অভিভূত: জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে উমরান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
আইপিএলের দ্রুততম পেসার তিনি। ২০২২-’২৩ মরসুমে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে তাঁর ১৫৭ কিমি প্রতি ঘণ্টায় বোলিং আলোড়ন ফেলেছিল ক্রিকেটবিশ্বে। তিনি— উমরান মালিক। তখন খেলতেন সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের হয়ে। জম্মু ও কাশ্মীরের তরুণ পেসার রাতারাতি চর্চায় উঠে আসেন। ভারতীয় দলে সুযোগও পেয়েছিলেন। কিন্তু শুধুমাত্র গতি দিয়েই যে সাফল্য আসে না, তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেই বুঝেছিলেন। উইকেট পেলেও প্রচুর রান দিয়েছিলেন।
ধীরে ধীরে নিজেকে বদলে ফেলেন উমরান। গতি না কমিয়েই লাইন ও লেংথ আরও উন্নত করেছেন। বাড়িয়েছেন বৈচিত্র। আইপিএলের মহানিলাম থেকে ৭৫ লক্ষ টাকায় দেশের দ্রুততম পেসারকে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ইডেনে দর্শকের গর্জন তাঁকে আরও তাতিয়ে দেবে তা মেনে নিচ্ছেন উমরান।
কোমরে চোটের জন্য রঞ্জি ট্রফির প্রথম পর্বে খেলতে পারেননি। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতেও খেলছেন না উমরান। এখনও ১৫ দিন লাগবে চোট ঠিক হতে। জম্মু ও কাশ্মীরের হয়ে বিজয় হজারে ট্রফিতে ফিরবেন। মহানিলাম থেকে কেকেআর যে তাঁকে নিতে পারে, এমন একটা আশা ছিল। কারণ, বোলিং কোচ বি অরুণ তাঁকে পছন্দ করেন, প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। এ বার নাইট শিবিরে ‘অরুণ স্যর’-এর সঙ্গে কাজ করে নিজেকে আরও তীক্ষ্ণ করতে চান উমরান। মঙ্গলবার আনন্দবাজারকে তিনি বলছিলেন, ‘‘কেকেআরের হয়ে খেলার স্বপ্ন ছিল। ছোটবেলা থেকেই আমি শাহরুখ (খান) স্যরের ভক্ত। হায়দরাবাদের হয়ে খেলার সময় দেখাও হয়েছিল। আমার অনেক প্রশংসা করেছিলেন। এই চেহারায় কী ভাবে এত জোরে বল করি, জানতে চেয়েছিলেন। এ বার তাঁর দলের হয়ে খেলব। এটাই সব চেয়ে আনন্দের।’’ যোগ করেন, ‘‘হায়দরাবাদের হয়ে শেষ দু’টি মরসুমে বেশি সুযোগ পাইনি। আশা করছি, কেকেআরে প্রথম একাদশে নিয়মিত সুযোগ পাব। ইডেনের দর্শকদের গর্জন আমাকে আরও তাতিয়ে দেবে।’’
নাইটদের বোলিং কোচ এখন বি অরুণ। উমরানের আশা, কেকেআর বোলিং কোচের সঙ্গে থেকে আরও উন্নত হবেন। বলছিলেন, ‘‘গতির পাশাপাশি বৈচিত্র আরও বাড়িয়েছি। এ বার অরুণ স্যরকে পাশে পাব। আরও অনেক কিছু শিখতে পারব।’’ যোগ করেন, ‘‘গতিই আমার অস্ত্র। তবে ধীরে ধীরে সুইংও রপ্ত করেছি। স্লোয়ার, অফকাটার, লেগকাটারও করছি। অনেক পরিণত উমরানকে দেখা যাবে বলে আশা রাখছি।’’
ভারতীয় দলের নীল নকশায় আর তিনি নেই। তাঁর জায়গা কেড়ে নিয়েছেন মায়াঙ্ক যাদব। আইপিএল-ই তাঁর প্রধান মঞ্চ হতে চলেছে নতুন ভাবে নির্বাচকদের নজর কেড়ে নেওয়ার। ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের আশাও ছাড়েননি। উমরান মনে করছেন, নাইট জার্সিতে ভাল খেললে ভারতীয় দলের দরজা আবারও খুলতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘মায়াঙ্ক ভাল বল করছে, তাই সুযোগ পেয়েছে। ভারতের হয়ে আমিও শুরুটা খারাপ করিনি। চোট-আঘাতে কিছুটা পিছিয়ে পড়ি। কিন্তু হাল ছাড়ছি না।’’ বলতে ভুলছেন না, ‘‘আইপিএল-ই আমাকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়েছিল। আবারও আইপিএলে ভাল বল করে ভারতীয় নির্বাচকদের নজরে উঠে আসতে চাই।’’