লিয়োনেল মেসি (বাঁ দিকে) ও এমিলিয়ানো মার্তিনেস। —ফাইল চিত্র
বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে উত্তপ্ত হয়ে উঠল গ্যালারি। আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সঙ্গে মারামারি হয় ব্রাজিলের পুলিশের। এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস। তিনি তেড়ে যান পুলিশের দিকে। তাঁদের মধ্যে এক জনের হাত থেকে লাঠিও কেড়ে নেন। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হয় লিয়োনেল মেসিদের।
ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে খেলার আগেই শুরু হয় গণ্ডগোল। গ্যালারির একটি অংশে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের লাঠি দিয়ে মারছিলেন ব্রাজিলের পুলিশকর্মীরা। তখন গ্যালারির কাছেই ছিলেন মার্তিনেস। হঠাৎ লাফিয়ে গ্যালারিতে উঠে এক পুলিশকর্মীর লাঠি কেড়ে নেন তিনি। সেটা দেখে বাকি পুলিশকর্মীরা তাঁকে আটকান। আর্জেন্টিনার বেশ কয়েক জন ফুটবলার মার্তিনেসকে সেখান থেকে টেনে নিয়ে যান। কিন্তু থামানো যাচ্ছিল না ২০২২ সালের বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষককে। পুলিশের দিকে আঙুল তুলে কিছু একটা বলে যাচ্ছিলেন তিনি। মার্তিনেসকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় সতীর্থদের।
ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই দর্শকাসনে ঝামেলা শুরু হওয়ায় দল নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান মেসি। সেই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “আমরা দেখতে পেয়েছিলাম কী ভাবে পুলিশ আমাদের সমর্থকদের মারছিল। এর আগে কোপা লিবার্তাদোরেসেও (লাতিন আমেরিকার ক্লাবগুলির প্রতিযোগিতা) একই জিনিস দেখেছি। ওরা ম্যাচের থেকে সমর্থকদের মারতেই ব্যস্ত ছিল। সাজঘরে ফিরে যাওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে খুব খারাপ কিছু হতে পারত।”
মেসির সংযোজন, “নিজের পরিবার, ওখানে যে সমর্থকেরা রয়েছে তাদের পরিবারের কথা ভাবা দরকার ছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না ওখানে ঠিক কী হচ্ছে। তবে ম্যাচ খেলার বদলে তখন ওই ঘটনার দিকে আগে নজর দেওয়া দরকার ছিল। তখন ম্যাচের কথা আমাদের মাথায় ছিল না। তবে এই ম্যাচ জেতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই দলকে নিয়ে আমি গর্বিত।”
৩০ মিনিট বন্ধ থাকার পরে শুরু হয় খেলা। নিকোলাস ওটামেন্ডির করা গোলে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের পর ইনস্টাগ্রামে মেসি লিখেছেন, “মারাকানায় দারুণ একটা জয় পেলাম। কিন্তু ব্রাজিলে গিয়ে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মার খাওয়ার আরও একটা ঘটনার জন্যেই এই ম্যাচটা মনে থাকবে। কোনও ভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না। এখনই এ সব বন্ধ করা দরকার।”
বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ইতিহাসে এই প্রথম দেশের মাটিতে হারল ব্রাজিল। ২০০৯-এর পর এই প্রথম যোগ্যতা অর্জন পর্বে দেশের মাটিতে গোল করতে পারল না। টানা তিন ম্যাচে হেরে পয়েন্ট তালিকায় নেমে গিয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। আর্জেন্টিনার থেকে আট পয়েন্ট পিছনে তারা।