Sajana Sajeevan

নারকেল পাতার ব্যাটে শুরু ক্রিকেট খেলা, শেষ বলে ছয় মারা সাজনা পেরিয়েছেন অনেক ঝড়ঝাপটা

ডব্লিউপিএলে প্রথম বার নেমেছিলেন ব্যাট হাতে। দলের জিততে শেষ বলে তখন দরকার পাঁচ রান। অন্য কেউ হলে হয়তো পারতেন না। কিন্তু সাজনা সাজীবন ছোট থেকেই এত ঝড়ঝাপটা সামলে বড় হয়েছেন যে কঠিন সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৪৫
cricket

সাজনা সাজীবন। ছবি: এক্স।

মহিলাদের প্রিমিয়ার লিগে (ডব্লিউপিএল) প্রথম বার নেমেছিলেন ব্যাট হাতে। দলের জিততে শেষ বলে তখন দরকার পাঁচ রান। অন্য কেউ হলে হয়তো পারতেন না। কিন্তু সাজনা সাজীবন ছোট থেকেই এত ঝড়ঝাপটা সামলে বড় হয়েছেন যে কঠিন সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন। অ্যালিস ক্যাপসিকে তাই অনায়াসে লং-অনের উপর দিয়ে ছয় মেরে মুম্বইকে জিতিয়ে দেন সাজনা।

Advertisement

২০১৮ সালে মেয়েদের চ্যালেঞ্জার্স ট্রফিতে সুযোগ পেয়েছিলেন। তখন তাঁর রাজ্য কেরল ডুবে বন্যায়। সাজনার বাড়ির চারপাশেও থই থই জল। বেরোবেন কী করে, আর বেঙ্গালুরু যাবেনই বা কী করে? অবশেষে পুলিশ উদ্ধার করে। কোনও মতে ক্রিকেট কিট এবং কিছু জামাকাপড় নিয়ে নৌকায় ভেসে বেরিয়ে পড়েন।

১৫ লাখ টাকায় তাঁকে গত নিলামে কিনেছে মুম্বই। বাবা অটোরিকশা চালান। মা পঞ্চায়েত সদস্য। ছোটবেলায় ছেলেদের সঙ্গেই খেলতেন। সেই সম্পর্কে সাজনা বলেছেন, “পাঁচ বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করি। তখনও মেয়েদের ক্রিকেট নিয়ে কিছু জানতাম না। শিক্ষক এলসাম্মা মেয়েদের ক্রিকেট সম্পর্কে আমাদের পরিচয় করান। তখন ক্রিকেট ব্যাট ছিল না। তাই নারকেল পাতা দিয়ে তৈরি ব্যাটে খেলতাম। কেরলের হয়ে পেশাদার ক্রিকেট শুরু করার পর প্রথম ক্রিকেট ব্যাগ পাই। আমার পরিবার আর্থিক ভাবে শক্তিশালী নয়। বিভিন্ন জায়গায় খেলে যা পেতাম সেটা দিয়েই সংসার চালাতাম।”

কেরলের পুকোড়ের সরকারি স্কুলে থাকার সময় বাস্কেটবল, ভলিবল, খোখো, লং জাম্প, জ্যাভেলিন, শট পাট ইত্যাদি অনেক খেলাই খেলেছেন সাজনা। কিন্তু ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচয় হয় এলসাম্মার হাত ধরেই। কেরলের মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৯ এবং অনূর্ধ্ব-২৩ দলে সুযোগ পান। কিন্তু যাতায়াতের জন্য কোনও টাকা ছিল না। ধার করে ক্রিকেট খেলতে যেতে হত। জেলার হয়ে খেলার সময় ১৫০ টাকা ভাতা পেতেন। তার পরে টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে। অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যায়ে কেরলকে একটি ম্যাচ জিতিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীরের থেকে উপহার পাওয়া ব্যাট দিয়ে।

মুম্বইয়ের দলে সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে সাজনা বলেছেন, “গত বছর মেয়েদের প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পাইনি। খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। এ বার মুম্বই আমার দলে নেওয়ায় খুব খুশি হই। শিবিরে অনেক সময় কাটিয়েছি। আমার আদর্শ হল হরমনপ্রীত কৌর। ওর থেকে অনেক কিছু শিখেছি।” বাকি ক্রিকেটারদের মতো সাজনারও স্বপ্ন দেশের হয়ে খেলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement