মহিলাদের আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই বড় জয়ের উচ্ছ্বাস মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ক্রিকেটারদের। ছবি: বিসিসিআই
শুরুতেই জমে গেল মহিলাদের প্রিমিয়ার লিগ। জমিয়ে দিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর ও কলকাতার সাইকা ইশাক। হরমনপ্রীতের দাপুটে ৬৫ রান এবং সাইকার ৪ উইকেটের সুবাদে প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচেই ২০০ রানের গণ্ডি ছাড়াল মুম্বই। গুজরাত জায়ান্টস অধিনায়ক বেথ মুনি টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও লাভ হল না। মুম্বইয়ের ৫ উইকেটে ২০৭ রানের জবাবে গুজরাতের ইনিংস শেষ হল ৯ উইকেটে ৬৪ রানে। হরমনপ্রীতরা জিতলেন ১৪৩ রানে।
প্রথম থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেন মুম্বইয়ের ব্যাটাররা। যষ্ঠিকা ভাটিয়াকে (১) তৃতীয় ওভারেই আউট করলেও মুম্বইয়ের রান তোলার গতি আটকাতে পারেননি গুজরাতের বোলাররা। মুম্বইয়ের সব ব্যাটারকেই দেখা গেল আগ্রাসী মেজাজে। অপর ওপেনার হেইলি ম্যাথিউজ সুর বেধে দেন। তিনি করেন ৩১ বলে ৪৭ রান। মারেন ৩টি চার এবং ৪টি ছক্কা। ভাল খেললেন তিন নম্বরে নামা সিভার ব্রান্টও। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১৮ বলে ২৩ রানের ইনিংস। ৫টি বাউন্ডারি মারলেন তিনি। দলকে রানের পাহাড়ে ওঠালেন অবশ্য অধিনায়কই। চার নম্বরে নেমে মহিলাদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ইনিংস খেললেন হরমনপ্রীত। মহিলাদের আইপিএলের প্রথম অর্ধশতরান করলেন তিনি। ২২ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর ব্যাট থেকে এল ৩০ বলে ৬৫ রান। হরমনপ্রীত ১৪টি চার দিয়ে সাজালেন নিজের ইনিংসটি। আগ্রাসী ব্যাটিং করলেন পাঁচ নম্বরে নামা অ্যামেলিয়া কেরও। ২৪ বলে ৪৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেললেন তিনি। ৬টি চার এবং ১টি ছয় মেরে অপরাজিত থাকলেন তিনি। মূলত শেষ দিকে তাঁর দাপটেই ২০০ রানের গণ্ডি টপকাল মুম্বই।
বড় রান পেলেন না ভারতীয় দলের আর এক সদস্য। পূজা বস্ত্রকার করলেন ৮ বলে ১৫ রান। ৩টি চার মারলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অ্যামেলিয়ার সঙ্গে উইকেটে ছিলেন ইসি ওং (অপরাজিত ৬)। ব্যাটারদের দাপটে ৫ উইকেটে ২০৭ রানে থামল মুম্বইয়ের ইনিংস। গুজরাতের কোনও বোলারই মুম্বইয়ের ব্যাটারদের দাপট থামাতে পারেননি। তাদের সফলতম বোলার স্নেহ রানা ৪৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন।
জয়ের জন্য ২০৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় গুজরাত। পর পর আউট হয়ে যান সাব্বিনেনি মেঘানা (২), হার্লন দেওল (শূন্য) এবং অ্যাশলে গার্ডনার (শূন্য)। গুজরাতের সমস্যা আরও বাড়ে অধিনায়ক মুনি রান নিতে গিয়ে হাঁটুতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ায়। তিনিও রানের খাতা খুলতে পারেননি। মুনি উঠে যাওয়ার পর ৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে পড়ে যায় গুজরাতের ইনিংস। সেই চাপ থেকে আর মুক্ত হতে পারেনি তারা। দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড (৬) এবং জর্জিয়া ওয়েরহ্যাম (৮)। নিজের পরপর দু’ওভারে এই দু’জনকে ফেরান সাইকা। গুজরাত ২২ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর মুম্বইয়ের জয় ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা।
গুজরাতের পরের ব্যাটাররাও দলের ইনিংসকে ভরসা দিতে পারলেন না। হাতে তেমন উইকেট না থাকায় বেশি ঝুঁকি নিতে পারেননি তাঁরা। রানাও সাজঘরে ফিরলেন মাত্র ১ রান করে। ব্যর্থ তনুজা কানওয়ার (শূন্য), মানসী যোশীও (৬)। কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করলেন শুধু দয়ালান হেমলতা। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন তিনি। যদিও সঙ্গীর অভাবে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। তাঁর ব্যাট থেকে এল ২৩ বলে ২৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। শেষে নামা মোনিকা পটেল করলেন ১০ রান।
প্রথম ম্যাচেই বল হাতে নজর কাড়লেন বাংলার মেয়ে সাইকা ইশাক। ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন তিনি। ইশাকই মহিলাদের আইপিএলের প্রথম ম্যাচের সফলতম বোলার। ভারতের মহিলা ‘এ’ দলের হয়েও খেলেছেন তিনি। ব্রান্ট ৫ রানে ২ উইকেট এবং অ্যামেলিয়া ১২ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। ৭ রান দিয়ে ১ উইকেট ওংয়ের।