গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার দৌড়ে গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে ছিলেন আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার ডব্লিউভি রমন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটি (সিএসি) দু’জনেরই সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। ভারতের মহিলা দলের প্রাক্তন কোচকে কী ভাবে পিছনে ফেললেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন মেন্টর? জানিয়েছেন সিএসির অন্যতম সদস্য যতীন পরাঞ্জপে।
মঙ্গলবার রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের নতুন কোচ হিসাবে গম্ভীরের নাম ঘোষণা করেছেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। তার পর গম্ভীরকে বেছে নেওয়ার কারণ নিয়ে মুখ খুলেছেন পরাঞ্জপে। তিনি জানিয়েছেন, একাধিক কারণে গম্ভীরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ, আধুনিক ক্রিকেট সম্পর্কে ধারণা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মতো একাধিক ক্ষেত্রে রমনকে টক্কর দিয়েছেন গম্ভীর। সঙ্গে রয়েছে এখনকার ক্রিকেটারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক। ২০০৭ এবং ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতাও গম্ভীরের সঙ্গে গিয়েছে।
পরাঞ্জপে বলেছেন, ‘‘এমন এক জনকে আমরা কোচ হিসাবে বেছে নিতে চেয়েছিলাম, যাঁকে ক্রিকেটারেরা সম্মান করবে। এটা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অতীত রেকর্ডের উপর। গম্ভীর তেমনই এক জন প্রাক্তন ক্রিকেটার। ও সব সময় জুনিয়র ক্রিকেটারদের কাছে সম্মান পেয়েছে। খেলোয়াড়জীবনে বার বার বড় ম্যাচে পারফর্ম করেছে। ২০০৭ এবং ২০১১ সালের বিশ্বকাপের কথা সকলের মনে রয়েছে। এই দুই প্রতিযোগিতায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস রয়েছে ওর। গম্ভীরকে কোচ করার অন্যতম প্রধান কারণ এটা। এ ছাড়াও গম্ভীরের মতো দেশভক্ত খুব কম হয়। দলের স্বার্থকে সব সময় অগ্রাধিকার দেয়। এই তিনটি বিষয় সিএসির সদস্যদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে।’’
কোচ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতীত রেকর্ডকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এমন নয়। ভবিষ্যৎও অনুমান করার চেষ্টা করেছেন সিএসির সদস্যেরা। পরাঞ্জপে বলেছেন, ‘‘এক জন কোচের দক্ষতার অন্যতম জায়গা হল ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। ২০২৮ সাল পর্যন্ত ভারতীয় দলের সূচি পরিষ্কার। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম বা এফটিপি দেখলে সকলে বুঝতে পারবেন। ক’টা টেস্ট, ক’টা এক দিনের ম্যাচ বা ক’টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে হবে, সব কিছুই পরিষ্কার। যিনিই কোচ হোন, তাঁর পক্ষে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা এবং সেই মতো দলকে প্রস্তুত করা কঠিন নয়। আমরা বুঝে নিতে চেয়েছিলাম, কার পরিকল্পনা কেমন। কোন ধরনের ক্রিকেটের জন্য কোন ক্রিকেটারদের কথা তাঁরা ভাবছেন। ভারতীয় দলে সুযোগ পেতে পারে, এমন তরুণ ক্রিকেটারদের সম্পর্কে কার কেমন ধারণা, তা-ও বুঝতে চেয়েছি। চলতি বছরের শেষে আমরা অস্ট্রেলিয়া সফরে যাব। আগামী বছর ইংল্যান্ড সফর রয়েছে। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ সফর নিয়ে আবেদনকারীদের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
গম্ভীর, রমনদের ঘরোয়া ক্রিকেট সম্পর্কে জ্ঞানও যাচাই করেছেন সিএসির সদস্যেরা। পরাঞ্জপে বলেছেন, ‘‘ঘরোয়া ক্রিকেটে উঠতি প্রতিভাদের সম্পর্কে ওদের জ্ঞান কতটা, সেটাও আমরা দেখেছি। না হলে কোচ সেরা দল কী ভাবে তৈরি করবেন। প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের কী ভাবে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছিল।’’
পরাঞ্জপের দাবি অনুযায়ী, রমনকে প্রায় সব ক্ষেত্রেই পিছনে ফেলে দিয়েছেন গম্ভীর। লখনউ সুপার জায়ান্টস এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর হিসাবে সাফল্যও তাঁকে অনেকটা সুবিধা দিয়েছে। সিএসির সদস্যেরা মনে করেছেন, গম্ভীরের হাতেই সুরক্ষিত থাকবে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ভবিষ্যৎ।