সোনা জেতা হল না হরমনপ্রীতদের। ছবি পিটিআই
কমনওয়েলথ গেমস ক্রিকেটের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেল ভারত। দুর্দান্ত লড়াই করেও শেষ রক্ষা হল না। হরমনপ্রীত কৌরের দল হারল ৯ রানে। অধিনায়ক হরমন নিজে ৬৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেললেন। জেমাইমা রদ্রিগেসও ৩৩ রান করলেন। কিন্তু শেষ দিকে অভিজ্ঞ কোনও ব্যাটার না থাকার ফল ভুগতে হল। অস্ট্রেলিয়ার আট উইকেটে ১৬১ রানের জবাবে ভারত শেষ ১৫২ রানে। সোনা জেতা হল না। রুপোতেই এ বারের মতো সন্তুষ্ট থাকতে হল।
অনেকেরই এই ম্যাচ দেখে মনে পড়ে গিয়েছে ২০১৭ বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা। সে বার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও ভাল খেলে শেষ মুহূর্তে এসে হারতে হয়েছিল ভারতকে। কমনওয়েলথ ক্রিকেটের ফাইনালেও তাঁর ব্যতিক্রম হল না। এ বারই প্রথম কমনওয়েলথে মহিলাদের ক্রিকেট শুরু করা হয়। প্রথম বারই তা জিতে নিল মহিলাদের ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল দল অস্ট্রেলিয়া। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, ২০ ওভারের বিশ্বকাপের পর এ বার কমনওয়েলথেও সোনা জিতল অস্ট্রেলিয়া।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মেগ ল্যানিং। সেই সিদ্ধান্ত শুরুতেই কিছুটা ধাক্কা লাগে। তৃতীয় ওভারেই রেণুকা সিংহের বলে ফিরে যান অ্যালিসা হিলি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে লম্বা জুটি গড়ার দিকে এগোতে থাকেন ল্যানিং এবং বেথ মুনি। দু’জনেই ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হন। গ্রুপের ম্যাচে রেণুকার বলে দু’জনেই আউট হয়েছিলেন। এ দিন বেশ ভাল ভাবেই ভারতীয় বোলারদের সামলে দিলেন তাঁরা। দ্বিতীয় উইকেটে উঠল ৭৪ রান।
রাধা যাদবের থ্রোয়ে ল্যানিং রান আউট ফেরার পর চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। চারে নামা টালিয়া ম্যাকগ্রাও (২) খেলতে পারেননি। তবে উল্টো দিকে মুনি একাই খেলে যান। অর্ধশতরানও করেন। উল্টো দিকে সঙ্গী হিসাবে পান অ্যাশলে গার্ডনারকে। এই গার্ডনারই গ্রুপের ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে হারিয়ে দেন ভারতকে। এ দিন ২৫ রানে ফেরেন। পরের দিকে অস্ট্রেলিয়ার কোনও ব্যাটারই আর দাঁড়াতে পারেনি।
হারলেও ভারতের ফিল্ডারদের প্রশংসা করতে হবে। প্রথমে সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ম্যাকগ্রাকে ফেরালেন রাধা। এর পর বাউন্ডারির ধারে এক হাতে অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে মুনিকে ফেরালেন দীপ্তি শর্মা। এ ছাড়া দু’টি রান আউট তো আছেই। ফিল্ডিং মিস খুঁজেই পাওয়া যাবে না। হরমনপ্রীতদের ফিল্ডিংয়ের জন্যেই লক্ষ্যমাত্রা অনেক কম ছিল।
রান তাড়া করতে ভারতের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান করা স্মৃতি মন্ধানা (৬) দ্বিতীয় ওভারেই ডার্সি ব্রাউনের বলে বোল্ড হয়ে যান। চালিয়ে খেলতে গিয়ে শেফালি বর্মাও (১১) আউট হন। চাপে পড়ে যাওয়া ভারতকে টানতে থাকেন অধিনায়ক হরমনপ্রীত এবং জেমাইমা রদ্রিগেস। সেই মুহূর্তে ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটারকে ধরে খেলতেই হত। সেই কাজটাই করতে থাকেন হরমন এবং জেমাইমা। দু’জনেই মারার বল মারতে থাকেন। কিন্তু ঝুঁকি নেননি।
বিপদের শুরু হল জেমাইমা আউট হওয়ার পর থেকেই। মেগান শুটের বল সুইপ করতে যান জেমাইমা। সোজাসুজি উইকেটে বল লাগে। ফাইনালে নেমে পূজা বস্ত্রকরের অবদান মাত্র ১। অবাক করলেন হরমনপ্রীতও। ক্রিজে জমে গিয়েছেন, এমন অবস্থায় স্পিনার অ্যাশলে গার্ডনারকে সুইপ করতে গেলেন। বল জমা পড়ল উইকেটকিপারের হাতে।
একমাত্র আশা-ভরসা ছিলেন দীপ্তি। দু’টি চার মেরে আশা জাগিয়েছিলেন। শুটের বলে তিনি এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতেই ভারতের আশা শেষ হয়ে যায়।