এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিকে তাকিয়ে এসিসিও। ছবি: টুইটার।
এশিয়া কাপ নিয়ে বড় আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। আসন্ন এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান খেলা না হলে সমস্যা হতে পারে টেলিভিশনের সম্প্রচার চুক্তি নিয়ে। সংশ্লিষ্ট চ্যানেল কর্তৃপক্ষও কড়া বার্তা দিয়েছেন এসিসিকে।
এশিয়া কাপ পূর্বনির্ধারিত স্থান পাকিস্তানেই হলে দল না পাঠানোর কথা বলেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহ। আবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্ব হারাতে নারাজ। অন্য কোনও দেশে প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রস্তাবও তারা মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। দু’দেশই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের উপর সমানে চাপ তৈরি করছে। প্রতিযোগিতা কোথায় কী ভাবে আয়োজন করা হবে, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল।
এই অবস্থায় চাপ তৈরি করছে সম্প্রচারের স্বত্ব পাওয়া টেলিভিশন চ্যানেলও। স্বত্ব বিক্রির সময় এসিসি ম্যাচের যে তালিকা দিয়েছিল, তাতে বহুদলীয় প্রতিযোগিতায় কমপক্ষে দু’টি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের কথা উল্লেখ ছিল। সে ভাবেই চুক্তি হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না হলে সেই চুক্তিভঙ্গ হবে।
একাধিক ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হবে ধরে নিয়েই সম্প্রচারকারী চ্যানেল কথা বলেছে বিজ্ঞাপনদাতাদের সঙ্গেও। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না হলে বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলকে। চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনে সেই ক্ষতির দায় তারা চাপিয়ে দিতে পারে এসিসির ঘা়ড়ে। সম্প্রচারকারী চ্যানেলের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের খেলা না হলে আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমরা চুক্তি অনুযায়ী ম্যাচ চাই। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না হলে এই চুক্তির কোনও অর্থই হয় না।’’ ফাইনালের আগে ভারত-পাকিস্তানের দু’টি ম্যাচ চায় সম্প্রচারকারী চ্যানেল। যেমন ২০২২ সালের এশিয়া কাপে হয়েছিল।
অন্য কোনও দেশে প্রতিযোগিতা সরাতে রাজি নয় পিসিবি। পাক ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান নাজ়ম শেঠি এসিসির এগজ়িকিউটিভ বোর্ডের বৈঠকে বলেছেন, ‘‘প্রতিযোগিতা অন্য দেশে সরিয়ে দেওয়া হলে আমরা মানব না। ক্রিকেটারদের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। ভারতীয় দলের নিরাপত্তাতেও কোনও গাফিলতি থাকবে না।’’
পাকিস্তান অনড় অবস্থান নিলেও আইসিসি এশিয়া কাপ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারে আগামী মার্চ মাসে। সংস্থার পরের এগজ়িকিউটিভ বোর্ড মিটিংয়ে এ নিয়ে আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ভারত খেলতে না গেলে বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে সম্প্রচারকারী চ্যানেল। সেই ক্ষতির ভার আসলে বইতে হবে এসিসিকেই। তাই পাকিস্তানের দাবি এসিসি কতটা মানতে পারবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ইচ্ছা মতোই সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে এসিসিকে। কারণ ভারতকে বাদ দিয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজনের ঝুঁকি এসিসি নেবে না। প্রতিযোগিতা সম্প্রচারের ঝুঁকি নেবে না সংশ্লিষ্ট চ্যানেলও।
সমাধানসূত্র খুঁজতে ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রিকেটকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করছেন এসিসি কর্তারা। না হলে বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে।