India Vs Bangladesh

হ্যাটট্রিক ফস্কে নয়, অন্য কারণে বেশি দুঃখ পেয়েছেন আকাশ দীপ, ভরসা দিলেন বাংলার কোচ লক্ষ্মী

জীবনের দ্বিতীয় টেস্টেই হ্যাটট্রিকের সামনে ছিলেন বাংলার পেসার আকাশ দীপ। কিন্তু মুস্তাফিকুর রহিম সেটা হতে দেননি। আকাশ যদিও হ্যাটট্রিক হারিয়ে যত না দুঃখ পেয়েছেন, তার থেকে বেশি হতাশ মাত্র ১৭ রানে আউট হয়ে।

Advertisement
শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০৬
Akash Deep with Laxmi Ratan Shukla

আকাশ দীপের সঙ্গে কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। —ফাইল চিত্র।

ভারতের হয়ে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছেন আকাশ দীপ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে সেই ম্যাচেই সুযোগ এসে গিয়েছিল হ্যাটট্রিকের। পর পর দু’বলে জাকির হাসান এবং মোমিনুল হককে আউট করে জীবনের প্রথম টেস্ট হ্যাটট্রিকের সামনে ছিলেন বাংলার পেসার। কিন্তু মুশফিকুর রহিম সেটা হতে দেননি। আকাশ যদিও হ্যাটট্রিক হারিয়ে যত না দুঃখ পেয়েছেন, তার থেকে বেশি হতাশ মাত্র ১৭ রানে আউট হয়ে।

Advertisement

ভারতের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৩৭৬ রানে। তার মধ্যে ১৭ রান আকাশের। ৩০ বলে ১৭ রান করেন তিনি। মারেন চারটি চার। রবীন্দ্র জাডেজা আউট হওয়ার পর আকাশ নেমেছিলেন ব্যাট করতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আকাশ এখনও তেমন পরিচিত নন, কিন্তু বাংলার ক্রিকেটমহল জানে তিনি ব্যাট হাতেও কতটা স্বচ্ছন্দ। আকাশ নিজেও ব্যাট করতে ভালবাসেন। তাই ভারতের হয়ে মাত্র ১৭ রান করে আউট হয়ে যাওয়ায় তিনি হতাশ। ঘনিষ্ঠ মহলে সে কথা স্বীকারও করেছেন আকাশ। আরও রান করতে চেয়েছিলেন। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলার পেসার হ্যাটট্রিক না পাওয়া নিয়ে তেমন দুঃখপ্রকাশ করেননি। বরং বেশি বলছেন ১৭ রান করে আউট হওয়া নিয়ে।

আকাশকে তৈরি করার নেপথ্যে রয়েছেন বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। শেষ দু’বছরে লক্ষ্মীর বিভিন্ন উপদেশে উন্নতি করেছেন আকাশ। জায়গা করে নিয়েছেন ভারতীয় দলে। সেই লক্ষ্মী আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “আকাশকে দীর্ঘ ক্ষণ ব্যাটিং অনুশীলন করিয়েছি। মরসুম শুরুর আগে সিউড়িতে বাংলা দলের যে শিবির হয়েছিল, সেখানেও ব্যাটিং অনুশীলন করেছিল আকাশ। ও ব্যাট হাতেও উন্নতি করতে চায়। বোলার হিসাবে আকাশ কেমন তা সকলেই জানে, কিন্তু ও ব্যাটটাও করতে পারে। যে কোনও দলের জন্যই তাই লোয়ার অর্ডারে ভরসা হয়ে উঠতে পারে আকাশ।”

শুক্রবার আকাশ যে সময় ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তখন ভারত চাইছিল দ্রুত রান বাড়িয়ে নিতে। যে হাসান মাহমুদ ভারতের প্রথম দিকের ব্যাটারদের ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন, তাঁকেই চার মারেন আকাশ। লেগ স্টাম্পে বল পেতেই ফ্লিক করেন তিনি। স্কোয়ার লেগে চার মারেন। সেই ওভারেই আরও একটি চার মারেন কভারে। বুঝিয়ে দেন বল পেলে ড্রাইভ করতেও ভয় নেই তাঁর। বল বুঝে খেলছিলেন আকাশ। সব বলেই চালিয়ে খেলার ভাবনা ছিল না, মারার বল পেলে মারছিলেন। উল্টো দিকে শতরান করা রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ভরসা দিচ্ছিলেন আকাশ। কিন্তু তাসকিন আহমেদের বলে হঠাৎ ব্যাট চালাতে গেলেন। লেংথ বুঝতে পারেননি। ড্রাইভ করতে গিয়ে বল উঠে গেল আকাশে। মিড অফে ক্যাচ ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৭ রান করেই ফিরতে হয় আকাশকে। সেই সময় তাঁর মুখেচোখে হতাশা স্পষ্ট। যা ঘনিষ্ঠ মহলে গোপন করেননি আকাশ।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩২ ম্যাচে ১১৬টি উইকেট নিয়েছেন আকাশ। ব্যাট হাতে রয়েছে ৪৮৬ রান। একটি অর্ধশতরানও রয়েছে। আইপিএলে মাত্র একটি ম্যাচ খেলানো হয়েছিল তাঁকে। বাংলার টি-টোয়েন্টি লিগের সময় টাইফয়েড হয় তাঁর। সেখানেও খেলতে পারেননি। ক্রিকেট থেকে বিরতি নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে ফর্ম হারাতে দেননি লক্ষ্মীরা। আকাশকে মনোবল হারাতে দেয়নি বাংলা দল। আর সেই কারণেই দলীপ ট্রফিতে সুযোগ পেতেই ৯ উইকেট নেন আকাশ। সুযোগ করে নেন ভারতীয় দলে। আর প্রথম একাদশে জায়গা পেতেই ব্যাটে-বলে বুঝিয়ে দেন যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামিদের হাত থেকে ব্যাটন তুলে নিতে তৈরি বাংলার আকাশ।

আরও পড়ুন
Advertisement