রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে বিরাট কোহলির অফ স্টাম্প ছিটকে গেল। ছবি: এক্স।
অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্যর্থতার পর বাধ্য হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলতে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি। তাঁর প্রত্যাবর্তনের ইনিংস স্থায়ী হল মাত্র ১৫ বল। ৬ রানে বোল্ড হলেন কোহলি। ছিটকে গেল তাঁর অফ স্টাম্প। কোহলির ব্যাটিং দেখার জন্য দিল্লির মাঠে এসেছিলেন বিরাট সংখ্যক দর্শক। কিন্তু মাত্র ১৫ বলেই শেষ তাঁর ইনিংস। কোহলি আউট হতেই অনেকেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে দিল্লি বনাম রেলওয়েজ়ের ম্যাচ। ভোর থেকে লাইন দিয়ে মাঠে ঢুকেছিলেন প্রচুর দর্শক। বিনামূল্যে কোহলিকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন তাঁরা। সেই সুযোগ ছাড়তে চাননি কেউ। কোহলি রঞ্জি খেলায় প্রতিযোগিতার আকর্ষণ বেড়ে গিয়েছিল। সকলের আগ্রহ ছিল এই ম্যাচ নিয়ে। প্রথম দিন ফিল্ডিং করে দিল্লি। ফলে কোহলির ব্যাটিং দেখা যায়নি। শুক্রবার সকালে যশ ঢুল আউট হতেই মাঠে নামেন তিনি। কিন্তু মাত্র ১৫ বলেই শেষ তাঁর রঞ্জি প্রত্যাবর্তনের ইনিংস।
শুক্রবার সকালে ব্যাট করতে নামেন দিল্লির দুই ব্যাটার ঢুল এবং সনৎ সাংওয়ান। কিন্তু গোটা মাঠ অপেক্ষায় ছিল একটি উইকেট পড়ার। কারণ তা হলেই ব্যাট করতে নামবেন কোহলি। আউট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলেও দর্শকদের ইচ্ছাপূরণ হতে দেননি দুই আম্পায়ার।
২৪তম ওভারের পঞ্চম বলে ঢুলকে এলবিডব্লিউ করেন রাহুল শর্মা। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার মাঠ জুড়ে। কারণ কোহলি নামবেন। ঢুল হতাশ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। মানতেই পারছিলেন না তাঁকে আউট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই আউটের সিদ্ধান্ত নিয়ে কারও ভাবার আগ্রহ ছিল না। কারণ কোহলি গ্লাভস পরছেন। ঢুল প্রবল অনিচ্ছা নিয়ে মাঠ ছেড়ে বার হচ্ছেন। কিন্তু সে দিকে কারও নজর নেই। কারণ কোহলি নেমে পড়েছেন। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে তখন ‘কোহলি, কোহলি’ চিৎকার।
প্রথম চার বলে কোনও রান পাননি কোহলি। পঞ্চম বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। সেই বল পয়েন্টের দিকে ঠেলে দিয়ে একটি রান নেন কোহলি। সঙ্গে সঙ্গে আবার চিৎকার। মনে হল কোহলি বোধ হয় ৫০ করে ফেলেছেন। কুণাল যাদবের বলে একটু সমস্যায় পড়েন তিনি। অফ স্টাম্পের বাইরে বল করছিলেন তিনি। কোহলিকে বিট করেন। ব্যাট চালালেও বলের নাগাল পাননি তিনি। কিন্তু বোঝা যাচ্ছিল অফ স্টাম্পের বাইরের বল ছাড়ার খুব ইচ্ছা নেই কোহলির। রঞ্জি খেলতে নামলেও ভুল শোধরাতে খুব একটা আগ্রহ নেই তাঁর। উইকেটটিও দিলেন নিজের ভুলেই।
হিমাংশু সাংওয়ানের বলে বোল্ড হন কোহলি। আউট হওয়ার আগের বলটিতে চার মেরেছিলেন তিনি। ফুল লেংথ বল ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। কোহলি একটু এগিয়ে এসে স্ট্রেট ড্রাইভ মারেন। ওই রকম শক্তিশালী স্ট্রেট ড্রাইভ তাঁকে অনেক দিন মারতে দেখা যায়নি। কিন্তু পরের বলেই শেষ ইনিংস। প্রায় একই রকমের বল করেছিলেন হিমাংশু। এ বারের বলটি স্টাম্পে ছিল। কোহলি গিয়েছিলেন ড্রাইভ করতে। কিন্তু ভুল করলেন আগের বলের মতো এগিয়ে না এসে। জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে কোহলির ব্যাট এবং পায়ের মাঝে ফাঁক তৈরি হয়। সেখান দিয়েই বল ঢুকে ছিটকে দেয় অফ স্টাম্প। ঘুরতে ঘুরতে অফ স্টাম্পটা গিয়ে পড়ে কিছুটা দূরে, যা কোহলির মতো ব্যাটারের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন নয়। আর ফর্মে না থাকা কোহলির জন্য তো আরওই নয়।
কোহলি আউট হতেই দর্শকাসন ফাঁকা হতে শুরু করে। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে রেলওয়েজ় ২৪১ রান তুলেছিল। ঢুল এবং সনৎ ব্যাট করার সময় মনে হচ্ছিল দিল্লি হয়তো সহজেই সেই রানে পৌঁছে যাবে। কিন্তু পর পর উইকেট হারায় তারা। ঢুল, কোহলি এবং সনৎ আউট হয়ে যান মাত্র ১৯ রানের ব্যবধানে। এ বার দায়িত্ব অধিনায়ক আয়ুষ বদোনীর কাঁধে। তিনিই এত দিন দিল্লিকে টানছিলেন। এখনও তাঁকেই টানতে হবে। কোহলি এসে শুধু কিছুটা দর্শক টেনেছিলেন দিল্লির মাঠে। আবার অপেক্ষা দিল্লির দ্বিতীয় ইনিংসের। যদি আরও এক বার কোহলিকে ব্যাট করতে দেখার সুযোগ পান দর্শকেরা।