Love story of Chinese Couple

বিচ্ছেদের দু’বছর পর মিলন, সাইকেল নিয়ে সাড়ে চার হাজার কিমি পথ পাড়ি প্রাক্তন স্বামীর!

বিচ্ছেদের দু’বছর পর প্রাক্তন স্ত্রীর দেখা পেতে সাইকেলে প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিলেন চিনা যুবক। ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করে ১০০ দিনের মাথায় ‘লামাভূমি’তে পা রাখেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৩৮
Viral Story Chinese man cycled nearly 4400km over 100 days to reconcile with wife after 2 years

১০০ দিন সাইকেলিংয়ের পর স্ত্রীর সঙ্গে চিনা যুবক ঝাও। ছবি: সংগৃহীত।

বিবাহবিচ্ছেদের দু’বছর পার। সেই প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে পুনর্মিলনের জন্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দিলেন চিনা যুবক। ১০০ দিনের মাথায় অবশেষে কাঙ্ক্ষিত মনের মানুষের দেখা পান তিনি। তাঁর এ হেন কাণ্ডকারখানায় সরগরম সমাজমাধ্যম।

Advertisement

জীবনের রাস্তায় একাধিক বাঁকে পাক খেয়েছে বছর ৪০-এর চিনা যুবক ঝাওয়ের প্রেমকাহিনি। জিয়াংসু প্রদেশের লিয়ানিউঙ্গাংয়ের বাসিন্দা তিনি। সাংহাইয়ে দেখা হওয়ার পর সুন্দরী লি-কে মন দিয়ে ফেলেন ঝাও। ২০০৭ সালে চার হাত এক হয় তাঁদের।

কিন্তু মাত্র ছ’বছরের মাথায় (পড়ুন ২০১৩ সাল) ভেঙে যায় ঝাও-লির সংসার। বেশি দিন অবশ্য আলাদা থাকতে পারেননি তাঁরা। ফের বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করেন দু’জনে। তাঁদের কোল আলো করে আসে এক ছেলে ও মেয়ে।

দুই সন্তানের জন্মের পর ফের লি-ঝাওয়ের সংসারে শুরু হয় অশান্তি। যার নেপথ্যে ব্যক্তিগত সমস্যাকেই দায়ী করেছেন তাঁরা। শেষে আবারও হাঁড়ি আলাদা হয়ে যায় এই চিনা দম্পতির।

প্রেমিক-প্রেমিকার মন যে বড় বিচিত্র! তাই দ্বিতীয় বার ছাড়াছাড়ির পরেও আলাদা থাকতে কষ্ট হচ্ছিল লি-ঝাওয়ের। শেষে স্ত্রীর সঙ্গে পুনর্মিলনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন ওই চিনা যুবক। মনের মানুষকে দু’চোখ ভরে দেখতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। পাড়ি দেন ৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পথ।

ঝগড়া ভুলে লি-র কাছে ফের এক বার ফিরে যাওয়ার বিষয়টি অবশ্য সমাজমাধ্যমে ফলাও করে খোলসা করেছেন ঝাও। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মধ্যে বড় কোনও সমস্যা ছিল, এমনটা নয়। আমরা দু’জনেই খুব একগুঁয়ে। আবেগের বশে কিছু ভুল পদক্ষেপ করে ফেলেছি। যার পরিণতি বার বার বিচ্ছেদ আর পুনর্মিলন।’’

Viral Story Chinese man cycled nearly 4400km over 100 days to reconcile with wife after 2 years

চিনা যুবক ঝাও। ছবি: সংগৃহীত।

ছাড়াছাড়ির পরেও যে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বন্ধ হয়নি, তা স্পষ্ট করেছেন ঝাও। পিছিয়ে নেই লি-ও। হাসতে হাসতে বলেছেন, ‘‘এটা সত্যি কথা যে আমি ওর কাছে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম। এই নিয়ে কথা হলে মজা করে বলি, আমি লাসা যাচ্ছি। সেখানে যদি তুমি আমাকে বাইকে ঘোরাতে পারো, তা হলে ফের একসঙ্গে থাকার বিষয়টি ভাবতে পারি।’’

স্থানীয় সংবাদপত্র ‘ইয়াংতসে ইভিনিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাক্তন স্ত্রীর এই আবদার মেটাতে সঙ্গে সঙ্গেই কোমর বেঁধে নেমে পড়েন ঝাও। চলতি বছরের ২৮ জুলাই দক্ষিণ-পূর্বের শহর নানজিং থেকে যাত্রা শুরু করেন তিনি। অবশেষে শত দিন পেরিয়ে তিব্বতের রাজধানীতে পা রাখেন তিনি। তারিখটা ছিল ২৮ অক্টোবর।

‘লামাভূমি’র এই দীর্ঘযাত্রা পথে দু’বার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন ঝাও। যার প্রথমটি ঘটেছিল পূর্ব চিনের আনহুইতে। দ্বিতীয় বার মধ্য চিনের হুবেই প্রদেশে ইচাংয়ে সাইকেল চালাতে চালাতেই রাস্তায় পড়ে যান তিনি। শুধু তাই নয়, ওই সময়ে এক ফোঁটাও জল ছিল না তাঁর কাছে। আর তাপমাত্রার পারদ চড়েছিল ৪০ ডিগ্রিতে।

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ায় ঝাওকে কিছু দিন হাসপাতালে থাকতে হয়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন স্ত্রী লি। তিনি তাঁকে যাত্রা ওখানেই শেষ করার জন্য পীড়াপীড়ি করেন। কিন্তু ঝাও কথা শোনেননি। লিকে নিয়েই অক্টোবরে লাসায় পা রাখেন তিনি। নিজের দেওয়া কথা রাখার তাগিদে।

লি-র সঙ্গে পুনর্মিলনের পর অবশ্য নতুন করে সংসার শুরু করেননি ঝাও। বর্তমানে সাইকেলে ইউরোপ ও নেপাল ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন তিনি। আর লি ফিরে গিয়েছেন ঝিয়াংশু প্রদেশে নিজের বাড়িতে। নেটাগরিকদের কেউ কেউ তাঁদের এই প্রেমকাহিনির কড়া সমালোচনা করেছেন। অনেকে আবার দৃঢ় মানসিকতার জন্য প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ঝাওকে।

আরও পড়ুন
Advertisement