India vs South Africa 2022

আর একটু হলেই ভেস্তে যাচ্ছিল মঙ্গলবারের ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ, কী ঘটেছিল খেলা শুরুর আগে?

বকেয়া কর আদায়ে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার দফতরে অভিযান ইনদওর পুরসভার। রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন ক্রিকেট সংস্থার। দু’পক্ষের লড়াইয়ে ভেস্তে যেতে পারত খেলা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২২ ২৩:১৭
মঙ্গলবার ম্যাচের আগে হোলকার স্টেডিয়ামে হানা দেন ইনদওর পুরসভার আধিকারিকরা।

মঙ্গলবার ম্যাচের আগে হোলকার স্টেডিয়ামে হানা দেন ইনদওর পুরসভার আধিকারিকরা। ছবি: টুইটার।

আর একটু হলেই ভেস্তে যেতে পারত ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। মঙ্গলবার ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের দফতরে অভিযান চালান ইনদওর পুরসভার আধিকারিকরা। অবিলম্বে বকেয়া কর না মেটালে ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। পাল্টা মুখ্য সচিবের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেন ক্রিকেট কর্তারা।

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সব আয়োজন সম্পূর্ণ। মঙ্গলবার দুপুরে ম্যাচ শুরুর অপেক্ষায় মধ্যপ্রদেশের ক্রিকেট কর্তারা। তখনই মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের দফতরে হানা দেন পুরসভার আধিকারিক এবং কর্মীরা। তল্লাশি শুরু করেন পুরসভার আধিকারিকরা। ক্রিকেট কর্তাদের কাছে পুরসভার কর সংক্রান্ত নথি দেখতে চান তাঁরা। এই ঘটনা ঘিরে হইচই শুরু হয়। উল্লেখ্য, গত শনিবারও পুরসভার পক্ষ থেকে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার দফতরে যান কয়েক জন পুর আধিকারিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার পক্ষে দাবি করা হয়, ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের বিনামূল্যের টিকিট পাওয়ার জন্যই অভিযান চালিয়েছে পুরসভা। তাঁদের কোনও গাফিলতি নেই বলেও দাবি করেন মধ্যপ্রদেশের ক্রিকেট কর্তারা।

Advertisement

তাঁদের সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছে ইনদওর পুরসভা। ডেপুটি কমিশনার লতা অগ্রবাল বলেন, কেউ বিনামূল্যের টিকিট চাইতে যায়নি। মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার বিরুদ্ধে বছরের পর বছর কর না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। লতা বলেছেন, ‘‘কেউ কোনও বিনামূল্যের টিকিট দাবি করেনি। স্টেডিয়ামের অর্ধেক টিকিট পুরসভা কিনে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। চাইলে আমরা সাধারণ মানুষকে বিনা পয়সা খেলা দেখার সুযোগ করে দিতে পারি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমরা দু’মাস ধরে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থাকে বকেয়া কর মিটিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। গত ৩ অক্টোবর শেষ পর্যন্ত ৩২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। তার মধ্যে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে সম্পত্তি কর বাবদ। সেটাও দেওয়া হয়েছে গত ১ অক্টোবর পুরসভার আধিকারিকরা যাওয়ার পর। তার পরেও সব টাকা মেটাননি ওঁরা। দু’বছরের জলের সেস বাবদ ১.৭৫ লক্ষ টাকা এবং জঞ্জাল পরিষ্কার করার সেস বাবদ গত পাঁচ বছরের ১২ হাজার টাকা বাকি ছিল। মঙ্গলবার আমরা আবার যাওয়ার পর সেই টাকা মিটিয়েছে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা।’’

লতা জানিয়েছেন, বিনোদন করের টাকা এখনও বকেয়া রেখেছে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা। ইনদওর পুরসভার ডেপুটি কমিশনার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘প্রতি ক্ষেত্রেই ক্রিকেট কর্তাদের সহজে ম্যাচ আয়োজনের যাবতীয় অনুমতি দেওয়া হয়। অথচ ওঁরা ঠিক মতো করের টাকা মেটান না। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রোড সেফটি সিরিজ়ের ম্যাচ হয়েছে। সেই ম্যাচের বিনোদন কর এখনও পাইনি আমরা। বকেয়া কর মেটানোর জন্য ক্রিকেট কর্তাদের আমরা বহু বার অনুরোধ করেছি। কিন্তু ওঁরা কর্ণপাতই করেন না। কোনও সহযোগিতা করেন না পুরসভার সঙ্গে। সম্পত্তি কর দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ৩১ মার্চ। সেই টাকাও আমরা যাওয়ার পর মেটানো হয়েছে।’’

মঙ্গলবার ম্যাচ শুরুর আগেই ইনদওর পুরসভার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি অভিলাশ খাণ্ডেকর। মুখ্য সচিব আইএস বাইনসকে লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, ‘মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থাকে অবিলম্বে সব বকেয়া কর মিটিয়ে দেওয়ার জন্য প্রবল চাপ দিচ্ছে পুরসভা। নির্দিষ্ট সময়সীমার অনেক আগেই কর মিটিয়ে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বিনামূল্যের টিকিটের অনুরোধ ফিরিয়ে দেওয়ার পরেই পুরসভার পক্ষ থেকে এমন আচরণ করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন
Advertisement