Sourav Ganguly

সৌরভ, জয়ের ভাগ্য ঝুলে ছিল আড়াই বছর ধরে! কোন পথে বিসিসিআইয়ের মসনদে থাকলেন তাঁরা

২০২০ সালের এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন বিসিসিআইয়ের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল। মাঝে কোভিড অতিমারির জেরে ব্যাহত হয় আদালতের কাজ। অবশেষে বুধবার সেই মামলার রায় হল।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৫৬
বিসিসিআইয়ের মসনদে আরও তিন বছর সৌরভ-জয়।

বিসিসিআইয়ের মসনদে আরও তিন বছর সৌরভ-জয়। —ফাইল চিত্র

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদে থাকতে পারবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বোর্ড সচিব হিসাবে জয় শাহের মেয়াদও ২০২৫ সাল পর্যন্ত। কয়েক দিন বা কয়েক মাস নয়, প্রায় আড়াই বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টে চলেছে এই মামলা। কখনও মনে হয়েছে, এই বুঝি দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ভারতীয় ক্রিকেটের প্রশাসনিক পদ ছাড়তে হবে সৌরভদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি।

Advertisement

· ২০১৯ সালে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হন সৌরভ। বোর্ডের সচিব হন জয়। তার আগে ২০১৫ সালে সৌরভ বাংলার ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি হয়েছিলেন। অর্থাৎ রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় চার বছর কাটানোর পরে দেশের ক্রিকেট সংস্থায় যান তিনি। ঠিক একই ভাবে গুজরাত ক্রিকেট সংস্থায় চার বছর থাকার পরে বিসিসিআইয়ের সচিব হন জয়।

· লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি এক টানা সর্বোচ্চ ছ’বছর ক্রিকেট প্রশাসনে থাকতে পারবেন। ছ’বছর পূর্ণ হয়ে গেলে তাঁকে তিন বছরের জন্য কুলিং অফ পিরিয়ডে থাকতে হবে।

· লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিসিসিআইয়ে সৌরভ ও জয়ের মেয়াদ ছিল ২০২১ সাল পর্যন্ত। তার পরে দু’জনকেই কুলিং অফ পিরিয়়়ডে যেতে হত।

· ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় একটি প্রস্তাব আনা হয়। সেখানে বলা হয়, লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কুলিং অফ পিরিয়ডে কিছু সংশোধনী আনা হবে। সেই প্রস্তাবে রাজি হন বোর্ডের আধিকারিকরা। তবে সেই প্রস্তাবকে কার্যকর করতে হলে দরকার ছিল সুপ্রিম কোর্টের মান্যতা।

· ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন বিসিসিআইয়ের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল। বোর্ডের তরফে আবেদন করা হয়, কোনও বোর্ডকে ভাল ভাবে চালাতে গেলে প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া উচিত। কিন্তু সৌরভরা সেই সময় পাননি। তাই লোঢা কমিটির সুপারিশে বদলের আবেদন করা হয় বোর্ডের তরফে।

· ২০২০ ও ২০২১ সালে ভারতে কোভিড অতিমারি ছড়িয়ে পড়ায় আদালতের কাজ ব্যহত হয়। ফলে সেই সময় মামলার শুনানি হয়নি। এই সময়ে বোর্ডের দায়িত্ব চালিয়ে যান সৌরভ ও জয়।

· চলতি বছর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, লোঢা কমিটির সুপারিশে ঠিক কী কী বদল চাইছে বোর্ড, সে বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানাতে হবে বোর্ডকে।

· বিসিসিআই জানায়, লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি ক্রিকেট প্রশাসনে এক টানা সর্বোচ্চ ছ’বছর থাকতে পারবেন। সৌরভরা এর আগে চার বছর প্রশাসনে থেকেছেন। কিন্তু সেটা রাজ্য প্রশাসনে। দেশের ক্রিকেট প্রশাসনে তাঁরা দু’বছর সময় পাবেন। দেশের প্রশাসনেও সৌরভরা যাতে ছ’বছর থাকতে পারেন, সেই অনুরোধ করা হয় বোর্ডের তরফে। লোঢা কমিটির সুপারিশে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে মান্যতা দেওয়ারও আবেদন করা হয়।

· মঙ্গলবার এই মামলায় বোর্ডের হয়ে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, বোর্ড সভাপতি ও সচিব হিসাবে মাত্র দু’বছরে কোনও খেলাকে ভাল ভাবে চালানো সম্ভব নয়। তার জন্য প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া উচিত সৌরভদের। দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি হিমা কোহলীর বেঞ্চে আবেদন করেন তাঁরা।

· বিসিসিআইয়ের আবেদনে মান্যতা দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, রাজ্য সংস্থায় ছ’বছর এবং বোর্ডে ছ’বছর দায়িত্বে থাকতে পারবেন এক জন আধিকারিক। অর্থাৎ ১২ বছর দায়িত্ব সামলানোর পর কুলিং অফে যেতে হবে তাঁকে। অর্থাৎ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ২০২৫ সাল পর্যন্ত বোর্ডের দায়িত্বে থাকতে পারবেন সৌরভ। একই নির্দেশ দেওয়া হয় জয়ের জন্যও।

আরও পড়ুন
Advertisement