সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট প্রস্তুত করে তা পুর কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। —প্রতীকী চিত্র।
শহরের কোন কোন রাস্তায় অপর্যাপ্ত আলো রয়েছে? কোন রাস্তাতেই বা আলো বিকল হয়ে
পড়ে রয়েছে? সেটাই নিয়মিত পরিদর্শন করে নির্দিষ্ট সময় অন্তর রিপোর্ট তৈরির জন্য আলো দফতরের কর্তা-আধিকারিকদের নির্দেশ দিল কলকাতা পুরসভা। সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট প্রস্তুত করে তা পুর কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
শহরের কোথাও কম আলোর সঙ্গে ‘সমঝোতা’ না করার জন্যই পুরসভার এই পদক্ষেপ কিনা, স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। যা সাম্প্রতিক পরিস্থিতির নিরিখে আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ, সম্প্রতি এক সমীক্ষার ভিত্তিতে শ্লথ হওয়ার দৌড়ে ‘সেরার শিরোপা’ জুটেছে শহরের! যাকে নাগরিক জীবনের জন্য স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন না অনেকে। সেখানেই তাঁদের প্রশ্ন, আলো সংক্রান্ত কোনও সমীক্ষায় ‘প্রথম’ হয়ে কি নাগরিক শ্রান্তিতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়বে কলকাতার? সেটা অবশ্য সময় বলবে।
আপাতত পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, পরিদর্শনের কাজ সুষ্ঠু ভাবে চালানোর জন্য নির্দিষ্ট
জ়োন বা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের রস্টার-তালিকা করতে হবে। সেই তালিকায় কবে, কারা (সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা) এলাকা পরিদর্শনে যাবেন, তার উল্লেখ থাকবে। পরিদর্শন ঠিক মতো হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও জ়োনাল এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের। সাপ্তাহিক পরিদর্শন পর্ব শেষ হওয়ার পরে প্রতি সপ্তাহে কোন এলাকায় আলো খারাপ, কোন এলাকায় আলো কম রয়েছে, এমন তথ্য সম্বলিত একটি রিপোর্ট তাঁদের জমা করতে হবে আলো দফতরের ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে। সেই রিপোর্টের নিরিখে মাসিক ভিত্তিতে তৈরি একটি ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ আলো দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল জমা করবেন পুর কমিশনারের কাছে।
ওই ‘স্টেটাস রিপোর্ট’-এর উপরে ভিত্তি করেই শহরের আলো-সমস্যা সমাধানের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হবে। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই সমগ্র প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ শুরু হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
এমনিতে শুধু ত্রিফলা-আলোই নয়, সাধারণ এলইডি আলোও শহরের একাধিক রাস্তায়
অকোজো হয়ে রয়েছে— অতীতে এই অভিযোগ নাগরিকদের একাংশের তরফে পুরসভায় জমা পড়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, এমন নয় যে এই রিপোর্ট প্রথম বার তৈরি করা হচ্ছে। এমনিতে দফতরের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পদস্থ কর্তাদের কাছে বরাবরই প্রতি সপ্তাহে জমা পড়ে।
তা ছাড়া, শহরে ত্রিফলা আলো বসানোর পরবর্তী সময়ে আলো খারাপ হয়ে যাওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়মিত এলাকা পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয় কর্তা-আধিকারিকদের। যদিও তা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে। কিন্তু এই সংক্রান্ত
নির্দেশিকা সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম বলেই জানাচ্ছেন আধিকারিকদের একাংশ। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘দফতরের রিপোর্ট তো প্রায় প্রতিদিনই তৈরি হয়। কিন্তু লিখিত ভাবে, একদম উচ্চ স্তরে মাসিক ভিত্তিতে রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ সাম্প্রতিক সময়ে আসেনি। কর্তৃপক্ষ হয়তো শহরে আলো নিয়ে কোনও সমঝোতা করতে চাইছেন না, তাই এই নির্দেশ।’’