অশ্বিন, শ্রেয়সের ব্যাটে মীরপুরে জয় পেল ভারত। ছবি: টুইটার।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মীরপুর টেস্টে ভারত জিতলেও বেশ কিছু চিন্তা থেকেই গেল রাহুল দ্রাবিড়দের জন্য। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের আগে যা ঢেকে ফেলতে চাইবেন তাঁরা। শেষ ইনিংসে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৪৫ রান। শনিবার ভারত শেষ করেছিল ৪৫ রানে। তাতেই চার ব্যাটার সাজঘরে ফিরে যান আউট হয়ে। রবিবার বাকি কাজটা করতে গিয়েও কালঘাম ছুটল ভারতের।
ক্যাচ ফেলা: তৃতীয় দিনে বিরাট স্লিপে দাঁড়িয়ে একের পর ক্যাচ ফেলেন। লিটন দাসের ক্যাচ ফেলেছিলেন বিরাট। যে লিটন ৭৩ রান করে ভারতের উপর ১৪৫ রানের লক্ষ্য চাপিয়ে দিল। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের এই ক্যাচ ফেলা অবশ্যই চিন্তার কারণ। ফিল্ডিংয়ে উন্নতি করার দিকে মন দেওয়া প্রয়োজন ভারতের। শুধু স্লিপ নয়, শেষ কয়েকটি ম্যাচে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাচ ফেলেছে ভারত। সেই দিকে উন্নতি প্রয়োজন তাদের।
দল নির্বাচন: চট্টগ্রাম ম্যাচের সেরা বোলার কুলদীপ যাদবকে বাদ দিয়ে মীরপুরে নেমেছিল ভারত। বাঁহাতি স্পিনার ভারতকে যেমন চট্টগ্রামে উইকেট এনে দিয়েছিলেন, তেমনই রানও করেছিলেন। তার পরেও বাদ পড়তে হয় তাঁকে। এমন দল নির্বাচনের কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুই পেসার থেকে হঠাৎ মীরপুরে তিন পেসার খেলায় ভারত। জয়দেব উনাদকাট ভাল বল করলেও কুলদীপ থাকলে ফল অন্য রকম হতে পারত বলেও মনে করা হচ্ছে। উল্টো দিকে যখন শাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান এবং তাইজুল ইসলামের মতো স্পিনাররা উইকেট নিয়ে গেলেন, তখন কুলদীপের বাদ যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই।
বিভ্রান্ত অধিনায়ক: চোটের কারণে রোহিত শর্মা নেই। তাঁর বদলে নেতৃত্ব দেন লোকেশ রাহুল। যিনি টস করতে নেমে বলেন, “বাংলাদেশের মতো আমরাও টসে জিতলে আগে ব্যাটই করতাম। তবে আমার কাছে এই উইকেটটা ধাঁধার মতো লাগছে। কোচিং স্টাফ এবং অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের থেকে উপদেশ নিয়েছি। তাতে বুঝেছি এই পিচে ব্যাট করা খুব একটা কঠিন হবে না।” অধিনায়ক নিজেই যদি পিচ বুঝতে না পারেন তা হলে দল নির্বাচনে ভুল হওয়া স্বাভাবিক। এই ভুল ভবিষ্যতে দলকে বিপদে ফেলতে পারে। আগামী দিনে রাহুলকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন ভারতের।
অশ্বিনের ব্যর্থতা: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে নিয়েছিলেন একটি উইকেট। মীরপুরে ছ’টি উইকেট নিলেও দিয়েছেন ১৩৭ রান। যা তাঁর মতো অভিজ্ঞ বোলারের থেকে আশা করা যায় না। দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিনের দিশাহীন বোলিং সুবিধা করে দিয়েছিল বাংলাদেশকে। এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার অশ্বিন, সব থেকে বেশি রানও দিলেন তিনিই। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এমন বোলিং করলে ভুগতে হবে ভারতকে।
রাতপ্রহরী: বিরাট কোহলি ভারতের অধিনায়ক থাকার সময় একটি জিনিস ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটে দেখা যেত না। রাতপ্রহরী হিসাবে কোনও বোলারকে পাঠিয়ে দেওয়া। মীরপুরে সেটাই দেখা গেল। তা-ও আবার বিরাটের জায়গাতেই পাঠানো হল। তৃতীয় দিনের শেষে মহম্মদ সিরাজ জানিয়েছিলেন যে, দলের সিদ্ধান্ত ছিল অক্ষরকে বিরাটের আগে পাঠানো। রাহুল দ্রাবিড়ের প্রশিক্ষণে ভারতীয় ক্রিকেটে আবার ফিরল রাতপ্রহরী। বিরাটের আগে অক্ষরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখনও দিনের খেলা বাকি ছিল প্রায় ১৫ ওভার। উল্টো দিকের ক্রিজে থাকা শুভমন গিল আউট হওয়ার পর ব্যাট করতে নামেন বিরাট। তিনিও আউট হয়ে গেলে শেষ কয়েক ওভার খেলার জন্য পাঠানো হয় উনাদকাটকে। সে দিনের মতো অক্ষর এবং উনাদকাট অপরাজিত ভাবেই ক্রিজ ছাড়েন।