কোহলীর বিশ্রামে অখুশি সৌরভ
অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর থেকে একাধিক বার বিশ্রাম নিতে দেখা গিয়েছে বিরাট কোহলীকে। গত বছর নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর এ বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ টি-টোয়েন্টিতে খেলেননি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়। আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে। কোহলীর সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকেই খুশি নন। সেই তালিকায় রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও।
সরাসরি কোহলীর নাম করে কিছু বলেননি তিনি। কিন্তু বিশ্রাম নেওয়ার প্রসঙ্গে জন্মদিনে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন সৌরভ। বলেছেন, “সারা জীবন আমি একটা জিনিসে বিশ্বাস করে এসেছি। যত বেশি খেলব, তত ভাল ছন্দে থাকব এবং ফিট হয়ে উঠব। এই পর্যায়ে বেশি ম্যাচ খেলা দরকার। বেশি ম্যাচ খেললে শরীরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।”
ঘন ঘন জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব বদলও পছন্দ নয় সৌরভের। তাঁর মতে, এতে ছন্দ নষ্ট হয়। বলেছেন, “অল্প সময়ে সাত অধিনায়কের ভাবনা মোটেই আদর্শ নয়। তবে কিছু কারণেই এটা করতে হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় রোহিতের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই চোট পেয়ে গেল। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে আবার রাহুল চোট পেল। ইংল্যান্ডে রোহিত কোভিডে আক্রান্ত হল। এ সব ক্ষেত্রে কাউকে দোষারোপ করা যায় না।”
আইপিএলের কারণেই কি ক্রিকেটারদের উপরে অতিরিক্ত চাপ হয়ে যাচ্ছে? একেবারেই মানতে চাইলেন না সৌরভ। বলেছেন, “আইপিএল ২০০৮ থেকে শুরু হয়েছে। তার আগে আমরা কত ক্রিকেট খেলেছি দেখে নিন। দেখবেন, খুব বেশি ক্রিকেটের পরিমাণ বাড়েনি। তখন আমরা প্রচুর এক দিনের ম্যাচ খেলতাম। আন্তর্জাতিক ম্যাচের দিনের নিরিখে সংখ্যাটা খুব একটা হেরফের হয়নি।”
বরং সৌরভ মনে করেন, আইপিএলের কারণে আগামী আরও অনেক প্রতিভা উঠে আসবে। বলেছেন, “আইপিএল থেকে ভাল ভাল ক্রিকেটার উঠে আসার পরিমাণ আগামী দিনে আরও অনেক বাড়বে। আমাদের দেশে কত প্রতিভা ছড়িয়ে রয়েছে সেটা আইপিএল দেখিয়ে দিয়েছে। সাদা এবং লাল বলের দলের দিকে চোখ রাখলেই বোঝা যাবে কত ক্রিকেটার উঠে এসেছে।”
সাক্ষাৎকারে সৌরভ কথা বলেছেন প্রশাসক এবং ক্রিকেটজীবন নিয়েও। বিসিসিআই সভাপতি পদে তিন বছর কাটিয়ে ফেললেন। যে ভাবে সব দিক থেকে সমর্থন পেয়েছেন, তাতে আপ্লুত সৌরভ। বলেছেন, “কোভিডের সময়ে পর পর দু’বছর আইপিএল আয়োজন করলাম। মেয়েদের ক্রিকেট এবং ঘরোয়া ক্রিকেটও হয়েছে নাগাড়ে। বিসিসিআইয়ে আসার আগে সিএবি-তে কয়েক বছর কাটিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতাও খুব কাজে দিয়েছে। তবে এই চ্যালেঞ্জ অন্য রকম।”
২০০৮ সালে ছন্দে থাকার সময়েই অবসর নিয়েছিলেন। খুব তাড়াতাড়ি অবসর নিতে হল বলে আক্ষেপ রয়েছে? সৌরভের সপাটে উত্তর, “জীবনে কখনও কোনও ব্যাপারে আক্ষেপ নেই। সে বার অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দারুণ খেলেছিলাম। তার পর অবসর নিতেও পারতাম। ২০০৭-এ এক দিনের ক্রিকেট দল থেকে বাদ দেওয়ার সময় ১২৫০ রান করেছিলাম। ১২টি অর্ধশতরান ছিল। তবে এখন ও সব নিয়ে ভেবে লাভ নেই।”
গ্রেগ চ্যাপেল অধ্যায় সবারই জানা। তবে সৌরভ বিশ্বাস করেন না যে কোনও বাহ্যিক শক্তি তাঁর ক্রিকেটজীবন শেষ করে দিয়েছে। বলেছেন, “জীবনে একটা জিনিস শিখেছি, কেউ আপনার কেরিয়ার শেষ করতে পারে না। দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস থাকলে নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই তৈরি করা যায়।”