কালীঘাট ক্লাবে ঋদ্ধিমান সাহা। —নিজস্ব চিত্র
আইপিএল শেষ হতেই চলে গিয়েছিলেন বেড়াতে। দুবাই থেকে ফিরেছেন মঙ্গলবার। সামনে কোনও প্রতিযোগিতা নেই। তাঁকে তবু ক্রিকেট মাঠ থেকে দূরে রাখা যায়নি। চলে এসেছেন কালীঘাট ক্লাবে। সেখানেই আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি ‘বাংলার’ ঋদ্ধিমান সাহা। রঞ্জিতে বাংলার খেলা নিয়ে বলতে গেলে এখনও যিনি বলেন, ‘আমরা’।
প্রশ্ন: দুবাই কেমন ঘুরলেন?
ঋদ্ধিমান সাহা: খুব ভাল।
প্রশ্ন: রবিবার জামাইষষ্ঠী কেমন খেলেন?
ঋদ্ধিমান: আজ জামাইষষ্ঠী ছিল নাকি?
প্রশ্ন: আপনি তো খেলেন রবিবারই?
ঋদ্ধিমান: এটা বেসরকারি জামাইষষ্ঠী বলতে পারেন। জামাইষষ্ঠীর দিন (৫ জুন) অনুষ্ঠানটা বড় করে হয়নি। তাই রবিবার খাওয়াদাওয়াটা হল।
প্রশ্ন: কী কী খেলেন?
ঋদ্ধিমান: লুচি, মাটন, চিকেন, চিংড়ি আরও অনেক কিছু।
প্রশ্ন: আপনি তো খুব কম কথা বলেন।
ঋদ্ধিমান: কিন্তু আমাকে নিয়েই সব থেকে বেশি বিতর্ক হয়।
প্রশ্ন: সকলে জানতে চায় আপনি কোন রাজ্যের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলবেন?
ঋদ্ধিমান: অনেকগুলো দলের সঙ্গেই কথা চলছে। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমের অনেক রাজ্যের সঙ্গেই কথা চলছে।
প্রশ্ন: কোন কোন রাজ্য?
ঋদ্ধিমান: সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: আপনি তো জানিয়ে দিয়েছেন বাংলার হয়ে খেলবেন না। ছাড়পত্র কবে আনতে যাবেন?
ঋদ্ধিমান: অভিষেক ডালমিয়ার (সিএবি সভাপতি) সঙ্গে আমার শেষ যখন কথা হয়েছে, উনি বলেছিলেন ব্যস্ত আছেন। আগামী সপ্তাহে আমি শিলিগুড়ি যাব। বাড়ি থেকে ফিরে এসে সিএবি-তে যাব ছাড়পত্র আনতে।
প্রশ্ন: বাংলার হয়ে তো খেলবেন না। বাংলার খেলা দেখেছেন?
ঋদ্ধিমান: দু’-চার ওভার দেখেছি।
প্রশ্ন: বাংলা বার বার ট্রফির এত কাছে এসে ফিরে যায় কেন?
ঋদ্ধিমান: এটা কিন্তু খুব ভাল দিক। ধারাবাহিকতা রয়েছে বলেই বাংলা বার বার কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলছে। গোটা মরসুম ভাল না খেললে এটা সম্ভব হয় না। আমরা ট্রফি জয়ের আশে পাশেই আছি।
প্রশ্ন: কিন্তু ট্রফি যে দল জেতে, সকলে তো তাকেই মনে রাখে?
ঋদ্ধিমান: যার শেষ ভাল, তাকেই সবাই মনে রাখে। এটা ঠিক যে জয়ী দলকেই সকলে মনে রাখে। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সেমিফাইনাল বা ফাইনালে যে কারণে হারছি, সেটা খুঁজে বার করে অনুশীলন করা। কী করলে ভাল হবে সেটা আমাদের খুঁজে বার করতে হবে। সেই গণ্ডিটাকে পেরতে হবে।
প্রশ্ন: গুজরাত টাইটান্সের হয়ে আপনি আইপিএল জিতেছেন। সেই দলটার মধ্যে কী এমন ছিল যা ট্রফি এনে দিল?
ঋদ্ধিমান: দলে এমন সব ক্রিকেটার ছিল যাদের বিভিন্ন দল ছেড়ে দিয়েছে বা যারা নিলামে প্রথমে বিক্রি হয়নি। যেমন আমি। এমন ক্রিকেটাররা দলে থাকায় সকলের মধ্যে একটা তাগিদ ছিল নিজেদের প্রমাণ করার। দলে কোনও তারকা ছিল না। তাই সকলে একসঙ্গে খেলেছে। অন্য দলের থেকে সেটাই ফারাক তৈরি করে দিয়েছে। দলে কোনও মনোমালিন্য ছিল না।
প্রশ্ন: ঋদ্ধিমান সাহাকে আরও ক’বছর খেলতে দেখা যাবে?
ঋদ্ধিমান: আমি খেলা শুরু করেছিলাম খেলতে ভাল লাগত বলে। যে দিন মনে হবে খেলতে ইচ্ছা করছে না, সে দিনই ছেড়ে দেব। কাল যদি মনে হয়, কালকেই ছেড়ে দেব।
প্রশ্ন: ভারতীয় দলে ফেরার সুযোগ রয়েছে?
ঋদ্ধিমান: আমাকে তো সরকারি ভাবে ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে কোচ এবং নির্বাচকরা জানিয়ে দিয়েছেন যে আর কোনও দিন দলে নেওয়া হবে না। তাই ভারতীয় দলে ফিরব, এমন আশা আর নেই।
প্রশ্ন: এখন তা হলে ঋদ্ধিমান সাহা কিসের জন্য খেলেন?
ঋদ্ধিমান: সকলেরই লক্ষ্য থাকে ভারতের হয়ে খেলা। সেই সঙ্গে থাকে ভাল লাগা। আমি যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলাম, সেই সময় রাত জেগে খেলা দেখতাম। ভাল লাগা থেকেই সেটা শুরু। এখনও সেই ভাল লাগাটা আছে। যত দিন ভাল লাগবে খেলব। তখন আমি ভারতীয় দলে আছি, না বাংলা দলে আছি, সেটা কোনও ব্যাপার নয়, খেলাটাই আসল।
প্রশ্ন: এখন তা হলে কোনও লক্ষ্য নেই। শুধু আনন্দের জন্যই খেলা?
ঋদ্ধিমান: হ্যাঁ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।