স্টাম্প মাইকে কথা বলছেন কোহলী। ছবি: টুইটার থেকে
রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ডিন এলগার। তার পরেই ভারতীয় দলের একাধিক ক্রিকেটার স্টাম্প মাইকের কাছে গিয়ে ডিআরএস নিয়ে অভিযোগ জানাতে থাকেন। বিরাট কোহলী-সহ ভারতীয় ক্রিকেটারদের অভিযোগ ছিল পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে আউট দেওয়া হয়নি বলে মনে হয় লোকেশ রাহুলদের। তাঁদের আচরণ আবেগের বহিঃপ্রকাশ বলে ঠান্ডা করার চেষ্টা করেন বোলিং কোচ পরশ মামব্রে। কিন্তু তাতে কি ঠান্ডা হবে? শাস্তি হবে না তো কোহলীদের?
দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ২১২ রানের লক্ষ্য রাখে ভারত। ব্যাট করতে নেমে এডেন মার্করামকে হারালেও এলগার এবং কিগান পিটারসেন জুটি গড়তে শুরু করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ২১তম ওভারে অশ্বিনের বল এলগারের পায়ে লাগে। ভারতীয় দল আবেদন করলে মাঠের আম্পায়ার মারিয়াস ইরাসমাস আউটের সিদ্ধান্ত দেন। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন এলগার। সেখানে দেখা যায় বল উইকেটের উপর দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্যাডের যেখানে বল লেগেছিল, সেখান থেকে বল অতটা উঁচুতে কী করে উঠতে পারে তা বুঝতে পারছিলেন না কোহলীরা। তাঁদের চোখে মুখে স্পষ্ট বিরক্তি ছিল।
সেই সময় স্টাম্প মাইকের কাছে গিয়ে কথা বলতে দেখা যায় বিরাট কোহলীদের। ভারত অধিনায়ক বলেন, “দারুণ ডিআরএস, খুব ভাল খেললে।” লোকেশ রাহুল বলেন, “গোটা দেশ খেলছে ১১ জনের বিরুদ্ধে।” কোহলীকে ফের বলতে শোনা যায়, “শুধু বিপক্ষ নয়, নিজের দলের দিকেও দেখো, সব সময় লোককে ধরতে চাইছে।” এক দিকের স্টাম্পে যখন এই ধরনের কথা উঠে আসছে, সেই সময় উল্টো দিকের উইকেটে কথা বলতে শোনা যায় অশ্বিনকে। তাঁর অভিযোগের তির দক্ষিণ আফ্রিকার সম্প্রচারকারী সংস্থার (সুপারস্পোর্ট) বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “অন্য ভাবে জেতার পথ খোঁজা উচিত সুপারস্পোর্টের।” মাঠের আম্পায়ার ইরাসমাসও অবাক হন। তিনি বলেন, “এটা অস্বাভাবিক।”
Well done DRS Well done#SAvsIndia #DRS pic.twitter.com/558CIg6pm3
— Sportsfan Cricket (@sportsfan_cric) January 13, 2022
এমন অভিযোগ তোলার পর কোহলীদের কি শাস্তি হতে পারে? ভারতীয় দলের আচরণ ভাল চোখে দেখছেন না অনেকে। অনেকের মত, কোহলীর শাস্তি হতে পারে। বড় অঙ্কের জরিমানা হতে পারে বলেও মত অনেকের। বাংলার উইকেটরক্ষক শ্রীবৎস গোস্বামী টুইট করে লেখেন, ‘অহেতুক তর্ক। দয়া করে মেনে নিয়ে খেলা শুরু করো।’
অনেকে মনে করিয়ে দিয়েছেন দু’বছর আগের একটি ঘটনা। দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড টেস্টে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে জো রুটকে আউট করে কাগিসো রাবাডা ক্রিজের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে চিৎকার করেছিলেন। এর জন্য এক ম্যাচ নির্বাসিত করা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারকে। সেই আশঙ্কাও ঘুরছে অনেকের মনে। কোহলী, অশ্বিনরা যে ভাবে স্টাম্প মাইকের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন তাতে সেই ভাবনাও উঠে আসছে অনেকের মনে।
ইরাসমাস নিজে অবাক হলেও কোহলীদের অভিযোগ যে মারাত্মক তাতে সন্দেহ নেই। মাঠের বাইরে থেকে ম্যাচকে প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে মামব্রে আসরে নামেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে পাঠানো হয় সাংবাদিক বৈঠকে। কোহলীরা আবেগের বশে এমন করে ফেলেছেন বলে মত মামব্রের। তিনি বলেন, “মাঠে সবাই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেই সময় মানুষ অনেক কথাই বলে ফেলে। এটা খেলা। আমার মনে হয় এর থেকে এগিয়ে যাওয়াই ভাল হবে। সবাই চেষ্টা করছে। কখনও কখনও আবেগ চলে আসে খেলার মধ্যে।”
আবেগের বশে হোক বা অভিযোগ জানানো হোক, ঘটনা ঘটেছে। সকলের সামনে ঘটেছে। এর প্রতিক্রিয়া যে কী হতে পারে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিরিজ নির্ধারক টেস্টে জয়ের জন্য ঝাঁপাচ্ছে দুই দলই। শুক্রবার ভারতের লক্ষ্য আরও আটটি উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকাকে তুলতে হবে ১১১ রান।