোন ম্যাচই হালকা ভাবে নিইনি আমরা।”

Advertisement
আরও পড়ুন