সাজঘরে ফিরেও কেঁদে ফেলেন রোহিত। ফাইল ছবি
বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের হাতে ১০ উইকেটে হারের পর বিধ্বস্ত রোহিত শর্মাকে দেখা গিয়েছিল ডাগআউট বসে চোখের জল মুছতে। সে সময় রাহুল দ্রাবিড় তাঁকে কিছুটা শান্ত করেন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কথা বলতে এসেও রোহিতের গলা ভেঙে যাচ্ছিল। জানা গিয়েছে, ম্যাচের পর সাজঘরে ফিরেও রোহিতকে থামানো যায়নি। তিনি সেখানেও কাঁদতে থাকেন। কিছুতেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না। সতীর্থরা গিয়ে রোহিতকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। তার পরে দ্রাবিড় গিয়ে কিছু ক্ষণ বক্তব্য রাখেন। সব শুনে কিছুটা শান্ত হন রোহিত। তিনি নিজেও গোটা দলের উদ্দেশে ভাষণ দেন।
নিজের বক্তব্যে দ্রাবিড় জানান, গোটা প্রতিযোগিতায় দল ভাল খেলেছে। যে ভাবে কঠোর পরিশ্রম করেছেন ক্রিকেটাররা, তাতে তিনি খুশি। রোহিত প্রথম দিকে কথাই বলতে পারেননি। পরে তিনিও জানান, সতীর্থদের প্রচেষ্টায় তিনি খুশি। দলের কিছু সদস্য জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক কালে কোনও ম্যাচে হারের পর রোহিতকে এতটা ভেঙে পড়তে তাঁরা দেখেননি।
ক্রিকেটাররা ব্যাগ গোছানোর ফাঁকেই দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি বার্তা আসে। ফেরার আগে সবাইকে এক জায়গায় জড়ো হতে বলা হয়। দলের কেউ দেশে ফেরার তোড়জোড় করছিলেন। কেউ নিউজ়িল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এক জায়গায় জড়ো হয়ে দল পরিচালন সমিতি সবাইকে ধন্যবাদ জানায়। বিশেষ করে মহম্মদ সিরাজ এবং শার্দূল ঠাকুরকে, যাঁরা রিজার্ভে থাকলেও নেটে নিজেদের নিংড়ে দিয়েছেন। শেষে প্রত্যেকে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।
ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী ছিলেন রোহিত। অনেকেই ভেবেছিলেন, এ বার তাঁর হাত ধরে আবার বিশ্বকাপ জিতবে ভারত। সেটা হয়নি। রোহিত নিজেও জানতেন, তাঁর কাছে বিশ্বকাপ জেতার এটাই সম্ভবত শেষ সুযোগ। সেখানে গোটা প্রতিযোগিতায় কিছুই করতে পারেননি তিনি। তাই আরও ভেঙে পড়েন।
ম্যাচের পর ডাগআউটে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায় রোহিতকে। তাঁর চোখে জল বোঝা যাচ্ছিল। রোহিতের সামনে বসেছিলেন ঋষভ পন্থ। তিনি রোহিতের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তাতেও শান্ত হননি রোহিত। তাঁকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কতটা হতাশ ও ক্ষুব্ধ তিনি। হার মেনে নিতে পারছিলেন না। রোহিতকে বসে থাকতে দেখে তাঁর কাছে আসেন দ্রাবিড়। রোহিতের পিঠে হাত রাখেন ভারতের কোচ। তাঁকে সান্ত্বনা দেন। বেশ কিছু ক্ষণ দ্রাবিড়ের সঙ্গে কথা বলেন রোহিত। তার পরে কিছুটা শান্ত হন তিনি। কিন্তু ক্যামেরা তাঁর দিকে ধরলেই দেখা যাচ্ছিল, রোহিতের চোখ চিকচিক করছে। হারের হতাশা বার বার ধরা পড়ছিল রোহিতের চোখেমুখে।
ম্যাচের পরে তিনি বলেন, ‘‘ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম ওভারটা ঠিকঠাক হল না। ঠিক জায়গায় বলই রাখতে পারল না। আমাদের পরিকল্পনা ছিল আঁটোসাটো বল করা। ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের মারার জায়গা না দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। উইকেটের দু’পাশের এলাকা নিয়ে সতর্ক ছিলাম আমরা। কারণ এই মাঠে উইকেটের দু’পাশে প্রচুর রান ওঠে। এই ম্যাচেও উঠেছে। ভাল বল করার পরেও ব্যাটাররা রান করলে বলার কিছু থাকে না। কিন্তু আমরা তো ভাল বলই করতে পারিনি।’’
ব্যাটিং নিয়ে তেমন অভিযোগ নেই রোহিতের। বলেছেন, ‘‘এই ফলাফল খুবই হতাশার। মনে হয় আমরা ভালই ব্যাট করেছি। বিশেষ করে ইনিংসের শেষ দিকে আমাদের ব্যাটিং ভাল হয়েছে। আসলে আমরা ভাল বল করতে পারিনি। উইকেট এমনও ছিল না, যে মাত্র ১৬ ওভারেই প্রতিপক্ষ লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে নেমে। বল হাতে কিছুই করতে পারিনি আমরা।’’