শুক্রবার আইপিএলের মিনি নিলামে শাকিবকে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকায় তুলে নেয় কলকাতা। —ফাইল চিত্র
আইপিএলে ন’বছর খেলেছেন শাকিব আল হাসান। এর মধ্যে ট্রফি জয়ের স্বাদ পেয়েছেন দু’বার। সেই দু’বারই কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। নাইটরা চাইবে ২০১৪ ফিরে আসুক পরের বছর। যে বছর শাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দলকে সাফল্য এনে দিয়েছিল।
শুক্রবার আইপিএলের মিনি নিলামে শাকিবকে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকায় তুলে নেয় কলকাতা। শুরুতে অবিক্রিত ছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। শেষ মুহূর্তে তাঁকে কেনে কলকাতা। শাকিবকে দলে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই বছরের ছবি পোস্ট করে নাইটরা। ট্রফি হাতে শাকিবের ছবি আবার দেখতে চাইবে তারা। সেই লক্ষ্যেই এ বছর নাইটদের দলে শাকিব। আইপিএলে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক ন’বছরের মধ্যে সাত বছর খেলেছেন কলকাতার হয়ে। ২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত নাইটদের জার্সি ছিল তাঁর গায়। ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে তিনি খেলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে। ২০২১ সালে আবার নাইটদের দলে ফেরেন শাকিব।
আইপিএলে যে যে বছর শাকিব ভাল খেলেছেন, সেই বছর তাঁর দলও ভাল ফল পেয়েছে। ২০১৪ সালে শাকিব খেলেন ১৩টি ম্যাচ। কলকাতা সে বছর মোট ১৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন। শাকিব ১৩ ম্যাচে করেন ২২৭ রান এবং তুলে নেন ১১টি উইকেট। ব্যাটিং গড় ৩২.৪২, স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৩৪। অন্য কোনও সালেই কলকাতার হয়ে শাকিব সে ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ২০১১ সালে কলকাতা খেলেছিল ১৫টি ম্যাচ। এর মধ্যে শাকিব খেলেছিলেন সাতটি। সেই সাত ম্যাচে শাকিব করেন মাত্র ২৯ রান। উইকেট নিয়েছিলেন ১১টি। পরের বছর আইপিএল জেতে কলকাতা। শাকিব খেলেছিলেন আটটি ম্যাচ। ব্যাট হাতে মাত্র ৯১ রান করলেও বল হাতে তুলে নিয়েছিল ১২টি উইকেট। বোলার শাকিবই তখন কলকাতার অন্যতম স্পিনার।
২০১৩ সালে আইপিএলে খেলেননি শাকিব। ফেরেন ২০১৪ সালে। সেই বছর আবার ট্রফি জেতে কলকাতা। ২০১৫ সালে আইপিএলে শাকিব খেলেছিলেন মাত্র চারটি ম্যাচ। ১৪ ম্যাচ কলকাতা প্লে-অফে উঠতেই পারেনি। শাকিব ওই চার ম্যাচে ৩৬ রান করেন এবং নেন চারটি উইকেট। ২০১৬ সালের আইপিএলে শাকিব ১০টি ম্যাচ খেলেছিলেন। কলকাতা গ্রুপ পর্ব টপকালেও প্লে-অফে একটি ম্যাচ খেলেই বিদায় নেয়। শাকিবের ব্যাটে সে বার রান ছিল না। মাত্র ১১৪ রান করেছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার। নিয়েছিলেন পাঁচটি উইকেট। পরের বছর আইপিএলে একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছিলেন শাকিব। আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকার কারণে খেলতে পারেননি আইপিএলে। ওই একটি ম্যাচে শাকিব করেন ১ রান। কোনও উইকেট নিতে পারেননি।
২০১১ সালের নিলামে শাকিবকে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকায় দলে নেয় কলকাতা। ২০১৪ সালের নিলামে শাকিবের দাম উঠেছিল ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের পর শাকিবকে কলকাতা ছেড়ে দেয়। ২০১৮ সালের নিলামে তাঁকে ২ কোটি টাকা দিয়ে দলে নেয় হায়দরাবাদ। সেই দলের হয়ে ২০১৮ সালে ১৭টি ম্যাচে ২৩৯ রান করেন শাকিব। নেন ১৪টি উইকেট। হায়দরাবাদ লিগ শীর্ষে শেষ করেছিল সে বার। ফাইনালেও উঠেছিল হায়দরাবাদ। কিন্তু মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে হার মানতে হয় শাকিবদের।
Memories we love to recall 🏆 #TATAIPLAuction #IPLAuction #AmiKKR #GalaxyOfKnights pic.twitter.com/Ptj8HF1svS
— KolkataKnightRiders (@KKRiders) December 23, 2022
পরের বছর হায়দরাবাদের হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন শাকিব। সে বার তিনি ন’রান করেন এবং দু’টি উইকেট নেন। ২০২১ সালে আবার কলকাতায় ফিরে আসেন শাকিব। সে বার তাঁকে আটটি ম্যাচে খেলানো হয়। সেই আট ম্যাচে শাকিব ৪৭ রান করেন এবং চার উইকেট। সে বছর কলকাতা আইপিএলের ফাইনালে ওঠে। শাকিব ফাইনালে কোনও রান করতে পারেননি। বল হাতে কোনও উইকেটও নিতে পারেননি। কলকাতাও জিততে পারেনি। চেন্নাই সে বার আইপিএল জিতে নেয়।
কলকাতা চাইবে শাকিব এ বার ফিরে যান তাঁর ২০১৪ সালের ছন্দে। ব্যাটে রান, বল হাতে উইকেট পান তিনি। সেই সঙ্গে কাপ আসুক কলকাতার হাতে। যদিও শাকিবকে সব ম্যাচে পাওয়া নাও যেতে পারে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সিরিজ় চলবে। সেখানে খেললে আইপিএলে শুরুর দিকে খেলতে পারবেন না।