আউট হয়ে ফিরছেন জস বাটলার। ছবি: রয়টার্স।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও হেরে গেলেন জস বাটলারেরা। এ বারের বিশ্বকাপে পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হেরে গিয়েছে ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালে ওঠাই এখন কঠিন হয়ে গেল তাদের। কিন্তু এমন পরিস্থিতি কেন হল গত বারের বিশ্বজয়ীদের? কোন কোন কারণে হারছে ইংল্যান্ড?
রানহীন টপ অর্ডার
ইংল্যান্ডের ওপেনারেরা রান পাচ্ছেন না। বাংলাদেশ ম্যাচ বাদ দিয়ে আর কোনও ম্যাচেই রান করতে পারেননি ইংল্যান্ডের প্রথম তিন ব্যাটার। জনি বেয়ারস্টো বাংলাদেশ ম্যাচে ৫২ রান করেছিলেন। আর কোনও ম্যাচে অর্ধশতরান নেই তাঁর। ৪০ রানের গণ্ডিও পার করতে পারেননি বাকি চার ম্যাচে। অন্য ওপেনার দাউইদ মালান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৪০ রান করেছিলেন। কিন্তু বাকি চার ম্যাচ মিলিয়ে তিনি করেছেন ৮০ রান। জো রুটও রান পাচ্ছেন না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিনি ৮২ রান করেছিলেন। বাকি চার ম্যাচ মিলিয়ে তিনি করেছেন ৯৩ রান। শুরুটাই ভাল হচ্ছে না ইংল্যান্ডের।
ভারতের পিচ গোলকধাঁধা
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের বড় সমস্যা হচ্ছে ভারতের পিচ। তাঁরা বুঝতে পারছেন না এই পিচে কী ভাবে খেলবেন। তাই ব্যাটারদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনই সমস্যা হচ্ছে বোলারদেরও। কোন পিচ স্পিনসহায়ক আর কোন পিচে পেস, তা ধরতে পারছেন না বাটলারেরা। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দিল্লিতে তারা মইন আলিকে খেলাননি। অথচ দিল্লির পিচে আফগানিস্তানের স্পিনাররাই শেষ করে দিয়েছিল ইংরেজদের।
বেন স্টোকসকে দলে নেওয়া
বিশ্বকাপের ঠিক আগে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ফিরেছিলেন বেন স্টোকস। কিন্তু এক বছর ৫০ ওভারের ক্রিকেট খেলেননি তিনি। বিশ্বকাপে বল করতে পারবেন না। অথচ একজন অলরাউন্ডারকে দলে নেয় ইংল্যান্ড। দুর্ভাগ্য স্টোকসের অভিজ্ঞতা শুরু থেকে কাজে লাগাতে পারেনি তারা। চোটের কারণে প্রথম তিনটি ম্যাচ খেলতেই পারেননি তিনি। মাঠে ফিরে শুধু ব্যাট করছেন। ফলে ইংল্যান্ড দলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এর থেকে এক জন পুরো সুস্থ ক্রিকেটার খেলালে সুবিধা হতে পারত।
টি-টোয়েন্টি মানসিকতা
ইংল্যান্ডের এই দলের সকলে ব্যাট করতে পারেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটা বিরাট সুবিধা। কিন্তু ৫০ ওভারের ক্রিকেট হঠকারিতার খেলা নয়। এখানে কখনও কখনও ইনিংস গড়তে হয়। সেই লোকের অভাব রয়েছে ইংল্যান্ড দলে। তাই জো রুটের মতো ক্রিকেটার রান না পেলেই ভেঙে পড়ছে মিডল অর্ডার। জস বাটলার, লিয়াম লিভিংস্টোনের মতো ক্রিকেটারেরা ভাল ফিনিশার, কিন্তু প্রতি ম্যাচে রান করবেন এমন ভরসা করা মুশকিল। পেসারদের মধ্যেও অভিজ্ঞতা এবং বৈচিত্র্যের অভাব রয়েছে। দুই স্পিনার আদিল রশিদ এবং মইন আলি কার্যকর হতে পারছেন না। একাধিক বোলার দলে থাকলেও বাটলার হয়তো জফ্রা আর্চারের অভাব বোধ করছেন।
বার বার দল বদল
ইংল্যান্ডের প্রথম একাদশে বার বার বদল হয়েছে। প্রথম ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারতেই পরের ম্যাচ দলে বদল করে ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিতে যায় ইংল্যান্ড। জয়ী দল ধরে রেখেই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নেমেছিল। তাতে বিপাকে পড়ে মাঠ বদলে যাওয়ায়। স্পিন সহায়ক পিচে সে দিন ইংল্যান্ড খেলেছিল চার জন পেসার নিয়ে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হারতেই দলে তিনটি বদল করে ইংল্যান্ড। তাতেও জয় আসেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আবার হারতে হয়। তাই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আবার দলে তিনটি বদল করেন বাটলার। বার বার দল বদলও চাপে ফেলে দিচ্ছে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের।