২০২৩ সালের প্রতিযোগিতার একটি পোস্টার। —ফাইল চিত্র
টি-টোয়েন্টির নিয়ম মেনে ২০ ওভারে বা ১২০ বলের খেলা নয়। এই ফরম্যাটে ক্রিকেট আরও ছোট। মাত্র ১০০ বলের ম্যাচ। ক্রিকেটের নিয়ম নেমে ৬ বলে এক ওভারের হিসাব নয়। এখানে ওভার ১০ বলের। আবার অর্ধেক ওভারও রয়েছে ‘দ্য হান্ড্রেড’ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায়।
২০১৬ সালে প্রতিযোগিতার পরিকল্পনা
২০২১ সাল থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হলেও তার পরিকল্পনা হয়েছিল আরও পাঁচ বছর আগে। ২০১৬ সালে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড প্রথম এই প্রস্তাব দেয়। ১৮টি প্রথম ডিভিশন কাউন্টি দল, পেশাদার ক্রিকেটারদের সংস্থা ও মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনার পরে ভোটাভুটি হয়। ভোটের ফলাফলে (১৬-৩) এই পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সায় দেওয়া হয়। পরে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের সদস্যদের মধ্যেও ভোটাভুটিতে (৩৮-৩) প্রতিযোগিতার পক্ষেই মত দেওয়া হয়।
এই প্রতিযোগিতা প্রথম মাথা থেকে বেরিয়েছিল ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের তৎকালীন চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সঞ্জয় পটেলের। তাঁর প্রস্তাব গৃহীত হলেও তা বাস্তবায়িত হতে সময় লেগেছিল। কারণ, কোভিড অতিমারি। তার ফলে প্রতিযোগিতা শুরু হতে ২০২১ সাল হয়ে যায়।
ম্যাচের ফরম্যাট
ক্রিকেটের অন্য ফরম্যাটের থেকে এই ফরম্যাট সম্পূর্ণ আলাদা। দু’টি দল ১০০ বলের ইনিংস খেলে। অর্থাৎ, মোট ২০০ বলের খেলা হয়। এই প্রতিযোগিতার ফরম্যাট এ রকম—
· প্রতি ইনিংস ১০০ বলের।
· ১০ বল পরে একটি ওভার হয়। অর্থাৎ, ব্যাটারেরা প্রান্ত বদল করেন।
· এক জন বোলার একটানা ১০ বল করতে পারেন। তিনি চাইলে ৫ বল করেও থেমে যেতে পারেন। তাকে অর্ধেক ওভার বলা হয়। সে ক্ষেত্রে অন্য এক বোলারকে বাকি ৫ বল করতে হয়।
· এক জন বোলার সর্বাধিক ২০ বল করতে পারেন।
· পাওয়ার প্লে ২৫ বলের হয়। এই সময়ের মধ্যে মাত্র দু’জন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারেন।
· নো-বলের জন্য ব্যাটিং দলকে ২ রান করে দেওয়া হয়। সঙ্গে পরের বলটি ফ্রি হিট হয়।
· মন্থর বোলিংয়ের জন্য বোলিং দল শাস্তি পায়। শেষ ওভারে অর্থাৎ, শেষ ১০ বলের জন্য ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে এক জন কম ফিল্ডার রাখতে হয় তাদের।
প্রতিযোগিতার ফরম্যাট
এই প্রতিযোগিতায় আটটি দল খেলে। প্রতিটি দলের পুরুষ ও মহিলাদের দল রয়েছে। প্রতিটি দল আবার আটটি করে ম্যাচ খেলে। চারটি হোম ও চারটি অ্যাওয়ে। তার মধ্যে সাতটি দলের বিরুদ্ধে একটি করে ম্যাচ ছাড়া নিকটবর্তী শহরের দলের বিরুদ্ধে একটি অতিরিক্ত ম্যাচ খেলে তারা। লিগ পর্বে ৩২টি করে মোট ৬৪টি ম্যাচ হয়। লিগ পর্বের পরে যে দল শীর্ষে থাকে সেই দল ফাইনালে ওঠে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা দলের মধ্যে সেমিফাইনাল খেলা হয়। সেখান থেকে একটি দল ফাইনালে ওঠে।
এক দিনে দুই প্রতিপক্ষের পুরুষ ও মহিলা দলের মধ্যে দু’টি খেলা পর পর হয়। অর্থাৎ, প্রথমে পুরুষদের ম্যাচ হয়। তার পরে ওই মাঠেই মহিলাদের ম্যাচ হয়। একটি টিকিটেই দু’টি খেলা দেখা যায়।
প্রতিযোগিতার দল
এখনও পর্যন্ত যে আটটি দল প্রতিযোগিতায় খেলেছে তারা হল— বার্মিংহ্যাম ফিনিক্স, লন্ডন স্পিরিট, ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিন্যালস, নর্দার্ন সুপারচার্জার্স, ওভাল ইনভিন্সিবলস, সাদার্ন ব্রেভ, ট্রেন্ট রকেটস ও ওয়েলস ফায়ার।
দলের বিন্যাস
পুরুষ ও মহিলাদের দলে মোট ১৫ জন করে ক্রিকেটার থাকেন। তার মধ্যে চার জন বিদেশি নেওয়া যায়। ড্রাফ্ট পদ্ধতিতে প্লেয়ার কেনা হয়। প্রতিটি দলে ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে খেলা অন্তত এক জন ক্রিকেটারকে রাখতেই হবে।
দু’বছরের চ্যাম্পিয়ন দল
২০২১ সালে পুরুষদের চ্যাম্পিয়ন সাদার্ন ব্রেভ। রানার্স বার্মিংহ্যাম ফিনিক্স। মহিলাদের চ্যাম্পিয়ন ওভাল ইনভিন্সিবলস, রানার্স সাদার্ন ব্রেভ।
২০২২ সালে পুরুষদের চ্যাম্পিয়ন ট্রেন্ট রকেটস। রানার্স ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিন্যালস। মহিলাদের চ্যাম্পিয়ন ওভাল ইনভিন্সিবলস, রানার্স সাদার্ন ব্রেভ।
২০২৩ সালের ফাইনাল হবে ২৭ অগস্ট।
কোথায় দেখা যায় খেলা
ভারতে সোনির চ্যানেলে দেখা যায় দ্য হান্ড্রেড। এ ছাড়া ফ্যানকোড অ্যাপেও এই প্রতিযোগিতা দেখা যায়। চার বছরের জন্য এই খেলা সম্প্রচারের স্বত্ব নিয়েছে ফ্যানকোড অ্যাপ। স্কাই স্পোর্টসে প্রতিটি খেলা দেখানো হয়। বিবিসি-ও পুরুষদের ১০ ও মহিলাদের ৮টি ম্যাচ দেখায়। আরও কয়েকটি দেশে স্কাই স্পোর্টসের থেকে সম্প্রচার স্বত্ব নিয়ে খেলা দেখানো হয়।