Tamim Iqbal

তামিমকে দেখতে হাসপাতালে শাকিবের বাবা-মা, ভক্তদের নিজের অনুভূতি লিখে জানালেন ব্যাটার

তামিম ইকবাল কি আবার মাঠে ফিরতে পারবেন? এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ক্রিকেটমহলের। চিকিৎসকেরা আশার কথা জানিয়েছেন। তবে আপাতত সাবধানে থাকতে হবে বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ককে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৭:৩০
Picture of Tamim Iqbal

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

অসুস্থ তামিম ইকবালকে দেখতে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশ্যালাইজ়ড হাসপাতালে গেলেন শাকিব আল হাসানের বাবা মাশরুর রেজা এবং মা শিরিন আক্তার। এখন কয়েক দিন হাসপাতালেই থাকতে হবে তামিমকে। আরও দু’-তিন দিন তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। হাসপাতালে বসেই সমাজমাধ্যমে নিজের অনুভূতির কথা লিখে ভক্তদের আশ্বস্ত করেছেন তামিম।

Advertisement

বন্ধু তামিমের অসুস্থতার খবর পাওয়ার পর সমাজমাধ্যমে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন শাকিব। মঙ্গলবার তামিমকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন শাকিবের বাবা-মা। বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়কের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ এই খবর জানিয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী এক প্রশ্নের উত্তরে মাশরুর বলেছেন, ‘‘তামিম আমার ছেলের মতো নয়, ছেলেই বলতে পারেন। তামিমের বাবা ইকবালভাই আমার খেলার বন্ধু। ছোট বয়স থেকেই তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক। তামিম এখন ভাল রয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ওর জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া তো কিছু করার নেই আমার। সেটাই করছি।’’ শাকিবের সঙ্গে তামিমের কথা হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে মাশরুর বলেছেন, ‘‘এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই।’’

হৃদ্‌রোগের ধাক্কা অনেকটা সামলে উঠেছেন তামিম। স্বাভাবিক ভাবে খেতে পারছেন। কথাও বলছেন। আপাতত তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কয়েকটি পরীক্ষা করা হতে পারে। তাই তামিমকে কয়েক দিন হাসপাতালেই থাকতে হবে। ভক্তদের আশ্বস্ত করে হাসপাতাল থেকেই সমাজমাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন তামিম।

বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার লিখেছেন, ‘‘দু’বছর আগে এই রোজার সময়েই অনুপের কাছে গিয়েছিলাম। সে দিন জানতে পারলাম, অনুপের বাবা চার বছরেও হৃদ্‌যন্ত্রের অস্ত্রোপচার করাতে পারেননি। হৃদয়ের স্পন্দনই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু এই স্পন্দন যে কোনও সময় থেমে যেতে পারে— এই কথাটা আমরা বার বার ভুলে যাই। গতকাল দিন শুরু করার সময় কি জানতাম, আমার কী হবে? ঈশ্বরের আশীর্বাদ এবং সকলের প্রার্থনায় সুস্থ হয়ে উঠছি। আমার সৌভাগ্য বিপদের সময় কিছু অসাধারণ মানুষকে পাশে পেয়েছি। যাঁদের বিচক্ষণতা এবং আপ্রাণ প্রচেষ্টায় সংকট কাটিয়ে ফিরে এসেছি।’’

তামিম আরও লিখেছেন, ‘‘কিছু ঘটনা আমাদের বাস্তবতা মনে করিয়ে দেয়। জানিয়ে দেয়, জীবন কত ছোট। এই ছোট জীবনে আর কিছু করতে না পারি, সবাই যেন একে অপরের বিপদে পাশে থাকতে পারি— এটাই আমার অনুরোধ। আপনাদের সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাই। সবাই আমার এবং আমার পরিবারের জন্য প্রার্থনা করবেন। আপনাদের ভালোবাসা ছাড়া আমি তামিম ইকবাল কিচ্ছু না।’’

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য দফতরের ডিরেক্টর আবু জাফর বলেছেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালে তামিমের ইকোকার্ডিয়োগ্রাফ করা হয়েছে। ওর হৃদ্‌যন্ত্রে কোনও সমস্যা নেই। তবে এটাই প্রকৃত অবস্থা না-ও হতে পারে। যে কোনও সময় হৃদ্‌স্পন্দনজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও সম্ভাবনা খুবই কম। এক শতাংশ বলা যায়। তবে সমস্যা হলে তামিমের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে ও তামিম ইকবাল। আমাদের জাতীয় সম্পদ। আরও ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা হাসপাতালেই পর্যবেক্ষণে থাকা উচিত। কারণ সম্ভাবনা খুব কম হলেও স্টেন্ট বসানোর পর কিছু সমস্যা হতে পারে। যাকে চিকিৎসার ভাষায় থম্ব্রোসিস বলে। যতই হোক এটা একটা শরীর-বহির্ভূত কৃত্রিম বস্তু (ফরেন বডি)। সামান্য একটা ঝুঁকি থাকেই। সব দেখে তার পর তামিমকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।’’

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তামিম এখন ঝুঁকিমুক্ত হলেও তাঁকে যতটা সম্ভব কম কথা বলতে বলা হয়েছে। বিশ্রাম প্রয়োজন তাঁর। এই সময়ে যে কোনও রকম উত্তেজনা নতুন বিপদ ডেকে আনতে পারে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্থিতিশীল হওয়ার পর অন্য কোথাও উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে পারেন। পরবর্তী চিকিৎসার ব্যাপারে তামিমের পরিবার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

তামিমকে আর ক্রিকেট মাঠে দেখা যাবে? এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তরে কেপিজে স্পেশ্যালাইজ়ড হাসপাতালের ডিরেক্টর আবদুল ওয়াদুদ বলেছেন, ‘‘আপাতত বাড়ি ফিরে স্বাভাবিক হাঁটাচলা, কাজকর্ম করতে পারবেন তামিম। তবে কিছু দিন বিশ্রামে থাকতে হবে। মাস তিনেক পর আবার খেলার মাঠে ফিরতে পারেন তিনি।’’ তামিম আবার মাঠে ফিরতে পারবেন— চিকিৎসকদের এই আশ্বাসবার্তাই এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটমহলকে স্বস্তি দিচ্ছে।

Advertisement
আরও পড়ুন