রবিচন্দ্রন অশ্বিন। —ফাইল চিত্র।
হঠাৎ অবসর ঘোষণা করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ব্রিসবেনে ভারত-অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় টেস্ট শেষে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন তিনি। অশ্বিনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর পিতা রবিচন্দ্রনের দাবি, অপমানিত হয়েই হঠাৎ অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটার। এই দাবির পরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পিতার মন্তব্যের পর তাঁর হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন অশ্বিন।
রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন, অশ্বিন যে অবসর নেবেন তা তাঁরাও আগে থেকে জানতেন না। একেবারে শেষ মুহূর্তে জানতে পারেন। তিনি বলেন, “ওর ঘোষণার ঠিক আগেই আমরা জানতে পারি। অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত ওর। ও যখন মনে করেছে তখন সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি তাতে কিছু বলব না। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেপথ্যে অনেক কারণ আছে। হতে পারে অপমানিত হয়েই এই সিদ্ধান্ত ও নিয়েছে।”
অশ্বিনের পিতার এই মন্তব্য থেকে পরিষ্কার, তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে খেলার সুযোগ বেশি না পাওয়ার ফলেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁর পুত্র। অস্ট্রেলিয়ায় একমাত্র অ্যাডিলেডে খেলেছেন অশ্বিন। বিদেশ সফরে এমনিতেই খুব বেশি হলে এক জন স্পিনার খেলাচ্ছে ভারত। এর পর ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ় রয়েছে। দেশের মাটিতে খেলা নেই। অশ্বিন হয়তো বুঝতে পেরেছেন তিনি নিয়মিত সুযোগ পাবেন না। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই কথা জানিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। কিন্তু রবিচন্দ্রনের কথা থেকে পরিষ্কার, অশ্বিনের মতো বোলারের আরও নিয়মিত সুযোগ পাওয়া উচিত ছিল। সেটা না দিয়ে তাঁকে অপমান করা হয়েছে।
অশ্বিনের অবসরের সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে গিয়েছে তাঁর পরিবারও। কারণ, তারা এই বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানত না। রবিচন্দ্রন বলেন, “১৪-১৫ বছর ধরে ও খেলছে। হঠাৎ করে ওর অবসরের সিদ্ধান্তে আমরা তো অবাক হবই। সকলে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি আমাদের মনে হয়েছে, নিশ্চয়ই অনেক ভেবে অশ্বিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কত দিন আর এই অপমান সহ্য করা যায়?”
রবিচন্দ্রনের এই মন্তব্যে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা কমাতে আসরে নেমেছেন অশ্বিন। তিনি বলেন, “আমার বাবা জানে না সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কী ভাবে কথা বলতে হয়। আমি ভাবতে পারিনি আপনারা এই বিষয়ে আমার বাবার সঙ্গে কথা বলবেন। সকলকে অনুরোধ করছি বাবাকে ক্ষমা করে দিন। বাবাকে একা থাকতে দিন।”
টেস্টে ৫৩৭ উইকেটের মালিক অশ্বিন। অনিল কুম্বলের পরে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক তিনি। পুত্রের কেরিয়ারে খুশি রবিচন্দ্রন। পুত্রকে নিয়ে গর্বিত তিনি। কিন্তু পাশাপাশি মনখারাপও রয়েছে তাঁর। রবিচন্দ্রন বলেন, “ওর সিদ্ধান্ত আমাদের মানতেই হবে। ওর কেরিয়ারে আমরা খুশি। কিন্তু যে ভাবে ও অবসর নিয়েছে তাতে একটু মনখারাপও আছে। আমাদের আশা ছিল আরও কয়েক বছর ও খেলবে।”
অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর দেশে ফিরে এসেছেন অশ্বিন। চেন্নাইয়ে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে তাঁর পরিবার। অশ্বিনও জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেও তাঁর মধ্যে এখনও ক্রিকেট বেঁচে আছে। তবে এর পরে শুধুমাত্র ক্লাব স্তরে খেলবেন তিনি।