রোহিত শর্মার সঙ্গে ঈশান কিশন। ছবি: পিটিআই।
ক্রিকেটীয় যুদ্ধে ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তান পাল্লা দেবে, এমন দাবি রশিদ খানেরাও করেননি। বুধবার দিল্লিতে ভারত জিতবে তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। শুধু দেখার ছিল যে, আইপিএলে খেলে যাওয়া রশিদদের বিরুদ্ধে রোহিত শর্মার দল কতটা এক পেশে ভাবে জিততে পারে। দিল্লিতে প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তান তুলেছিল ২৭২ রান। ভারত সেই রান তুলল ১৫ ওভার বাকি থাকতে।
দিল্লির ম্যাচে নজর ছিল বিরাট কোহলির দিকে। তাঁর ঘরের মাঠে খেলা। যে মাঠ থেকে তিনি ভারতীয় দলে ঢোকার যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেই মাঠে এখন বিরাটের নামে প্যাভিলিয়ন রয়েছে। কিন্তু বিরাট ব্যাট করতে নামার আগেই ম্যাচ নিজের নামে করে নিলেন রোহিত। ভারত অধিনায়ক ৬৩ বলে শতরান করলেন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। যে খুনে মেজাজে তিনি খেলা শুরু করেছিলেন, তাতে একটা সময় মনে হচ্ছিল আরও কিছুটা রান করলে হয়তো রোহিত দ্বিশতরান করে ফেলবেন। তবে রশিদের গুগলিতে শেষ পর্যন্ত রোহিত ৮৪ বলে ১৩১ রান করে আউট হন। বিরাটের ঘরের মাঠে রোহিতকে উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাল দর্শকেরা।
বুধবার রোহিত টস হেরে যান। তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি। আফগান অধিনায়ক হসমতুল্লা শাহিদি টস জিতে ভারতকে বল করার সুযোগ করে দেন। দিল্লিতে রাতে শিশির পড়ে। যে পিচে বোলারদের জন্য কিছুই নেই, সেখানে শিশির পড়লে সমস্যা বাড়বে। রোহিত তাই আগে বল করবেন বলেই ঠিক করে এসেছিলেন। আফগানিস্তান টস জিতলেও তাই ভারতের অসুবিধা হয়নি। দিল্লির পাটা পিচে প্রথম থেকেই রান করতে শুরু করেছিলেন আফগান ওপেনারেরা। মহম্মদ সিরাজ তাঁর প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে দেন। যশপ্রীত বুমরা প্রথম উইকেট নেন। এর পর হার্দিক পাণ্ড্য এবং শার্দূল ঠাকুর একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ৬৩ রানে ৩ উইকেট চলে গিয়েছিল আফগানিস্তানের। কিন্তু তার পরেই ভারতীয় বোলারদের হঠাৎ ধার কমে গেল। ১২১ রানের জুটি গড়েন হসমতুল্লা এবং আজমাতুল্লা ওমারজাই। তাঁদের উইকেট তুলতেই পারছিল না ভারত। বুমরাদের কঠিন পরীক্ষা নিলেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত সেই জুটি ভাঙেন সহ-অধিনায়ক হার্দিক।
আফগানিস্তানের ইনিংস থামে ২৭২ রানে। হসমতুল্লা ৮০ রান করেন। আজমাতুল্লা করেন ৬২ রান। ভারতের বিরুদ্ধে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে আফগানিস্তান। বুমরা ৪ উইকেট নেন। হার্দিক নেন দু’টি। একটি করে উইকেট নেন শার্দূল এবং কুলদীপ। চিন্তার কারণ হয়ে রইলেন মহম্মদ সিরাজ। তিনি ৯ ওভারে ৭৬ রান দিলেন। কোনও উইকেট নিতে পারেননি। পাকিস্তান ম্যাচের আগে ভাবাবে ভারতকে। যদিও সাজঘরে মহম্মদ শামি রয়েছেন। আইপিএলে আবার তাঁর ঘরের মাঠ আমদাবাদ।
বুধবার ভারতীয় দলে ছিলেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাঁর জায়গায় শার্দূল ঠাকুরকে দলে নেওয়া হয়। দিল্লির পিচে একেবারেই বোলারদের জন্য কিছু ছিল না। স্পিনারদের জন্য আরও নয়। আর আফগান দলের মূল অস্ত্রই স্পিন। রশিদ, মহম্মদ নবি এবং মুজিবুর উল রহমানের হাত ধরেই ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখে আফগানিস্তান। সেই অস্ত্র ভোঁতা হয়ে যায় দিল্লিতে। যা ভারতকে আরও সুবিধা করে দেয়। যদিও রোহিত যে ইনিংস খেললেন তাতে কোনও বোলারের পক্ষেই তাঁকে থামানো কঠিন হয়ে যেত।
ভারতের হয়ে রোহিত ছাড়াও রান পেয়েছেন ঈশান কিশন। ৪৭ রান করেন তিনি। বিরাট অপরাজিত থাকেন ৫৫ রানে। শ্রেয়স করেন করেন ২৫ রান। যে রান করতে আফগানিস্তান ৫০ ওভার নিল সেটা ভারতের ব্যাটারেরা করে দিলেন ৩৫ ওভারে। অস্ট্রেলিয়ার পর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধেও ম্যাচ জিতে নিল ভারত। এ বার সামনে পাকিস্তান। শনিবারের সেই যুদ্ধের দিকেই তাকিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব।