BGT 2024-25

আকাশ নাকি ফলো-অন বাঁচানোর কথাই ভাবেননি! ফাঁস করে দিলেন হেডকে নিয়ে দলের পরিকল্পনাও

ফলো-অন বাঁচানোর কোনও পরিকল্পনাই ছিল না আকাশের। ব্রিসবেন টেস্টের অন্যতম নায়কের দাবি এমনই। জানিয়েছেন, বুমরার পরামর্শে নানা ভাবে উপকৃত হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৩
picture of Akash Deep

আকাশ দীপ। —ফাইল চিত্র।

ব্রিসবেন টেস্টে বল এবং ব্যাট হাতে সফল হওয়ার পর আরও আত্মবিশ্বাসী বাংলার আকাশ দীপ। মেলবোর্নেও খেলার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। রবিবার অনুশীলনের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন দলের পরিকল্পনার কথা। মেনে নিয়েছেন যশপ্রীত বুমরার পরামর্শে কতটা উপকৃত হচ্ছেন।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দু’টেস্টে খেলার সুযোগ পাননি। তৃতীয় টেস্টে সুযোগ পেয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে দিয়েছেন আকাশ। বল হাতে যেমন রোহিত শর্মাদের ভরসা দিয়েছেন, তেমনই ব্যাট হাতে তাঁর লড়াই ফলো-অনের লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছে দলকে। মেলবোর্ন টেস্টের আগে আরও আত্মবিশ্বাসী আকাশ অবশ্য বলছেন, ফলো-অনের কথা মাথায় রেখে ব্যাট করেননি ব্রিসবেনে।

আকাশ বলেছেন, ‘‘আমরা ব্যাটিং অর্ডারের শেষ দিকে থাকি। লক্ষ্য থাকে ২০, ২৫ বা ৩০ রান যোগ করার। সেটাই অনেক সময় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। দলকে যতটা সম্ভব সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামি। ব্রিসবেনেও সে দিন একই লক্ষ্য ছিল। ফলো-অন বাঁচাতে হবে, এমন কিছু ভাবিনি। শুধু কিছুটা সময় ২২ গজে থাকতে চেয়েছিলাম। ঈশ্বর চেয়েছিলেন বলেই আমরা ফলো-অন বাঁচাতে পেরেছিলাম।’’

ব্রিসবেনের সেই ইনিংস যে তাঁকে আরও আত্মবিশ্বাসী করেছে, তা আকাশ অস্বীকার করেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই রকম পরিস্থিতিতে ম্যাচ বাঁচাতে পারলে গোটা দলের আত্মবিশ্বাসই বৃদ্ধি পায়। আমাদের সাজঘরেও সেই ছবি দেখা গিয়েছিল। ফলো-অন বাঁচানোর মুহূর্তটা সকলে খুব উপভোগ করেছিল। সবাই খুশি হয়েছিল।’’

ব্যাট হাতে তাঁর লড়াই নিয়ে বেশি আলোচনা হলেও, আকাশ মনে রাখছেন তাঁর মূল দায়িত্ব বল হাতে দলকে সাহায্য করা। বাংলার জোরে বোলার বলেছেন, ‘‘প্রথম বার অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে এসেছি। বুমরা ভাই অনেক সাহায্য করছে। আমাকে ছোট ছোট কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো খুবই কাজে লাগছে। কখনও বেশি উত্তেজিত না হতে বলেছে। প্রাথমিক শৃঙ্খলা বজায় রেখে বল করতে বলেছে। কারণ এখানকার পিচ এমনিতেই জোরে বোলারদের সহায়ক। দেশে যে ভাবে বল করি, এখানেও সে ভাবেই করতে বলেছে।’’ দু’দেশের পিচের মধ্যে কী পার্থক্য বুঝছেন? আকাশ

বলেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় বল করা একটু কঠিন। এর আগে শুধু ভারতের মাটিতেই খেলার অভিজ্ঞতা ছিল আমার। দেশের পিচে আমরা জোরে বোলারেরা তেমন সাহায্য পাই না। তাই কিছুটা খাটো লেংথে বল করার চেষ্টা করি। এখানকার উইকেট আমাদের জন্য অনেক কার্যকরী। বিশেষ করে নতুন বলে বেশ সাহায্য পাওয়া যায়। তা ছাড়া ভাল বল করতে পারলে সারা দিনই ব্যাটারদের পরাস্ত করা যায়। অনেক সময় মনে হয়, আর একটু বড় লেংথে বল করতে হয়তো ভাল হত। তবে জোরে বোলার হিসাবে সব সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’’ উদাহরণ হিসাবে আকাশ বলেছেন, ‘‘ব্রিসবেনে যেমন স্টিভ স্মিথকে বেশ কয়েক বার পরাস্ত করেও উইকেট পাইনি। হয়তো ভাগ্য সহায় ছিল না। অনেক সময়ই এ রকম হয়। ভাল বল করেও উইকেট পাওয়া যায় না। এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আমরা শুধু ভাল জায়গায় বল রেখে যেতে পারি।’’

আকাশ আরও বলেছেন, ‘‘একটা পদ্ধতি মেনে চলা দরকার। বিশ্বাস রাখা দরকার। আমি ভাল বল করতে পারি। পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে পারি। তাতে উইকেট না পেলেও বোলিং বেশ উপভোগ করি।’’

বর্ডার-গাওস্কর সিরিজ়ে ভারতীয় দলের অন্যতম প্রধান মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছেন ট্রেভিস হেড। মেলবোর্নে অসি ব্যাটারকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় শিবিরের। এ নিয়ে আকাশ বলেছেন, ‘‘দলের পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়। তা হলে তো অস্ট্রেলিয়া সেই মতো প্রস্তুতি নিয়ে ফেলবে! জোরে বোলার হিসাবে আমরা শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাই। লাইন-লেংথ বজায় রাখা জরুরি। পিচ এবং পরিবেশ দেখে চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরি হবে। ওভার দ্য উইকেট এবং রাউন্ড দ্য উইকেট বল করতে হতে পারে।’’ হেডকে নিয়ে আকাশ বলেন, ‘‘ওর খাটো লেংথের বলে একটা দুর্বলতা রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে হেডকে ২২ গজে থিতু হতে না দেওয়া। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট জায়গায় বল রেখে হেডকে ভুল করতে বাধ্য করার চেষ্টা করব। তা পারলে আমরাও সুযোগ পেতে পারি।’’

আকাশের আশা, এই সফরের পর বোলার হিসাবে আরও উন্নতি করতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়া সফরের অভিজ্ঞতা তাঁর ভবিষ্যৎ ক্রিকেটজীবনের জন্য বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন