নায়ক: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মারমুখী সল্ট। ৪১ বলে ৮৮।
জস বাটলার বিশ্রামে আছেন বলেই ইংল্যান্ডের হয়ে ওপেন করছেন ফিলিপ সল্ট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুক্রবার লাহোরে ষষ্ঠ টি-টোয়েন্টিতে ১৭০ রান তাড়া করতে নেমে ৪১ বলে ৮৮ রানে অপরাজিত থেকে ইংল্যান্ডকে জিতিয়ে সেই সল্ট-ই নায়ক! এই জয় শেষ ম্যাচ পর্যন্ত সিরিজ় ৩-৩ করতে সাহায্য করেছে। না হলে শুক্রবারই পাকিস্তান ছিনিয়ে নিত টি-টোয়েন্টি সিরিজ়।
শেষ কয়েকটি ম্যাচে ইংল্যান্ডের ওপেনার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন সল্ট। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, তাঁর এই বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের নেপথ্যের রহস্য কী? সল্ট ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার হলেও ছ’বছর কাটিয়েছেন বার্বেডোজ়ে। সেখানেই ফুটবলার থেকে তাঁর ক্রিকেটার হয়ে ওঠা। একটি স্কুলে ক্রিকেট নিয়ে বিশেষ কোর্সও করেন সল্ট। সেখানেই শুরু হয় তাঁর ক্রিকেট-যাত্রা। মাত্র ৯ বছর বয়সে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে উড়ে যান সল্ট। তাঁর বাবার ব্যবসার কাজে সেখানে যেতে হয়েছিল তাঁকে। তাই সল্টের ব্যাটিংয়ের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ক্যারিবিয়ান ঘরানার ছোঁয়া।
ইংল্যান্ডের নতুন তারকা বলেছেন, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজে ক্রিকেট শিখতে পেরে আমি ভাগ্যবান। ওরা প্রচণ্ড আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করে। আমিও ওদের মতোই ব্যাট করতে চাইতাম। বার্বেডোজ়ে যখন ছিলাম, তখন ম্যাচে এ রকম ক্রিকেটই খেলতে হত। সেখান থেকেই এমন আগ্রাসী ব্যাটিং করা শুরু হয়।’’
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুক্রবারের ম্যাচে ১৩টি চার ও তিনটি ছয় মারেন সল্ট। মাত্র ১৪.২ ওভারে ১৭০ রান তুলে দেয় ইংল্যান্ড। বাটলাররা না খেললেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রীতিমতো টক্কর দিচ্ছে ইংল্যান্ড। সিরিজ়ও নিশ্চিত হবে আজ, রবিবার শেষ ম্যাচে। পাকিস্তানকে হারানোর পরে ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে এসে সল্ট বলেছেন, ‘‘আমার জীবনের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি ইনিংস খেললাম। সিরিজ়ে সমতা ফেরানোর জন্য এ রকম ইনিংস উপহার দিতে পেরে আমি তৃপ্ত।’’ যোগ করেছেন, ‘‘ইনিংসের শুরুর দিকে খেলা সহজ নয়। সেই সময় বল সুইং করে। পিচ থেকেও সাহায্য পায় বোলারেরা। কয়েকটি ম্যাচে রান না পেলেও দল আমার উপর থেকে আস্থা হারায়নি। বরং সাহস জুগিয়েছে ভাল ইনিংস খেলার।’’ সল্ট জানতেন, তাঁর থেকে কী চাইছে দল। বলেছেন, ‘‘শুরু থেকেই আক্রমণ করা আমার কাজ। পাওয়ার-প্লে কাজে লাগানোই একজন ওপেনারের মূল দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’
ইংল্যান্ড অধিনায়ক মইন আলিও প্রশংসা করেছেন সল্টের। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যে ভঙ্গিতে ব্যাট করেছি, তাতে খুশি না হয়ে উপায় নেই। ১৭০ রান চার পাঁচ ওভার বাকি থাকতে তাড়া করা খুবই কঠিন। পাকিস্তানের মতো বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে তো আরওই সহজ নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আমরা আশাবাদী।’’
সল্টকে নিয়ে মইন বললেন, ‘‘অসাধারণ ওপেনার। বাটলার না খেললেও ওর পরিবর্ত হিসেবে সল্টকে পেয়ে আমরা উপকৃত। ওর হাতে প্রচুর শট রয়েছে। উইকেটের যে কোনও প্রান্তে বল পাঠাতে পারে। আমি মনে করি ইংল্যান্ডের ভবিষ্যতের সম্পদ হয়ে উঠবে সল্ট।’’ পরের ম্যাচই সিরিজ় নির্ণায়ক। যা নিয়ে মইনের মন্তব্য, ‘‘আশা করছি, রবিবারের ম্যাচেও ভাল কিছু করে দেখাবে দল। বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজ় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল।’’